স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহমম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইনা। এই নির্বাচন কমিশনারের অধীনেই নির্বাচন করবো। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আমরাই জয়ী হবো।
বৃহস্পতিবার গুলশান-১ এ ইমানুয়েলস কনভেনশন এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। এর আগে এরশাদ এর হাতে ফুল দিয়ে স্ব-পরিবারে যোগদান করেন সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এম এম মিয়াজ উদ্দিন মিয়া, স্ত্রী নুর জাহান নিয়াজ, মেয়ে নুসরাত জাহান, নাফিয়াতুজ সাবরিন, ছেলে ব্যারিষ্টার নাজমুল হাসান চৌধুরী, মেয়ের জামাই মেহেদী আমীন।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাকে বলা হয়েছিলো আপনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণের সমর্থন যাচাই করুন। ক্ষমতা ছাড়ার পরে আমাকে নির্বাচনে কি করা হয়েছিল জনগণ তা ভুলেনি। আমাদের উপর অনেক অত্যাচার করা হয়েছে। নিঃশেষ হয়ে যায়নি। টিকে আছি। কিন্তু আমাদের উন্নয়নের কথা মানুষ এখনো ভুলে যায়নি। সবাই মনে রেখেছে।
ক্ষমতায় থাকতে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, আমি ৪৬০ টি উপজেলা করেছিলাম। ২১ টি জেলা থেকে ৬৪ টি জেলা রূপান্তরিত করেছিলাম। ১০ হাজার পাকা রাস্তা করেছি এবং অসংখ্য ব্রীজ, কালভার্ট, কাঁচারাস্তা নির্মাণ করে জনগণের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুন্দর করেছিলাম।
এরশাদ বলেন, যমুনা সেতুর ভিত্তিস্তর স্থাপন করেছিলাম, বিশ^ ব্যাংকের কাছে টাকা চেয়েছিলাম, উত্তরে বলেছিলো গরীব দেশ। বাংলাদেশের অর্থায়নে যমুনা সেতু করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মানুষের যোগাযোগে অনেক উন্নতি হয়েছে। মানুষ সুখের স্বপ্ন বাস্তবে পেয়েছে। ঢাকা শহরের অবস্থা যানজট ১ ঘন্টায় একটি গাড়ি চলে ৭ কি:মি:, অসহনীয় যন্ত্রণা। আমরা ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক সরকার গঠন করবো, ঢাকা শহরের যানজটমুক্ত করবো, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দেব।
যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান জি.এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গাজীপুর জেলা আহ্বায়ক আজম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর সিটি সভাপতি আব্দুস সাত্তার মিয়া।
সরকারের উদ্দেশ্যে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা বলেন- মানুষের মাথা পিছু আয় ১ হাজার ৬০০ ডলার হয়েছে। গ্রামে যান মানুষের অবস্থা দেখেন। ঢাকা-শহরে থাকেনতো! গ্রামের মানুষের দুঃখ দূর্দশা কেমনে বুঝবেন। ৫৬ টাকা চালের কেজি মানুষের হায় হাতাশ দেখেছি। আমিও ত্রাণ দিয়েছি। কিন্তু কি যে দুঃখ, কষ্ট রান্নাবান্না করার ব্যবস্থা নেই। থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশুদ্ধ পানির অভাব। খোলা আকাশের নিচে মানুষের বসবাস। দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চাই। গুম, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট চায় না। মানুষ স্মরণ করেন- এরশাদ সরকারের স্বর্ণালী যুগের দিন।
এরশাদ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো ৩০০’শ আসনে নির্বাচন করতে শক্তি ও সার্মথ্য দরকার। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করো। মানুষ যাতে ভোট দেয় সে আস্থা অর্জন করা।
তিনি বলেন, যারা জাতীয় পার্টি ছেড়ে চলে গেছেন তাদের অবস্থা কোথায়? তারা মুক্তির পথ খুঁজছে। জাতীয় পার্টি মর্যাদার সাথে আছে। বর্তমানে বিএনপি’র অবস্থা কি ? মাঠে ময়দানে নাই। শুধু বক্তব্য দেয়। যোদান অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
যোগদানকারী মিয়াজ উদ্দিনকে স্বাগত জানিয়ে এরশাদ বলেন, আজকে আমাদের জন্য বিশেষ দিন। পরিবার নিয়ে একজন প্রাক্তন সচিব যোগদান করলেন। তার এই যোগদান জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করেছে। কিন্তু তিনি কেন এই দলে যোগদান করেছেন, নিশ্চয়ই তার মধ্যেও ভাবনা এসেছে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত আছে। দলের জন্য সামনে সুদিন, এই দল মানুষের কথা বলে, তাই উনি আমাদের দলে যোগদান করেছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: