ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কবি সুফিয়া কামালকে নিবেদিত ছায়ানটের বর্ষাবন্দনা

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৯ জুলাই ২০১৭

কবি সুফিয়া কামালকে নিবেদিত ছায়ানটের বর্ষাবন্দনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঝরঝর বরিষে বারিধারা/হায় পথবাসী, হায় গৃহহীন, হায় গৃহহারা ...। এই গানের মাঝেই যেন ধরা দিল এবারের প্রবল বর্ষাকাল। রূপময় ঋতু বর্ষার সৌন্দর্যের সঙ্গে বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরা রবীন্দ্রনাথের গানটি গাইলেন সত্যম কুমার দেবনাথ। শুক্রবার শ্রাবণ সন্ধ্যায় বর্ষা বন্দনার এমন সুর শোনা গেছে ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে। সুরেলা শব্দধ্বনির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বর্ষানির্ভর কবিতার শিল্পিত উচ্চারণ। আর এভাবেই বর্ষাকে নৃত্য-গীত, কথন ও কবিতায় আবাহন করল ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কবি সুফিয়া কামালকে । আয়োজনের শুরুতেই রবীন্দ্রনাথের ‘রিম্ ঝিম্ ঘন ঘন রে বরষে’ গানের সুরে পরিবেশিত হয় ছায়ানটের শিল্পীদের সম্মেলক নাচ। এরপর কথনে অংশ নেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা। কথা শেষে বর্ষার গানে গতিময় হয়ে ওঠে আয়োজন। সেঁজুতি বড়ুয়া গেয়ে শোনান ‘আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর-দিনে’। একক পাঠে অংশ নেন নাসিমা খান মজলিশ। এরপর ছায়ানটের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে ‘মেঘের হিন্দোলা দেয় পূব-হাওয়াতে দোলা গান’ গানের সঙ্গে দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করেন মা ও মেয়ে শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুদেষ্ণা স্বয়ম্প্রভা তাথৈ। নাচ শেষে নাসিমা শাহীন ফ্যান্সির কণ্ঠে গীত হয় ‘বধূয়া নিদ নাহি আঁখি পাতে। আফসানা রুনা, রেজাউল করিম ও শ্রাবন্তী ধর পরিবেশন করেন ‘বাদল ঝুম্ ঝুম্ বোলে’, ‘ঝরো ঝরো বারি ঝরে অম্বর ব্যাপিয়া’ ও ‘এলো কৃষ্ণ কানাইয়া তমাল বনে’ শিরোনামের গান। ‘রিম ঝিম রিম ঝিম ঘন দেয়া বরষে’ গানের সুরে পরিবেশিত হয় বৃন্দ নৃত্য। নাচ শেষে ফারহানা আক্তার শ্যার্লি গেয়ে শোনান ‘বঁধু, এমন বাদলে তুমি কোথা’ ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ‘বরষা ঐ এলো বরষা’। জহিরুল হক খান আবৃত্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী কবিতা ‘সোনার তরী’। ‘শ্রাবণ ঝুলাতে বাদল রাতে’ গানের সুরে ছিল সম্মেলক নৃত্য পরিবেশনা। এরপর নাহিয়ান দূরদান শুচি, সুমন মজুমদার, সুস্মিতা দেবনাথ শুচি ও খায়রুল আনাম শাকিল গেয়ে শোনান ‘আবার কি এলো রে বাদল’, ‘বরষা আইলো ঐ’, ‘শাওন আসিল ফিরে’। ‘নীল অঞ্জনঘন পুঞ্জছায়ায়’ গানের সঙ্গে ছিল বৃন্দ নাচের উপস্থাপনা। জাতীয় সঙ্গীতের পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ বর্ষা বন্দনার এ আয়োজন। শিল্পকলায় লোকমেলার পার্বণ উৎসব বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল বাংলার লোকমেলা। আবহমান গ্রাম বাংলার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সম্মিলনে এ মেলা বলে যায় আপন সংস্কৃতির কথা। লোকমেলার সেই চিরায়ত রূপের দেখা মিলল শহর ঢাকায়। দর্শকরা নয়নভরে উপভোগ করল ভেলা ভাসানি, লালকাছ ও গাজীর পটের পরিবেশনা। সংযুক্ত হলো স্বদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে। ঐতিহ্যের স্বরূপ সন্ধানে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ যেন হয়ে উঠল এক খ- গ্রাম বাংলা। ভরা বঙ্গ নামের সংগঠন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘লোকমেলার পার্বণ উৎসব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন ছিল শুক্রবার। অধ্যাপক হায়াৎ মামুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান কবির। বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন ও বাংলা একাডেমির ফোকলোর বিভাগের পরিচালক শাহিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত দল সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন এবং বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেন তরুণ লোক গবেষক মোহাম্মদ আসাদ, ইমরান উজ-জামান ও জাহিদ হোসেন। লোক নাট্যদলের ‘পাঠাভিনয় উৎসব’ এবার কোন নাটক নিয়ে উৎসব নয়, বরং নাটকের চুম্বক অংশ পাঠের উৎসব। ‘পাঠাভিনয় উৎসব’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ উৎসবের আয়োজন করেছে লোক নাট্যদল। শুক্রবার থেকে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে দুই দিনব্যাপী এই উৎসব শুরু হয়েছে। যাতে ১৬টি নাট্যদলের ১৬ নাটকের নির্বাচিত অংশ পাঠ করছেন থিয়েটার অঙ্গনের প্রবীণ ও নবীন শিল্পীরা। গ্যালারি কায়ায় ‘চারকোল’ রাজধানীর উত্তরার গ্যালারি কায়ায় শুরু হয়েছে যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ‘চারকোল’। শুক্রবার বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির ও শিল্প সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ। এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার প্রদান ১১ শিশু সাহিত্যিক পেলেন এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার। শুক্রবার শিশু একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ২০১৫ ও ২০১৬-এর পুরস্কারপ্রাপ্তদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। যার আয়োজন করে এম নুরুল কাদের ফাউন্ডেশন। শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ গোলাম আজাদ, দীপু মাহমুদ, খালেক বিন জয়েনউদ্দীন, আহসান মালেক, প্রশান্ত মৃধা, মোমিন উদ্দীন খালেদ, আহমেদ রিয়াজ, আলী ইমাম, ফারুক হোসেন, জাকির হোসেন বুলবুল ও শামীম আহমেদকে প্রদান করা হয় এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার। জাদুঘরে গান-কবিতার যুগলবন্দী এক সময়ের সংবাদপাঠক রামেন্দু মজুমদারকে মূলত নাটকের মানুষ হিসেবে চেনেন সবাই। তবে তিনি যখন কবিতা আবৃত্তি করতে মঞ্চে আসেন সেখানে যুক্ত হয় ভিন্নতা। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের আয়োজনে গান ও কবিতার যুগলবন্দী অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন রামেন্দু মজুমদার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্বনামধন্য শিল্পী ঋদ্ধি বন্দোপাধ্যায়। ছুটির দিনের সন্ধ্যায় ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান আনন্দ দিয়েছে দর্শকদের। শুরুতেই রামেন্দু মজুমদার বলেন, আমি আবৃত্তির লোক নই। আজকের অনুষ্ঠান মূলত ঋদ্ধির। তিনি ভারতের পঞ্চকবির গানের একজন প্রধান শিল্পী। রামেন্দু শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনারতরী’ কবিতা দিয়ে। এরপরেই ঋদ্ধি গেয়ে শোনান রবি ঠাকুরের ‘তাই তোমার আনন্দ আমার ’পর’ তুমি তাই এসেছ নীচে’ ও ‘জাগরণে যায় বিভাবরী’। এরপরে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’ পাঠ করেন রামেন্দু মজুমদার।
×