ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এনামূল হক

মাইটোকন্ড্রিয়াল ট্রান্সপ্লান্টেশন সন্তান লাভের নতুন কৌশল

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মাইটোকন্ড্রিয়াল ট্রান্সপ্লান্টেশন সন্তান লাভের নতুন কৌশল

নারী-পুরুষের যৌন মিলনের মধ্য দিয়ে সন্তান জন্ম নেয়। সেই সন্তান তার বাবা-মার জিনগত বৈশিষ্ট্য ধারণ ও বহন করে চলে। পরবর্তীকালে সেই সন্তান পূর্ণপ্রাপ্ত পুরুষ বা নারীতে পরিণত হয়। একই নিয়মে সে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে মিলিত হয়ে সন্তানের জন্ম দেয় এবং বাবা-মার জিনগত বৈশিষ্ট্য সেই সন্তানের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। লাখ লাখ বছর ধরে এই নিয়মেই মানবজাতির বিবর্তন ঘটে চলেছে এবং এভাবেই জিন বা বংশগতি পরিবাহিত হয়ে চলেছে। কিন্তু ২০ বছর আগে একটি ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। ডলি নামে একটি মেষশাবক জন্ম নেয়। শাবকটির জন্ম হয় এবং আরও পরিষ্কারভাবে বললে জন্ম দেয়া হয় প্রচলিত প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে একটি ব্যতিক্রমী পদ্ধতিতে। এখানে স্ত্রী ও পুরুষ এই দুই বিপরীত লিঙ্গের কোন মিলন ঘটেনি। এক্ষেত্রে গবেষণাগারে দুই মেষের বিশেষ বিশেষ কোষ নিয়ে সেগুলোর মধ্যে বিদ্যুতপ্রবাহ ঘটিয়ে মিলন ঘটানো হয় এবং এই মিলনের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয় ভ্রƒণে। সেই ভ্রƒণ পূর্ণতা লাভ করে পৃথিবীর আলো দেখে এবং জন্ম নেয় প্রথম ক্লোন মেষ। ক্লোনিং বিজ্ঞানের জগতে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করে এবং ক্লোন মানব তৈরি হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। সম্প্রতি আমেরিকার জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির এক রিপোর্টে জিন এডিটিং কৌশলের ওপর গবেষণার অগ্রগতি তুলে ধরে বলা হয়Ñ এই কৌশল এতই কার্যকর যে এর দ্বারা কোন ভ্রƒণ বিকশিত হতে শুরু করার আগেই হিমোফিলিয়া ও সিকন সেল এনিমিয়ার মতো জিনগত রোগব্যাধি সারিয়ে তোলা সম্ভব। একদিকে জিন এডিটিং কৌশল এবং অন্যদিকে অন্যান্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে ক্লোনমানব আরও বেশি বাস্তবসাধ্য হয়ে উঠেছে। তবে কেউ কেউ আবার এমন সম্ভাবনায় আতঙ্ক বোধ করছে। তারা মনে করছে, প্রজনন নিয়ে এটা ঈশ্বরের সঙ্গে খেলা করার শামিল। কিন্তু যারা জিনগত রোগব্যাধির শিকার তারা মনে করে, বিজ্ঞান যদি তাদের এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারে তাহলে ক্ষতি কি? এটা ঠিক যে, প্রজননের অপশনগুলোর পরিধি ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে। কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থা সেই ঊনবিংশ শতাব্দীতে উদ্ভাবিত। আর ইনভাইট্রো কাটিলাইজেশন বা আইভিএফ ১৯৭০’র দশকে প্রথম প্রয়োগ হয়। দুটো কৌশলই আজ নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেমনি হয়ে দাঁড়িয়েছে আইসিএসআই। এটি ইন্ট্রাসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশনের সংক্ষেপ। এর মাধ্যমে শুক্রাণু বা পুরুষের বীর্য কোষ নারীর ডিম্বাণু বা ডিম্ব কোষের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে বন্ধ্যা পুরুষ পিতৃত্ব লাভ করতে পারে। গত বছর আরেকটি কৌশল যুক্ত হয়েছে যার নাম মাইটোকন্ড্রিয়াল ট্রান্সপ্লান্টেশন। আমাদের শীঘ্রই হয়ত এমন সম্ভাবনার সম্মুখীন হতে হবে যে, স্বীকৃত বাবা-মার শুক্রথলি বা ডিম্বাশয় থেকে নয়, বরং তাদের দেহকোষ থেকে এবং সম্ভবত শরীরের ত্বক থেকে তৈরি হবে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু। এই কৌশল বা পদ্ধতি যৌন মিলনের ব্যাপারটিকে প্রজনন থেকে পৃথক করে ফেলছে। বেশিরভাগ কৌশল কোন্ ভ্রƒণটি বাঁচবে আর কোন্ ভ্রƒণটি মরে যাবে সেটা বাছাই করার সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়। প্রথম প্রথম এগুলোকে হতবুদ্ধিকর এমনকি জঘন্য ধরনের মনে হতে পারে। তবে অভিজ্ঞতায় একটা জিনিস দেখা গেছে যে, কোন কিছুকে জঘন্য বলে ভাবাটা নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ভাল নির্দেশিকা হতে পারে না। এআইডি বা আর্টিফিশিয়াল ইনসেমিনেশন বাই ডোনার কৌশলটিকে আমেরিকার অন্তত একটি আদালত ব্যভিচারেরই একটি রূপ বলে গণ্য করেছে এবং এই কৌশলে জন্ম নেয়া সন্তানকে আইনের চোখে অবৈধ হিসেবে দেখেছে। কিছু কিছু ধর্মতাত্ত্বিক আইভিএফ নিয়ে ক্ষেপেছে এই কারণে যে, এই শ্রেণীর শিশুর আত্মা বলে সত্যিই কিছু থাকবে কিনা। কল্পবিজ্ঞানে জিন এডিটিংয়ের মধ্য দিয়ে অতিমানব ও অতিমানবী সৃষ্টির বিষয়টি দেখানো হয়, যেখানে তারা অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তি ও শারীরিক ক্ষমতার অধিকারী। ডলির জন্মের কথা যখন ঘোষণা করা হয় তখন পত্রপত্রিকা ক্লোন কাহিনী নিয়ে নানা ধরনের শিরোনামে ছেয়ে গিয়েছিল। অনেকে যুক্তি দেখায়, মানুষের প্রজনন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্লোনমানব তৈরি প্রকৃতির পরিপন্থী এবং এতে মানুষের মর্যাদার অবমাননা হয়। কিন্তু যারা তা মনে করে না তাদের কাছে ব্যবহারিক ও নৈতিক দুটো বাধাই সুবিশাল। ডলির ক্ষেত্রে ২৭৭টি সফল পারমাণবিক স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে ২৯টি স্বাভাবিক চেহারার ভ্রƒণ তৈরি হয়। এগুলো ১৩টি ভাড়াটে মায়ের জঠরে স্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে মাত্র একটি বেঁচেছিল। এ ধরনের কাজে এমন ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া প্রয়োগ করার নৈতিক যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আরও ব্যাপার আছে। ডলির অল্প বয়সে অস্ট্রিও আর্থ্রাইটিস ও ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল। পরবর্তীকালে সেটি মারাও যায়। এ নিয়ে জোর বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে যা আজ অবধি থামেনি। সেটা হচ্ছে, ডলির কি অকালমৃত্যু হয়েছিল? এবং এই অকালমৃত্যু কি তার জন্মের পদ্ধতির মধ্যে নিহিত। অন্যান্য প্রজাতির ক্লোন নিয়ে অভিজ্ঞতায় দেখা গেছেÑ এদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অস্বাভাবিকতা বা অসঙ্গতির প্রবণতা থাকে। আবার এও দেখা গেছে যে, ডলির চারটি ক্লোন নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষণ শিবিরে হৃষ্টপুষ্ট ও বড়সড় হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ গবেষক মানব ক্লোনিংকে বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলেও অতিউৎসাহী লোকেরও অভাব নেই যারা অন্যদের তাক লাগিয়ে দিয়ে মানুষের নজর কাড়তে চান। ইতোমধ্যে এমন কিছু লোক দাবি করেছেন যে, তারা ক্লোনমানব তৈরি করতে যাচ্ছেন। পরবর্তীকালে তারা এমনও দাবি করেন যে তারা ইতোমধ্যে তৈরি করে ফেলেছেন। প্রথমে এমন দাবি করেন শিকাগোর পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড সীড। এরপর সুইস গবেষক বেলিয়ান্স মিনি ২০০২ সালে সাফল্য দাবি করেন। ইতালির এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সেভপররিনো এন্টিওরিও ২০০৯ সালে আরেক সাফল্য