ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোরার ছোবলে লণ্ড ভণ্ড টেকনাফ

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২ জুন ২০১৭

মোরার ছোবলে লণ্ড ভণ্ড টেকনাফ

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ মহাসেন, রোয়ানুর পর ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে টেকনাফে। ঘূর্ণিঝড় মোরার ছোবলে ল-ভ- হয়েছে টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন। টেকনাফের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেমিপাকা ও কাঁচা বসতঘর নেই বললে চলে। বিধ্বস্ত হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সড়ক যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, মোবাইল যোগাযোগ, বিদ্যুত, নৌ-যোগাযোগ সবই ২৯ মে গভীর রাত থেকে ৩০ মে বিকেল পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ছিল। ৩০ মে বিকেলে উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়া গাছ সরিয়ে কোন রকম সড়ক যোগাযোগ চালু করা হলেও ল্যান্ড ফোন, মোবাইল ফোন, বিদ্যুত, নৌ-যোগাযোগ এখনও বন্ধ রয়েছে। বসতঘরে ছাউনি না থাকায় মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই অনেকের। সর্বত্র গাছ পড়ে ভেঙ্গে গেছে এদের বাড়িঘর। উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল ও নির্বাচন অফিস ভবনের ওপর পড়েছে একাধিক গাছ। গাছ পড়ে শিশু পাঠাগার সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। পানের বরজ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। সৈকতের ঝাউ বাগানের অসংখ্য গাছ ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়েছে। ২৯ মে গভীর রাত থেকে টেকনাফে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। চিংড়ি, কৃষি, শিক্ষা, মৎস্য, গবাদিপশু ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপে নিহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে শতাধিক ব্যক্তি কমবেশি আহত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোরার তা-বে টেকনাফে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বিদ্যুতের। উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুতের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দাবি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে, টেকনাফে সব লাইন চালু করতে অন্তত চার সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে কক্সবাজার-টেকনাফ তেত্রিশ হাজার কেভি তথা মেইন লাইন ছিঁড়ে খ- বিখ- হয়ে গেছে। মেইন লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল এবং সরকারী দফতর বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতনির্ভর প্রতিষ্ঠান এবং সব খানে রীতিমতো দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে টেকনাফে ষাটটির অধিক বিদ্যুতের খুঁটি একেবারে ভেঙ্গে গেছে। খুঁটি ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি ট্রান্সফরমার মাটিতে পড়ে আছে। ঊনষাটটি ক্রস আর্মস নষ্ট, সত্তরের অধিক স্পটে এসটি তার, পঞ্চাশের অধিক স্পটে এলটি তার ছিঁড়ে গেছে। দেড় হাজারটি মিটার নষ্ট হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে আছে। দুই হাজার ফুটের বেশি সার্ভিস তার ছিঁড়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুত চট্টগ্রাম, রাউজান, পটিয়া এবং কক্সবাজার হেড অফিস থেকে অতিরিক্ত ৩৫ জন স্টাফকে টেকনাফে পাঠানো হয়েছে।
×