ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার জের

বদলে যেতে পারে বিশ্ব ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১১ নভেম্বর ২০১৬

বদলে যেতে পারে বিশ্ব ব্যবস্থা

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত জয় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। সীমান্তে কঠোরভাবে কড়াকড়ি আরোপ না করার যে বিশ্ব ব্যবস্থা এতকাল অনুসরণ করা হয়ে এসেছে তারও ব্যত্যয় ঘটাতে পারে ট্রাম্পের এ জয়। আন্তর্জাতিক পরিম-লে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আগের মতো থাকবে কী থাকবে না, সেটি নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এই প্রথম এমন একজন প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছেন যিনি তার সকল পূর্বসূরীর অনুসৃত আন্তর্জাতিকবাদ জলাঞ্জলি দেবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। তার অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার হলো সীমান্ত নিñিদ্র করা। ট্রাম্পের নির্বাচনের অন্যতম দিক ছিল আমেরিকা এখন নিজের ঘর গোছানোর দিকে মনোযোগ দেবে এবং বাকি বিশ্ব নিয়ে মাথা ঘামাবে না। আন্তর্জাতিক সমস্যা প্রত্যেকে যার যার উদ্যোগে সমাধান করবে। আন্তর্জাতিক ইস্যু থেকে মুখ ফিরিয়ে অভ্যন্তরীণ ইস্যুর দিকে মনোযোগ দেয়ার রিপাবলিকান দলের নতুন অবস্থানের সঙ্গে চলতি বছর আরও আগে অনুষ্ঠিত ব্রিটেনে ইইউ প্রশ্নে গণভোটের সঙ্গে মিল রয়েছে। ওই ভোটে বেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ে। ট্রাম্পের জয় জাতীয়তাবাদী, স্বদেশী এবং বদ্ধ দুয়ার নীতির অনুসারীদের পালে যে হাওয়া লাগাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ ধরনের রাজনীতি বর্তমানে ইউরোপে ও এর বাইরের বিভিন্ন দেশে ক্রমাগত শক্তি অর্জন করছে। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারে দরপতন ঘটে। মেক্সিকো উত্তরের প্রতিবেশীর সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে নতুন করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করেছে। নয়া রাজনেতিক জোট, বাণিজ্যিক চুক্তি ও বৈদেশিক সাহায্যের বিষয়গুলো নিয়ে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোকে নতুন করে ভাবতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে রাশিয়ার যেমন কাছাকাছি আসতে পারে, তেমনি দূরত্ব তৈরি হতে পারে ইরানের সঙ্গে। ট্রাম্প প্রসিডেন্ট হওয়ায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, ‘ভূরাজনৈতিকভাবে অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হলো। ট্রাম্প কি করবেন, সে বিষয়ে আমাদের কোন ধারণা নেই।’ যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূত গেরার্দ আরাউদ তার টুইটে লিখেছেনÑ ‘ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট এবং ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মনে হচ্ছে বিশ্বে যে কোন কিছুই ঘটতে পারে।’ পরে অবশ্য তিনি টুইটটি ডিলিট করে দেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রধান ক্রিসপিন ব্লান্ট বলেছেন, ‘আমরা এক অনিশ্চয়তার যুগের দিকে ধাবিত হলাম’। একসঙ্গে কাজ করবেন স্যান্ডার্স যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট দলের প্রাথমিক বাছাইয়ে তরুণ ভোটারদের উৎসাহিত করা বামপন্থী প্রার্থী বার্নি স্যান্ডারস বুধবার জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শ্রমিক পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে চান। অপর বামপন্থী নেত্রী এলিজাবেথ ওয়ারেনও শ্রমিকদের জন্য কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। খবর এএফপির। এক বিবৃতিতে ভারমন্টের সিনেটর স্যান্ডারস বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করতে চান। এজন্য তিনি রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান। যাতে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। অপর ডেমোক্র্যাট মেসাচুসেটস থেকে নির্বাচিত সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনও জনগণের জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রতিষ্ঠা সহয়তা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে থেকে বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
×