দাবি করেন। তবে এসব দাবি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা অতিমাত্রায় সন্দিগ্ধ। কারণ, তারা মনে করেন এসব দাবি বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণের দ্বারা সমর্থিত নয়। ১৯৯০’র দশকের শেষদিকে মানব ক্লোনিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার উদ্যোগ শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরও হয়। তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্লোনিং থেমে থাকেনি। ক্লোনিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রগতি মন্থর হলেও তা ক্রমশ এগিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ২০টিরও বেশি প্রজাতির ওপর তা সাফল্যের সঙ্গে প্রয়োগ করা হয়েছে। বিশেষ করে গবাদিপশু ও ডেইরি কামিংয়ের ক্ষেত্রে এই কৌশল প্রয়োজনীয় ও লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। এলিট প্রাণীদের অসংখ্য কপি তৈরি হয়েছে। নিউজিল্যান্ড ও আমেরিকায় ক্লোনিংকে পশু প্রজননের স্বাভাবিক পদ্ধতি হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্লোন পশু বাজারের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকা, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ক্লোনপশুর মাংস ও দুধ নিয়মিত চাষ ও বিক্রি করা হয়। তবে ইউরোপে পশুর কল্যাণের কথা বিবেচনায় রেখে এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মাংস ও দুধ পাওয়া যায় এমন পশু জগতে অন্যান্য পশু ক্লোনিংয়ের কাজ চলছে। যেমন টেক্সাসে ভায়াজেন নামে একটি খামার আছে সেখানে অনেক ঘোড়া ও পোষাপ্রাণী ক্লোন করা হয়। লোকে ক্লোন প্রাণী কেনার পেছনে পয়সা ব্যয় করতে কার্পণ্য করে না। কারণ, তাদের পোষা কোন প্রাণী মারা গেলে হুবহু একই চেহারার ও একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আরেকটা প্রাণী তারা সহজেই পেতে পারে। এভাবেই একটা ক্লোন ঘোড়া ৮৫ হাজার ডলার এবং একটি কুকুর ১ লাখ ডলারে পাওয়া যেতে পারে। চীনেও বিভিন্ন প্রাণীর ব্যাপক ক্লোনিং হচ্ছে। তবে ক্লোনিংয়ের হার মন্থর। শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই ক্লোনিং নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে ক্লোনিং না হলেও প্রজননের যেসব কৌশল উদ্ভাবিত হয়েছে সেগুলোও কম আশাব্যঞ্জক নয়। যেমন আইভিএফ ও এআইডি। সন্তান জন্মদানে অক্ষম যে পরিবারটি নিঃসঙ্গ একাকী থাকত তারা এসব কৌশলে লাভ করেছে স্বাস্থ্যবান শিশু এবং নিজেরা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুখী বাবা-মা। মাইটোকন্ড্রিয়াল ট্রান্সপ্লান্টেও একই ফল পাওয়া যাবে, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। সুখী বাবা-মা ও স্বাস্থ্যবান শিশু মিললে যে কোন প্রজনন প্রযুক্তির ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে দেখার অবকাশ মেলে। এ ক্ষেত্রে পদ্ধতি বা কৌশলের নিরাপত্তার দিকটাই হলো মূল ভাবনার বিষয়। আর নিরাপত্তার ব্যাপারটি প্রমাণ করাই সবচেয়ে বড় বাধা। গবেষকদের মানবভ্রƒণ নিয়ে গবেষণা করতে দেখাকে অনেকে অন্যায় বলে মনে করেন। কারণ, মানবভ্রƒণে মাত্র অল্পকিছু কোষ থাকে। তেমনিভাবে মানুষের নিকটতম আত্মীয় শিম্পাঞ্জির ভ্রƒণ নিয়ে সহজে পরীক্ষা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, এই প্রাণীগুলো এখন বিরল শ্রেণীভুক্ত এবং প্রায়শই আইনগতভাবে তাদের সুরক্ষা দেয়া হয়। তবে যে কৌশলটি আইনের পরিসীমার মধ্যে বাস্তব বলে পরীক্ষিত হয়েছে সেটিকে গ্রহণ করা ও চলতে দেয়া