ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দু’টাকায় ব্যাংক হিসাব

‘ডাক টাকা’ সেবা চালু করলেন জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

‘ডাক টাকা’ সেবা চালু করলেন জয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে দেশের মানুষকে ব্যাংকিং সুবিধার (আন ব্যাংকড) আওতায় আনতে ‘ডাক টাকা’ নামে একটি সেবা চালু করেছে ডাক বিভাগ। মোবাইলের মাধ্যমে এই টাকা (ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস) লেনদেন হবে। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ডাক টাকার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ডাক টাকা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘ডাক বিভাগের এই সেবা উদ্বোধন করতে পেরে আমি আনন্দিত। ডাক টাকায় সর্বনিম্ন দুই টাকা রেখে এ্যাকউন্ট পরিচালনা করা যাবে। এ্যাকাউন্টে মাত্র দুই টাকা ব্যালেন্স থাকলেই এটি সচল থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ৫ টাকা দিয়ে। গ্রামে বা ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণত ব্যাংকের শাখা নেই। ব্যাংক করতে অনেক টাকা লাগে, সময় লাগে। এ কারণে আমরা চেয়েছি ডাকঘরের মাধ্যমে এই সেবা গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। যাতে তারা গ্রামে বসে টাকা লেনদেন, ভাতা পাওয়া ও খরচ করতে পারেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি অংশ। ২০২১ সালের মধ্যে দেশ তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। জনগণের সুবিধার্থে সরকার গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছে। যে কোন মানুষ এখন ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় চলে এসেছেন। গ্রামে থেকেই তারা সরকারের প্রায় ২শ’টি সেবা নিতে পারছেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এখন আর কেউ চিঠি লেখে না। তাই ডাক বিভাগের কাজও অনেক কমে গেছে। কিন্তু এক সময় ডাক বিভাগ ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ। এই বিভাগকে কাজে লাগাতে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। মোবাইলের মাধ্যমে ডাক টাকা পাঠানো তারই একটি অংশ। ডাক টাকা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামসুন্দর শিকদার প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডাক বিভাগ সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০১৮ সালের মধ্যে তিন কোটি ‘আনব্যাংকড’ মানুষকে এই সেবার আওতায় আনা হবে। মানুষের হাতের নাগলে সেবা পৌঁছে দিতে ডাক বিভাগের বিভিন্ন কর্মসূচীর আওতায় কাজ করে যাচ্ছে। ডাক বিভাগ আশা করছে অন্যান্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মতো ‘ডাক টাকা’ দেশের মানুষকে ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় আনতে সহযোগিতা করবে। অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মর্জিনা বেগমের মোবাইল নম্বর দিয়ে হিসাব খুলে এই সেবার উদ্বোধন করা হয়। মর্জিনা বেগমের কোন ব্যাংক হিসাব নেই। ডাক টাকা পাঠানোর বিষযে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে ডিমানি ও আইটিসিএল। সূত্র জানিয়েছে, ডাক টাকা চালুর পাশাপাশি ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এক স্থান হতে অন্য স্থানে দ্রুততম সময়ে টাকা পাঠানোর অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম এটি। বর্তমানে এ সেবা ব্যবহার করে মানুষজন শহর-গ্রাম কিংবা বিদেশ থেকে অর্থ পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সর্বশেষ অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৮৯১ কোটি টাকা। এই সময়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের গ্রাহক সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ কোটি ৭৭ লাখ। এক মাসের ব্যবধানে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ। গত সেপ্টেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় খোলা হিসাবের মধ্যে সক্রিয় হিসাব ছিল ৩ কোটি। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অক্টোবর মাস শেষে ব্যাংকগুলোর মনোনীত এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৪ হাজার ৮৯২ জন।
×