ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আদালত যেনতেন রায় দিলে জনগণ মানবে না ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

আদালত যেনতেন রায় দিলে জনগণ মানবে না ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ১৬ কোটি মানুষের আশা-ভরসার নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে আদালত যেনতেন রায় দিলে জনগণ তা মানবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলীর মুক্তি দাবিতে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে নজিরবিহীন তাড়াহুড়ো করে খালেদা জিয়ার মামলা শেষ করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেষ দিনে আইনজীবীরা আরও কথা বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের কথা বলার কোন সুযোগ না দিয়ে বক্তব্য শেষ করা হয়েছে এবং মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এই জোর করা? আইনের স্বাভাবিক যে গতি তা বন্ধ করে দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে কেন এই রায় দেয়ার চেষ্টা? কারণ একটাই বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণা নিয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিভিন্ন ধরনের বক্তব্যে পরিষ্কার হয় যে, এ মামলার রায় পূর্বেই নির্ধারিত। তাই আওয়ামী লীগের নেতারা রায় কি হচ্ছে তা জানে। এভাবে প্রহসনের এ বিচারের কোন প্রয়োজন ছিল না। ফখরুল বলেন, দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য খালেদা জিয়ার মামলার রায় দেয়া হবে। রাজনৈতিক উদ্দেশে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেয়া হয়েছে। এ মামলার সঠিক বিচার হতে হবে, ন্যায়বিচার হতে হবে। কিন্তু আমরা কার কাছে বিচার চাইব। বিচারের বাণী তো এখন নীরবে নিভৃতে কাঁদে। কেউ কোথাও ন্যায়বিচার পায় না। বর্তমান সরকার মানুষের আশা ভরসার স্থল খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করে দলের নেতাকর্মীদের এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে জাগিয়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার অন্যায় আচরণ করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি তিন বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দুই বার বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। তার সঙ্গে বর্তমান সরকার যে আচরণ করছে, পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক দেশে তা নজিরবিহীন। আমরা এর নিন্দা জানাই। জাতি এর জন্য কোন দিন এ সরকারকে ক্ষমা করবে না। দেশের মানুষ কোন দিন স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদ বরদাশত করেনি। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে তা পরাজিত করেছে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম প্রমুখ। রায় কী হবে সেটা সরকার পরিষ্কার করেছে -খসরু ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৮ ফেব্রুয়ারি কী রায় হবে সেটা সরকার ইতোমধ্যেই পরিষ্কার করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ আয়োজিত ‘জীবনের নিরাপত্তা ও আইনের শাসন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আমির খসরু বলেন, ৮ তারিখের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে খালেদা জিয়ার বিচারের রায়ের জন্য। মানুষ অপেক্ষা করছে বিচার বিভাগের বিবেক আছে কি নেই সেটার জন্য। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি অঙ্গকে সম্পূর্ণভাবে কুক্ষিগত করেছে। রাষ্ট্রের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকেও সম্পূর্ণভাবে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে। যার ফলশ্রুতিতে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের মানুষের সামনে বড় দিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন রনি প্রমুখ।
×