ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ড্যাফোডিল ভার্সিটির সেমিনারে খাদ্যমন্ত্রী

মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে, মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২২ অক্টোবর ২০১৭

মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে, মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম হয়েছে। মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ শব্দটি বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে। পাশাপািশ মানুষের পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার প্রাপ্তির মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এছাড়া গ্রামের মানুষের শহরমুখিতা কমাতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বিদ্যুত, গ্যাসসহ সকল প্রকার সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পুষ্টি ও খাদ্য প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ‘অভিবাসনের ভবিষ্যত বদলে দিন, খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ উন্নয়নে বিনিয়োগ করুন’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গ্রামে কর্মসংস্থান আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বর্তমান সরকার গ্রামীণ মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প, খাদ্য ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মায়ের ও গর্ভের সন্তানের পুষ্টির জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতি কেজি ১০ টাকা হারে চাল বিতরণ কর্মসূচীসহ নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। মানুষের মৌলিক নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে জেলা পর্যায়ে কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের মহাসড়কে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘসহ পুরো বিশ্ব যখন সরকারের সঙ্গে আছে তখন দেশের ভেতরে একটি শ্রেণী এ সমস্যার সমাধানে বাধা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে, তেমনি রোহিঙ্গাদের একটি সেফ জোনে রেখে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু একটি বিশেষ শ্রেণী সরকারের সমালোচনা করে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ে লাগানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এমন পরিকল্পনা কোনভাবেই সফল হতে দেয়া হবে না। এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি। খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উপাদান সংগ্রহ থেকে শুরু করে, খাবার তৈরি, প্রক্রিয়াজাতকরণ, মোড়কজাত করণ এবং বাজারজাতকরণসহ প্রতিটি পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে খাদ্য ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ। আমরা নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান করতে চাই। মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত গবেষণা ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান। সেমিনারে অতিথি ছিলেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী, ঢাকার ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপায়ন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বিশ্বের ৮০ কোটি মানুষ এখনও নিয়মিত খাবার পাচ্ছে না। সেখানে বাংলাদেশের মানুষ অদূর ভবিষ্যতে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির মৌলিক অধিকার পেতে যাচ্ছে। সেমিনারে নিউট্রিশন এ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মুনমুন হক বিভাগের শিক্ষার্থীদের নানা উদ্যোগ ও উদ্ভাবন তুলে ধরেন। সেমিনার শেষে খাদ্যমন্ত্রী ও উপস্থিত বিশেষ অতিথিরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের আয়োজনকৃত খাদ্যমেলা পরিদর্শন করেন। শিক্ষার্থীদের দেশীয় খাবারের পসরা সাজানো দোকান পরিদর্শনের পাশাপাশি খাদ্যমন্ত্রী বিভিন্ন খাবারের গুণাগুণ জানতে চান শিক্ষার্থীদের কাছে। তাদের তৈরি বিভিন্ন খাদ্য যেমন লাড্ডু, দেশীয় পিঠা, খাঁটি মধু, বিভিন্ন মিষ্টান্ন ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেন খাদ্যমন্ত্রী এবং তাদের কর্মকা- দেখে বেশ আপ্লুত হন তিনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপউপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম মাহাবুব উল-হক মজুমদার। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহাবুবুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পুষ্টি ও খাদ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ বেলাল হোসেন।
×