ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতু নিয়ে বেগম জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

সেতু সম্পর্কে যা বোঝেন উনি সেটাই বলেছেন-

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

সেতু সম্পর্কে যা বোঝেন উনি সেটাই বলেছেন-

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়া ব্রিজের কিছু বোঝেন না, উনি যেটুকু বুঝেছেন সেটুকুই বলেছেন। তাই তার এ বক্তব্যের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। মন্ত্রিসভার এক সিনিয়র সদস্য বেগম জিয়ার বক্তব্যটি উত্থাপন করতেই তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এছাড়া জেল-জরিমানার বিধান রেখে মানসিক স্বাস্থ্য আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদোন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মঙ্গলবার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় খালেদা জিয়া নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে বলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে। এই সেতুতে ঝুঁকি আছে। এছাড়া মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দরজা বন্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, মিলনায়তনের ভাড়ার টাকা পরিশোধ না করায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষই দরজা বন্ধ রেখেছিল। পরে ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপে দরজা খুলে দেয়া হয়। সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রসঙ্গটি উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, তালা বন্ধের ঘটনাটি জানার পর আমি আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানাই। এটা কেন হচ্ছে, এতে সরকারের সমালোচনা হবে। বিষয়টি তাকে দেখতে বলি। ওবায়দুল কাদের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতির কাছে জানতে চান- কেন মিলনায়তনের দরজা বন্ধ রাখা হয়েছে? ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষ ওবায়দুল কাদেরকে জানায়- ভাড়ার টাকা পরিশোধ করেনি বলে দরজা বন্ধ রাখা হয়েছে। ওবায়দুল কাদের তখন তাদের বলেছে ভাড়ার টাকা পরিশোধ হয়েছি কী হয়নি সেটা পরে দেখা যাবে, তাদের যেহেতু ভাড়া দেয়া হয়েছে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিন। এ নিয়ে সরকারের সমালোচনা হবে। এরপর দরজা খুলে দেয় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন। মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় হবে অধিদফতর ॥ মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় অধিদফতর গঠনের বিধান রেখে ‘মানসিক স্বাস্থ্য আইন-২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ অনুমোদনের কথা জানান। তিনি বলেন, ১৯১২ সালের লোনেসি এ্যাক্ট নামে একটি আইন ছিল। যারা মানসিকভাবে অসুস্থ তাদের সুরক্ষায় এ আইনটি করা হয়। ১৯১২ সাল থেকে ১০৫ বছর পার হয়ে গেছে, এজন্য ওই আইনকে আপডেট করে নতুনভাবে এ আইনটি আনা হয়েছে। নতুন আইনে ২৮ ধারা প্রস্তাব করা হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের জন্য পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে একটি অধিদফতর প্রতিষ্ঠা করা হবে। জেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য রিভিউ মনিটরিং কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে আইনে। জেলা প্রশাসক হবেন এর সভাপতি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের অধীনে মানসিক হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। আগে থেকে যেটা করা হয়েছে সেটা নতুন আইনে চলবে। বেসরকারী মানসিক হাসপাতাল খোলার লাইসেন্স দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে। এতে মানসিক হাসপাতাল তল্লাশি ও জব্দেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ আইন কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে যে মানসিক হাসপাতালগুলো আগে করা হয়েছে সেগুলোকে লাইসেন্স নিতে হবে। আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তি পেতে হবে। বেসরকারী মানসিক হাসপাতাল স্থাপনের লাইসেন্স দেয়া, নবায়ন, ফি; এগুলো বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে। মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা এবং স্বেচ্ছায় ভর্তির প্রক্রিয়া কী হবে তাও উল্লেখ আছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, কিছু ফৌজদারি দ-ের বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সবিহীন মানসিক হাসপাতাল চালালে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা ৩ বছরের কারাদ- বা উভয় দ- দেয়া হবে। একই অপরাধ আবার করলে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- বা উভয় দ- দেয়া যাবে। তিনি বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করলে প্ররোচক ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা দুই বছরের কারাদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। অভিভাবক বা ব্যবস্থাপক মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা বা আদালতের কোন নির্দেশনা অমান্য করলে ৫ লাখ টাকা অর্থ দ- বা ৩ বছরের কারাদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন।
×