
ছবি: জনকন্ঠ
জামালপুর মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদেহ ইউনিয়নের পাকরুল গ্রামের গত পাঁচ বছরে পাঁচ থেকে ছয় শত পরিবারের বসত বাড়ি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চারটি মসজিদ সহ নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক একটি মসজিদ ও বিভিন্ন স্থাপনা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরপাকেরদহ ইউনিয়নের গত পাঁচ বছরে পাঁচটি গ্রাম ও ফসলি জমি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে নদী ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, আশ্রয় প্রকল্পসহ তিনটি গ্রাম।
নদীভাঙন শিকার সুলতান সরকার বলেন, "দুইবারের ভাঙ্গনে জায়গা জমি সব নদীর ভেঙে নিয়েছে,আমি এখন সর্বহারা কোথায় যায় কোথায় থাকি আমাদের কোন ঠিকানা নাই।"
লেজু ফকির বলেন, "পাঁচ থেকে ছয় শত বাড়ি ও দুই হাজার বিঘা ফসলি জমি, স্কুল, মসজিদ,রাস্তা ঘাট নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে দুই চারটি ঘর এখনো আমার আছি তাদের কেয়ারিং খরচের জন্য পাঁচ টাকার জিনিস দশ টাকা দিয়ে আনতে হয়।আমরা খুব কষ্টে আছি, বাড়ি ঘরের জিনিসপত্র রাস্তার পাশে রেখে আত্মীয়র বাড়িতে খোসা আছি। যাদের আত্মীয়-স্বজন নেই তারা শহরে গেছে গা। যে সমস্ত লোক গুলি এই জায়গা থেকে যখন উধাও হয়ে গেছে। বাপ গেছে এক জায়গায় ব্যাটা গেছে আরেক জায়গায়। সে সময়কালে তারা বিদায় হয়েছে তাদের কান্না কেউ সহ্য করতে পারে নাই। এমন অবস্থায় তারা বিদায় হয়ে গেছে। তাই সরকারের কাছে করো জুড়ে অনুরোধ স্থায়ীভাবে বাদ দিয়ে আমাদের রক্ষা করুন।"
পাকরুল ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার আহাস উদ্দিন ফকির বলেন ,২০২০ সাল থেকে আমাদের নদী ভাঙন শুরু হয়েছে, এখানে একটি প্রাইমারি স্কুল ছিল, একটি মাদ্রাসা ছিল, ৫০০ থেকে ৬০০ বাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে এবং কৃষি জমি যা আছে সবই নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে । এই এলাকায় চাকরিজীবী নাই বললেই চলে, এখানে যারা আছে সবাই কৃষি কাজ করে সংসার চালায়। তারা এখন খুবই অভাবে অনাহারে আছে। বর্তমানে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, আশ্রয়ন প্রকল্প ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে আছে। আমার সরকারের কাছে দাবি স্থায়ীভাবে নদীর বাদ।তাহলে এখানে মানুষ বসবাস করতে পারবে। পাঁচ বছর যাবত দেখছি জিও ব্যাক ফেলে নদী রক্ষা চেষ্টা করছে। কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না।এখানে সরকারের অযথা টাকা খরচ না করে স্থায়ীভাবে নদী রক্ষা বাদ দিলে এখানকার মানুষজন থাকতে পারবে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা নকিবুজ্জামান খান বলেন, "রাজস্ব বাজেটের আওতায় ১২৫ মিটার কাজ চলমান রয়েছে। এটা শীঘ্রই সমাপ্ত হবে। পাশাপাশি এই এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে আপদকালীন ৬০ মিটার, টোটাল ১৮৫ মিটার কাজ চলমান আছে। এখানে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী ভাঙন রয়েছে। এই নদী ভাঙন প্রতিরোধে সমীক্ষা করা হয়েছে। আমরা এস্টিমেট করতেছি দ্রুতই এই চার কিলোমিটার এলাকা স্থায়ী নদী ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্প প্রস্তাবনা দাখিল করব।"
উল্লেখ্য মাদারগঞ্জ উপজেলায় চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ১০৪০ কি পরিবার ছিলো।গত পাঁচ বছরে ৫ থেকে ৬ শত পরিবার নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন ঝুঁকিতে আছে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ সহ বিভিন্ন স্থাপনা।
Mily