ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যানজট সমস্যা সমাধানে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। হাতে নেয়া হয়েছে নতুন একাধিক প্রকল্প। সর্বশেষ যানজট নিরসনে নতুন দাওয়াই বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট করতে যাচ্ছে সরকার। যদিও প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অনেক চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন যোগাযোগ খাতের বিশেষজ্ঞরা। তবে কাজ শেষ হলে নিশ্চিত সুফল মিলবে। ২০ কিমি সময় অতিক্রম করতে সময় লাগবে ৫০মিনিট। এখন যেখানে ব্যয় হচ্ছে তিন ঘণ্টা। কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর যানজট নিরসনে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণে চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। চীনের গেজহুবা গ্রুপ ৮৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় ২০ দশমিক ৫০ কিমি দৈর্ঘের এ প্রকল্পের জন্য ১৬ কিমি বিআরটি লেন, ৩২ কিমি ফুটপাথ ও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেন নির্মাণ করে দেবে। আগামী ৩০ মাসের মধ্যে এ নির্মাণ কাজ শেষে উভয়দিক থেকে ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক একরাম উল্লাহ ও গেজহুবা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াং রোমেন চুক্তিতে সই করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠান। প্রকল্প পরিচালক একরাম উল্লাহ অনুষ্ঠানে বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য হবে ২০ দশমিক ৫০ কিমি। এর মধ্যে উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সাড়ে চার কিমি এলিভেটেড বিআরটি লেন থাকবে। বাকি ১৬ কিমি থাকবে সমতলে। নির্মাণ করা হবে ছয়টি ফ্লাইওভার। দুই প্রান্ত গাজীপুর ও বিমানবন্দরে থাকবে দুটি টার্মিনাল, আর মাঝের পথে হবে ২৫টি স্টেশন। প্রতি দুই থেকে ৫ মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছতে সময় লাগবে ৫০ মিনিট। ১৮ মিটার দৈর্ঘের ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস চলাচল করবে এ পথে। বাস ভাড়া আদায় হবে ইলেক্ট্রনিক স্মার্ট কার্ডে। গাজীপুর থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট চালু হলে টঙ্গী ও উত্তরার সঙ্গে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত সহজতর হবে এবং এর মধ্য দিয়ে দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি আরামদায়ক সেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে প্রত্যাশা করছে সরকার। মূল নির্মাণের পাশাপাশি কিছু সড়ক প্রশস্তকরণ, সার্ভিস সড়ক ও গাজীপুরে তিন কিমি ড্রেনেজ নির্মাণ, আট লেনের টঙ্গী সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণের খরচ মিলিয়ে এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। সরকারের পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসী দাতা সংস্থা (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) এতে অর্থায়ন করছে। বুয়েটের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদ-ে বিআরটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কিমি প্রতি ব্যয় হওয়ার কথা ১০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এই প্রকল্পে প্রতি কিমিটারে ব্যয় হবে ১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। সেক্ষেত্রে গাজীপুর-বিমানবন্দর বিআরটিএ হবে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট। চলতি বছরের ২৬ জুন যোগাযোগ খাতের বড় দুই প্রকল্প নির্মাণের আনুষ্ঠানিক যাত্রা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে ছিল মেট্রোরেল ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)। প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে চুক্তির মধ্য দিয়ে আরেক ধাপ অগ্রগতি হলো।
×