ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ কমেছে ঢাকা দক্ষিণে ॥ মেয়র খোকনের দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৬ জুলাই ২০১৭

চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ কমেছে ঢাকা দক্ষিণে ॥ মেয়র খোকনের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এ কথার তথ্য-প্রমাণও তার কাছে রয়েছে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে কোন প্রকার ধারণা না থাকলেও রোগটি সম্পর্কে জানার সঙ্গে সঙ্গেই ডিএসসিসিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়ে কাজ শুরু করেছেন বলেও দাবি করেন মেয়র। মঙ্গলবার রাজধানীর ধানম-িতে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ ল্যাবএইড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চিকুনগুনিয়া : সচেতনতা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাঈদ খোকন এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রুবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ সমীরণ কুমার সাহা, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ কাজী নওশাদ উন নবী, ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ খাজা নাজিমুদ্দিন, ডাঃ মরিয়ম ফারুকী স্বাতী প্রমুখ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। মেয়র বলেন, চিকুনগুনিয়ার জীবাণু বহনকারী এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়, অন্যদিকে কিউলেক্স মশা জন্মায় জলাবদ্ধ জায়গায়। এক্ষেত্রে জলাবদ্ধতা অবশ্যই বড় এক সমস্যা। আমাদের পক্ষে বাড়ির ভেতরে গিয়ে ফগিং করা সম্ভব হয় না। তবে কোন নাগরিক যদি আমাদের তাদের বাড়িতে ঢুকতে এ্যালাউ করেন তাহলে সিটি কর্পোরেশন কর্মীরা বাসায় বাসায় গিয়ে মশা নিধনের কাজ করবে। চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মেয়র বলেন, চিকুনগুনিয়া নামে যে কিছু আছে, এটাই জানা ছিল না। মে মাসের প্রথম দিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমার নজরে আসে। এরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আমার কথা হয় এবং ২১ মে বিষয়টি বোঝার জন্য একটি সেমিনারের আয়োজন করি। এর আগে চিকুনগুনিয়া নামে যে কোন শব্দ আছে, তাই জানতাম না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও সেদিনই কথা হয় এবং তখন থেকে এ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানি ও তখন থেকেই আমাদের কাজ শুরু হয়। ফলে চিকুনগুনিয়া উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে, আর এটা আমি তথ্য-প্রমাণ দিয়েই বলতে পারব। তবে এ সময় সভায় উপস্থিত অধিকাংশই তার এ দাবির সঙ্গে একমত নন বলে জানান। চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের জনবল সঙ্কট আছে, এটা সত্যি। তবে ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনের কাজ চলছে। কিন্তু নিজেকে ডিফেন্ড করার জন্য বলছি না, আমি চাই, আমার নাগরিকদের মধ্যে যে ভয়-আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেটা দূর হোক, কেটে যাক। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। মেয়র হিসেবেই আমার দায়িত্ব, নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের মনের সংশয় দূর করা, তাদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনা। চিকুনগুনিয়া বড় সমস্যা ও ব্যথায় অনেকে ভুগছে, এটা সত্যি। আমরা তাদের সাহায্য করার জন্য হোমওয়ার্ক করছি, এ ব্যাপারে এখনও কোন ঘোষণা দেইনি। তবে এখন সে ঘোষণাটা দিচ্ছি, কোন নাগরিক যদি আমাদের টিমকে কল করে, তাহলে তার বাসায় আমাদের ফিজিওথেরাপিস্ট চলে যাবে, আমরা সেই প্রিপারেশন নিচ্ছি। চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীদের ব্যথা নিরাময়ের জন্য ‘অনকলে’ আমাদের ফিজিওথেরাপিস্টরা বাসায় যাবে, সেই সার্ভিস দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। সাঈদ খোকন বলেন, আমাদের প্রায় সাড়ে তিনশ’র মতো কর্মী রয়েছে, সমপরিমাণ স্প্রে মেশিন রয়েছে। তবে তা যে প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত, এটা বলার কোন সুযোগ নেই। স্প্রে মেশিন, ফগার মেশিন আরও সংগ্রহ করা হবে এবং তার জন্য চলতি বাজেট রাখা হয়েছে। চিকুনগুনিয়ার এবারের অভিজ্ঞতা আগামীতেও কাজে লাগবে বলে জানান তিনি। চিকুনগুনিয়া মহামারী রূপ নিয়েছে কি না, আলোচকদের এ প্রশ্নে ল্যাবএইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ এএম শামীম বলেন, যদি এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৫ জন আক্রান্ত হয় এবং সে অবস্থা টানা দুই সপ্তাহ চলে, তবে তাকে মহামারী বলা যায়। অনুষ্ঠানে বক্তারা চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচতে সবার মাঝে সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান।
×