ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সোমবার পর্যন্ত ভিসার সময় বাড়িয়েছে সৌদি দূতাবাস

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১৯ আগস্ট ২০১৭

সোমবার পর্যন্ত ভিসার সময় বাড়িয়েছে সৌদি দূতাবাস

আজাদ সুলায়মান ॥ ই-ভিসা ইস্যুর জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে তিনদিন সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশের সৌদি দূতাবাস। ঢাকা হজ অফিসের অনুরোধে সাড়া দিয়ে আগামী সোমবার পর্যন্ত দাখিলকৃত পাসপোর্টে ই-ভিসা দেবে সৌদি দূতাবাস। আর মাত্র হাজার তিনেক ভিসা এখনও সম্পন্ন করার কাজ বাকি রয়েছে। এগুলো শনিবারই সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি জনকণ্ঠকে ফোনে জানান, বন্যা ও বিভিন্ন সমস্যার কারণে যেসব এজেন্সি হজযাত্রীদের পাসপোর্ট জমা দিতে পারেনি তারা আবেদন জমা দিচ্ছে। এছাড়া রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে আগের ১০ শতাংশের সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ অর্থাৎ মোট ১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ পাচ্ছেন। এদিকে শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৭৬ হাজার হজযাত্রী জেদ্দা চলে গেলেও এখনও বাকি রয়েছে আরও ৫১ হাজার। এত সংখ্যক যাত্রী আগামী ৯ দিনের মধ্যে পাঠাতেই হবে। যা বিমানের জন্য খুবই কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। সৌদিয়া তার হিস্যার পুরো যাত্রী পাঠাতে সক্ষম হলেও বিমানের বেলায় তা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন খোদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ। শেষদিকে হাজার দুয়েক যাত্রী নিয়ে বিমানকে জটিলতার মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিমানের একাধিক সূত্র। বিমান সূত্র জানিয়েছে, হজযাত্রী সময়সীমা শেষ হয়ে এলেও এখনও ক্যাপাসিটি লস ঠেকানো যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত বিমানের ২৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত বিমান মোট ৩৭ হাজার ৭ শতাধিক হজযাত্রী বহন করেছে। প্রতিদিন পাঁচটি ডেডিকেটেড ও দুটি সিডিউলি ফ্লাইটের মাধ্যমে যাত্রী পাঠানো হচ্ছে। এতদিন পর্যন্ত বাতিল ও শূন্য আসন নিয়ে ফ্লাইট অপারেট করা হলেও বিমান আশা করছে শনিবার থেকে এ অবস্থার উন্নতি ঘটবে। বিমানের মতিঝিল অফিসের জিএম আশরাফ জানিয়েছেন, বিমান একাধিক বিজনেস কৌশল গ্রহণ করেছে। একটা ফেল করলে অন্যটা কাজে লাগাবে। একজন হজযাত্রীও যাতে বাকি না থাকেন সে লক্ষ্য নিয়েই বিমান কাজ করছে। তবে এ বিষয়ে বিমানের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হজযাত্রী বহনে বিমানের ক্যাপাসিটি যদি নষ্ট না করা হয় তাহলেও সব যাত্রী বহন করা খুব কঠিন। এখনও ২৫ হাজারেরও বেশি হজযাত্রীকে আগামী ৮ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। এ হিসাবে দেখা যায়, গড়ে দৈনিক ৩ হাজার ১২৫ জন করে বহন করতে হবে। যা বর্তমান বহর দিয়ে অসম্ভব। জানা গেছে, সঙ্কট মোকাবেলায় বিমান আরও ৫টি অতিরিক্ত শ্লট চেয়ে সৌদি আরবের কাছে চিঠি লিখেছে। কিন্তু কোন সাড়া মিলছে না। বার বার শ্লট চাওয়ায় সৌদি আরব অনেক বিরক্ত হয়ে পাল্টা প্রশ্ন রেখেছে, একদিকে শ্লট চাওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে বার বার ফ্লাইট বাতিল করে শ্লট নষ্ট করা হচ্ছে এর মানে কি? দুনিয়ার কোন দেশে তো এমন তুঘলকি কা-ের নজির নেই। শুধু বিমানের বেলায় এ ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বলেছেন, আমরা এখনও আশাবাদী প্রয়োজনীয় আরও ৫টি শ্লট পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া কোন বিকল্প নেই। সব হজযাত্রী পাঠাতে হলে শ্লট বাড়াতেই হবে। সর্বশেষ শুক্রবার রাত পর্যন্ত হজ পালনের উদ্দেশে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ হাজার ১৫৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এদের মধ্যে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৩৩৮ জন ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় ৭৩ হাজার ৮১৫ জন হজযাত্রী রয়েছেন। আগামী ২৬ আগস্ট বিমানের এবং ২৮ আগস্ট সৌদিয়ার হজের শেষ ফ্লাইট। যদিও বিমানও চেষ্টা করছে এ সময়সীমা সৌদিয়ার মতোই আরও দুইদিন বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে।
×