ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেহেরপুরের গরু খামারীদের কপালে চিন্তার ভাজ

প্রকাশিত: ০০:০২, ২৭ আগস্ট ২০১৭

মেহেরপুরের গরু খামারীদের কপালে চিন্তার ভাজ

সংবাদদাতা, মেহেরপুর ॥ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু আসায় শঙ্কা আর উৎকন্ঠায় দিন কাটছে মেহেরপুরের গরু খামারীদের। এরই মধ্যে বাজার দর পড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে লোকসানের মুখে পড়েছে জেলার খামারীরা। প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে চাহিদার তুলনাই বেশি গরু উৎপাদন হয়েছে। ফলে বাইরের দেশের গরুর কোন প্রয়োজন নেই। গেল দুই বছরে ভারত থেকে গরু না আসায় লাভের মুখ দেখছেন মেহেরপুরের খামারীরা। কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক বেকার যুবকের। চলতি বছরে জেলার ৪’শ টি খামার ও ঘরোয়াভাবে কুরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার গরু। অন্য বছরে ঈদকে সামনে রেখে কেনা বেচা শুরু হলেও এবার দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। ব্যবসায়ীরা গরুর দাম বলছেন অনেক কম। ফলে খামারীরা গরু বিক্রি করতে পারছেন না। ভারত থেকে গরু আসায় বাজারের এ অবস্থা বলে অভিযোগ খামারীদের। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মালসাদহ গ্রামের গরু ব্যাবসায়ী এনামুল হক জানান, কোন ক্ষতিকর ওষুধ ছাড়াই খড়, কাঁচা ঘাস, গমের ভূসি, খৈল সহ বিভিন্ন প্রকারের প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরন করছেন জেলার খামারীরা। গত বছরের তুলনায় গোখাদ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। তারপরও আশায় বুক বেধেছিলেন খামারীরা। কিন্তু দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরুর আসায় চিন্তার ভাজ খামারীদের। বর্তমান বাজার দরে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। মেহেরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকা ও গরুর হাটে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে একই চিত্র। সদর উপজেলার শালিকা গ্রামের খামারী মাজহারুল ইসলাম জানান, এবার কোরবানির ঈদে ১৮ টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। গরু গুলো ২৬ লাখ টাকায় বেচার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন ভেঙে গেছে। একই অবস্থা এ গ্রামের খামারী তুহিনের। এবার গরুর হাটে ২৮ টি গরু বিক্রি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু বর্তমান বাজার দরে আসল টাকা উঠবে কিনা শঙ্কায় রয়েছেন তিনিও। মেহেরপুর মদনাডাঙ্গা গ্রামের গরু ব্যবসায়ী নাসির জানান, রাজশাহী ও চাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে প্রচুর পরিমানে গরু আসছে। সেখানে কম দামে গরু কিনতে পারছেন তারা। ফলে দেশের উৎপাদিত গরুর দাম কম। জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, দেশে চাহিদার তুলনায় বেশি গরু আছে। ফলে কোরবানির জন্য দেশের বাইরের গরুর কোন প্রয়োজন নেই। এভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু আসলে লোকসানের মুখে পড়বে দেশের খামারীরা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সম্ভাবনাময়ী এই খাত। সীমান্ত দিয়ে যাতে গরু না আসে সেজন্য প্রাণি সম্পদ বিভাগ ও মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তিনি।
×