ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভাইয়ের হাত ধরে কর্মজীবন শুরু, শেষ পর্যন্ত তার পথ ধরেই দেশত্যাগ

ইংলাক- ক্ষমতার শীর্ষ থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ইংলাক- ক্ষমতার শীর্ষ থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে

থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বড় ভাইয়ের পথ ধরে শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছা নির্বাসন বেছে নিলেন। চালে ভর্তুকির বিতর্কিত একটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বুধবার ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ব্যাঙ্ককের একটি আদালত। তবে রায় ঘোষণার এক মাস আগে ইংলাক দেশ ছেড়েছেন। ফেরার হওয়ার পর এখনও প্রকাশ্যে আসেননি। তবে বিভিন্ন সূত্রে তিনি দুবাইয়ে তার বড় ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে আছেন বলে জানা গেছে। তাকে ২০০৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে গৃহবন্দী করা হয়েছিল। আদালতে ইংলাকের বিরুদ্ধে শাস্তির ঘোষণা দেয়ায় বলা যায়, এ মুহূর্তে আর দেশে ফিরছেন না তিনি। দুর্নীতির মামলার বিচার চলাকালে ইংলাক আদালতে বলেছিলেন, তিনি নির্দোষ। তিনি রাজনৈতিক হয়রানির শিকার। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওই কর্মসূচীতে কৃষকদের কাছ থেকে বাজারমূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে ধান কেনা হয়। এ কর্মসূচীটি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় ছিল। এ কর্মসূচীর কারণে দেশটিতে চালের বিশাল মজুদ সৃষ্টি হয় এবং থাইল্যান্ড থেকে চাল রফতানি করা কঠিন হয়ে পড়ে। ইংলাক ও তার দল কৃষকদের ভোট পাওয়ার জন্যই বেশি দামে ধান ক্রয় করে বলে দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকারীরা অভিযোগ করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ইংলাক যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন শেষে তার ভাইয়ের কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। ট্রেইনি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত টেলিফোন ইউনিট শিন কর্পোরেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের জুলাই মাসে একেবারে শূন্য থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন ইংলাক। সে সময় ইংলাককে নিজের ক্লোন বলে বর্ণনা করেছিলেন থাকসিন। খুব অল্প সময়েই থাকসিনের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে দ্রুতই পরিণত হলেও ইংলাকের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাও ছিলেন তার বড় ভাই। থাইল্যান্ডের রাজনীতির পটপরিবর্তন এবং ইংলাকের বিরুদ্ধে কোর্টের রায় ঘোষণার আগে এ প্রসঙ্গে একজন প্রবীণ রাজনীতিক এবং তার পদত্যাগী সরকারের সাবেক কেবিনেট মন্ত্রী চুপুরন চিশানং এএফপিকে বলেছিলেন, আমি মনে করি তিনি খুব দ্রুত শিখেছেন এবং নিজেকে খুব ভাল রূপান্তরিত করেছেন। তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক খেলার শিকার হয়ে যে তার কী ঘটতে যাচ্ছে, এটা হয়ত তিনি বুঝতে পারেননি। ২০১৪ সালের ২২ মে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার মাত্র কয়েকদিন আগে আদালতের এক বিতর্কিত আদেশে ক্ষমতাচ্যুত হন থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। -এএফপি
×