ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-রাজশাহী ফাইনাল আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬

ঢাকা-রাজশাহী ফাইনাল আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঢাকা ডায়নামাইটস কিংবা রাজশাহী কিংস যে দলই আজ বিপিএল ফাইনালে জিতুক, শিরোপা তাদেরই হয়ে যাবে। আর শিরোপা জিতলেই বিপিএল আবারও নতুন চ্যাম্পিয়ন দল পেয়ে যাবে। ঢাকা-রাজশাহীর মধ্যকার ম্যাচটি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় শুরু হবে। এ ম্যাচটি শেষ হতেই বিপিএলের চতুর্থ আসরের পর্দাও নামবে। ম্যাচটিতে নিশ্চিতভাবেই ফেভারিট ঢাকা ডায়নামাইটস। দলটি যে শক্তিশালী। সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী মারুফ, কুমার সাঙ্গাকারা, এভিন লুইস, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভোদের নিয়ে গড়া দল। লীগ পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে থেকেই প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলা নিশ্চিত করে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে খুলনা টাইটান্সকে পাত্তাই দেয়নি ঢাকা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলার টিকেট পেয়ে যায়। আরেকদিকে রাজশাহী কিংসে সাব্বির রহমান রুম্মন, মুমিনুল হক, নুরুল হাসান সোহান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, ফরহাদ রেজা, ড্যারেন সামি, জেমস ফ্রাঙ্কলিন, সামিত প্যাটেল, কেসরিক উইলিয়ামস আছেন। রাজশাহীর ক্রিকেটারদের চেয়ে ঢাকার ক্রিকেটারদের তারকাখ্যাতি অনেক বেশি। দলের ক্রিকেটাররাও দুর্দান্ত খেলছেন। তবে লীগ পর্বে যে ঢাকাকে দুইবারই হারিয়েছে রাজশাহী, সেটি সামিদের জন্য প্রেরণা হয়ে ধরা দিতে পারে। ফাইনাল ম্যাচের আগে জ্বলে ওঠে রাজশাহী। সেই জ্বলে ওঠায় ক্রিকেটারদের ভেতর যে আত্মবিশ্বাস জমা হয়েছে, মনোবল চাঙ্গা হয়েছে; তাতে ঢাকা বিপাকেও পড়তে পারে। টি২০ বেশিরভাগ সময়ই একজন ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারের খেলা হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত দিনটিতে যে দলের ক্রিকেটাররা ভাল খেলেন, তাদের হাতেই জয় ধরা দেয়। লীগ পর্বের শেষ ম্যাচ থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ক্রিকেটার কেসরিক উইলিয়ামস ও ড্যারেন সামি পুরো মাতিয়ে রেখেছেন। দলের ক্রিকেটারদের চাঙ্গা করে রেখেছেন। আজ ফাইনালেও যদি সামির ঝলক দেখা মিলে, তাহলে ঢাকা হেরেও যেতে পারে। তবে ঢাকায় যে একের পর এক ব্যাটসম্যান আছে, সেটিই না শেষ পর্যন্ত পার্থক্য গড়ে দেয়, সেটিই সবার ভাবনায় আছে। রাজশাহী অধিনায়ক ড্যারেন সামি অবশ্য ঢাকাকে শক্তিশালী দলই মানছেন। দর্শকদের সমর্থন যে ঢাকা বেশি পাবে, তাও বুঝে গেছেন। তবে এখনও নাকি রাজশাহীর ক্রিকেটাররা নিজেকে উজাড় করে খেলেনি। যেহেতু ফাইনাল ম্যাচ। এ আসরে সবারই শেষ ম্যাচ এটি। তাই সব ক্রিকেটারই নিজের সর্বস্ব ঢেলে দেবেন বলেই সামির বিশ্বাস। তা যদি হয়, তাহলে রাজশাহীর হাতে জয় যে ধরা দেবে না, তা কেউই বলতে পারে না। তখন যতই ঢাকা শক্তিশালী দলের তকমা পেয়ে যাক, শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যাবে। ঢাকার অলরাউন্ডার নাসির হোসেন অবশ্য সেই রকম কোন কিছুই দেখছেন না। ফাইনাল ম্যাচ বিগ ম্যাচ। তা বুঝতে পারছেন নাসির। চাপ দুই দলেরই থাকবে। তাও বুঝতে পারছেন। তাহলে কী করতে হবে? চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কোন রসদ কি আছে? নাসিরের কাছে আছে। সেটি কী? নাসির জানালেন, ‘পারফর্ম করা। চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’ বিপিএলে এরআগে তিনটি আসর অনুষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালে প্রথম আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স চ্যাম্পিয়ন হয়। পরের আসরেও ২০১৩ সালে শিরোপা জিতে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সই। কিন্তু দলটি ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। এ ম্যাচ গড়াপেটার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তৃতীয় আসর শুরু হবে না। এ শর্তে মাঝখানে এক বছর বিপিএল হয়নি। শেষ পর্যন্ত তদন্ত শেষে অভিযুক্ত ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স দলটিকে বাদ দিয়ে তৃতীয় আসর ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা দলটি থাকে এ আসরেও। তবে নতুন নামকরণ এবং নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি কিনে নেয়। সেই সঙ্গে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও নতুন দল হিসেবে যুক্ত হয়। দুরন্ত রাজশাহী দলটিকেও খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক না দেয়ায় বাদ দেয়া হয়। একই সমস্যায় খুলনা রয়েল বেঙ্গলসকেও বাদ দেয়া হয়। সিলেট রয়্যালস দলটিকে বাদ দিয়ে সিলেটের জন্য নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নেয়া হয়। দলটির নাম হয় সিলেট সুপার স্টারস। প্রথমবারেই বাজিমাত করে কুমিল্লা তৃতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়। নতুন চ্যাম্পিয়ন দলও পায় বিপিএল। এবারও তাই হবে। এবার খুলনা টাইটান্স ও রাজশাহী কিংস নতুন দল হিসেবে বিপিএলে যুক্ত হয়। সিলেট সুপার স্টারসকে এবার বাদ দেয়া হয়। রাজশাহী কিংস প্রথমবার বিপিএলে অংশ নিয়েই দুর্দান্ত নৈপুণ্য উপহার দেয়। সবাইকে পেছনে ফেলে ফাইনালে খেলে। ফাইনালে রাজশাহী কিংসের প্রতিপক্ষ ঢাকা ডায়নামাইটসও প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলছে। যে দলই চ্যাম্পিয়ন হোক, আবারও নতুন চ্যাম্পিয়ন দলই মিলবে। চ্যাম্পিয়ন দল ২ কোটি আর রানার্সআপ দল ৭৫ লাখ টাকা পাবে। আজ ফাইনাল ম্যাচ জিতে ঢাকা না রাজশাহী শিরোপা নিজেদের করে নেয়, সেদিকেই এখন সবার নজর আছে।
×