উচিত। যেমন মাইটোকন্ড্রিয়াল ট্রান্সপ্লান্ট। ব্রিটেনে মাইটোকন্ড্রিয়াল ট্রান্সপ্লান্ট উদ্ভাবিত হলেও সেখানে কিন্তু এই কৌশল তেমন একটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। জানা গেছে, প্রথম যে দম্পতি এই ট্রান্সপ্লান্ট নিয়েছে তারা জর্দান থেকে সুদূর মেক্সিকোয় গিয়ে গ্রহণ করেছে। যৌন মিলনের বাইরে সন্তান লাভের যত কৌশল আছে তার মধ্যে কোনগুলো নিরাপদ এবং সুখী বাবা-মা ও স্বাস্থ্যবান শিশু নিশ্চিত করে সেটা আগে দেখতে হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার এটাই একটা উপায়। দেহকোষ থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু জন্মানো সম্ভবত সবচেয়ে কম সমস্যাসঙ্কুল কৌশল যা শীঘ্রই আমাদের হাতের নাগালে আসবে। এই কৌশলের একটা সুবিধা হলো, এতে সমকামী দম্পতিরাও দুই তরফের সন্তানের অধিকারী হতে পারে। জিন এডিটিং ও ক্লোনিং কৌশল দুটিতে শুধু বাবা-মায়ের সুখ ও সন্তানের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টিই জড়িত নয়, তার চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত। জিন এডিটিংয়ের মধ্য দিয়ে জিনেটিক রোগব্যাধি এমনভাবে দূর হয়ে যাবে যার জন্য এখন ভ্রƒণ বাছাই করা দরকার। এটা একটা অগ্রগতি যা অনেকেই স্বাগত জানিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের উচিত স্বনির্ধারণের ব্যবস্থা হিসেবে নিজেদের নিখুঁত প্রতিরূপকে ক্লোন করতে সক্ষম হওয়া। কিন্তু নতুন জিনগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে সন্তান জন্ম দেয়া এবং অন্যদের ক্লোন করার বিষয়টিতে সমতার প্রশ্ন ওঠে। অন্য মানুষের সম্মতি ছাড়াই তার টিস্যু ব্যবহার করার অধিকার কারোর কখনও আছে কিনা সেই প্রশ্নও ওঠে। স্বভাবতই সে প্রশ্নটা এক বিরাট প্রশ্ন। সন্তানহারা শোকার্ত বাবা-মা কি তাদের হারানোর সন্তানকে ক্লোন করতে পারবে? কোন বিধবা কি পারবে তার প্রয়াত স্বামীকে ক্লোন করতে? অন্য কেউ পারার সামর্থ্য না রাখুন, ধনবান ব্যক্তিরা কি পয়সা খরচ করে তাদের সন্তানদের বুদ্ধিদীপ্ত ও পরিশ্রমী বানাতে পারবে নাকি তা তাদের করা উচিত? এসবই হলো নৈতিকতার প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞ কমিশনগুলোতে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। আদালতসমূহকেও সেখানে যে বিধি প্রয়োগ করা প্রয়োজন তা প্রয়োগ করতে হবে ভূমিষ্ঠ না হওয়া অনাগত শিশুর স্বার্থ রক্ষা করার জন্য। তারা এ ব্যাপারে পূর্বনজির টানতে পারেন। বলতে পারেন যে প্রকৃতজাত অভিন্ন দুই যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে সমাজ তো ক্লোনের সঙ্গে নিখুঁতভাবে মানিয়ে নিয়েছে। তাহলে মানব ক্লোনিং মেনে নিতে সমস্যা কোথায়? অথবা আইডিজির কথাই ধরা যাক। অনেকে মনে করেন, প্রজনন বায়োলজির এই কৌশলটি একদিন মস্তো বড় হয়ে দেখা দেবে। জিনেটিং স্কিনিং এবং কালক্রমে জেনোম এডিটিংয়ের সম্ভাবনা যতই সুস্পষ্টরূপ ধারণ করবে ততই লোকে দেখবে যে শরীরের অভ্যন্তরে ভ্রƒণ তৈরি হতে দেয়ার চাইতে শরীরের বাইরে সাবধানে ও সযতেœ তৈরি হতে দেয়া অনেক বেশি নিরাপদ। আর সেটাই যদি হয় তাহলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের করে আনার কঠিন পদ্ধতির তুলনায় চর্মকোষ থেকে প্রচুর পরিমাণ ডিম্বাণু আহরণের পদ্ধতিটা অনেক মহিলার জন্য উপযোগী হতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই পদ্ধতিগুলোকে স্বাগত জানানোই বাঞ্ছনীয়। সেটা মানবসমাজের জন্য যেমন প্রয়োজন তেমনি বিজ্ঞানের জন্যও প্রয়োজন। সূত্র : দি ইকোনমিস্ট
×