ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের ‘পাখিমানব’

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ভারতের ‘পাখিমানব’

ভারতের গুজরাট রাজ্যের জুনাগধ শহরে বসবাস করেন হরসুখ ভাই দোবারিয়া। পেশায় কৃষক এ মানুষটি খুব বেশি অর্থবিত্তের মালিক না হলেও তার রয়েছে একটি মহৎ হৃদয়। যেখানে মানুষ নানা ধরনের পরিবেশ বিনষ্টকারী কাজের মাধ্যমে পশু-পাখির জীবন বিপন্ন করে তুলছে, সেখানে তিনি কয়েক হাজার বন্য পাখির দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের প্রতিদিনের আহার থেকে শুরু করে বাসা বানিয়ে দেয়ার কাজও করছেন নিজ হাতে। পাখিদের প্রতি এ ভালবাসার ফলস্বরূপ তিনি পেয়েছেন ‘বার্ডম্যান’ বা ‘পাখিমানব’-এর খ্যাতি। ঘটনার শুরু ২০০০ সালে। এক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে যায় হরসুখের। বাড়িতে শুয়ে-বসে কাটছিল দিন। একদিন এক প্রতিবেশী তার কাছে পোষা টিয়া পাখিকে খাওয়ানোর জন্য মিলিট দানা (এক ধরনের শস্য) নিতে আসে। বুদ্ধি খেলে যায় হরসুখের মাথায়। নিজের ঘরের বারান্দায় একটি মিলিট ঝুলিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পরে একটি টিয়া এসে খেয়ে যায় সেটি। পরদিন দুটি টিয়া আসে। এভাবে প্রতিদিন টিয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে। সঙ্গে যোগ হয় চড়ুই। সেই থেকে শুরু। মাঝখানে কেটে গেছে সতেরো বছর। তবে দীর্ঘ এ সময়ে একদিনের জন্যও তার এ কাজ থেমে থাকেনি। পাখির সংখ্যা বাড়তে বাড়তে তা পৌঁছেছে তিন হাজারে। বিপুলসংখ্যক এ পাখির আহারের পুরো বন্দোবস্ত নিজ হাতে করে চলেছেন হরসুখ। পাখির প্রতি তীব্র ভালবাসার কারণে নিজের বাসস্থান পর্যন্ত পরিবর্তন করেছেন তিনি। এক সময় তিনি থাকতেন শহরের মাঝখানে। বিপুলসংখ্যক পাখি আসার কারণে প্রতিবেশীরা প্রায়ই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করত। প্রতিবেশীদের আভিযোগ আমলে নিয়ে তিনি ২০১২ সালে শহরের পাশে চার একর জায়গা নিয়ে তার স্বপ্নের পাখি আশ্রম গড়ে তুলেছেন। নিজের এ অদ্ভুত শখ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাখিদের এ প্রতিপালন আমার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। পাখিদের ডাকাডাকিতে অনেকেই বিরক্ত হলেও আমি এটাকে আমার জীবনের অংশ বলেই মনে করি।’ তবে হরসুখ একা নন, তার পরিবারের সবাই পাখিদের এ প্রতিপালন আনন্দচিত্তে করে থাকেন। তার সন্তান কিরিপাল বলেন, ‘পাখিদের আমরা ভালবাসি এবং তাদের বিরক্তিকর কাজ আমাদের জীবনের অংশস্বরূপ।’ -ওয়েবসাইট
×