ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

পাকিস্তান আতঙ্কেই তালেবানের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ১৩ জুলাই ২০২৫

পাকিস্তান আতঙ্কেই তালেবানের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা?

ছবি: সংগৃহীত

তালেবানকে ঘিরে ভারতের সাম্প্রতিক নীরব কূটনৈতিক তৎপরতা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান শাসনের সময় ভারত তাদের স্বীকৃতি না দিয়ে গণতান্ত্রিক আফগানিস্তানের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালে তালেবান ফের ক্ষমতায় ফিরে এলে, প্রথমদিকে ভারত সীমিতভাবে মানবিক সাহায্য পাঠালেও এখন তার অবস্থানে পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।

ভারত এখন তালেবানের সঙ্গে সীমিত কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপন করছে। ২০২২ সালে “টেকনিক্যাল টিম” পাঠিয়ে কাবুলে দূতাবাস আংশিকভাবে পুনরায় চালু করেছে। একদিকে কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশ রোধ, অন্যদিকে আফগানিস্তানে ভারতের বিপুল বিনিয়োগ রক্ষা, এই দুই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই ভারত তার নীতি বদলাচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানকে পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ একটি শক্তি হিসেবে দেখত ভারত। কিন্তু তালেবান পতনের পর, আফগানিস্তানে ভারত ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে- আফগান সংসদ ভবন, সড়ক, হাসপাতাল, স্কুল এমনকি সালমা বাঁধ। এইসব বিনিয়োগ শুধু উন্নয়নই নয়, বরং পাকিস্তানের প্রভাব কমাতে ভারতের কৌশলগত গভীরতা তৈরির প্রচেষ্টা ছিল।

তালেবান ভারতীয় সাহায্যকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে এবং নিয়মিত কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়া তালেবান এখন ভারতের মত একটি আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে বৈধতা অর্জনের পথ খুঁজছে।

ভারতের এই অবস্থান অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। নারী অধিকার, সংখ্যালঘু নিপীড়ন, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলোতে নীরব থাকা ভারতের গণতান্ত্রিক আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

এই পরিস্থিতি ভারতের পররাষ্ট্রনীতির একটি বড় প্রশ্ন তুলে ধরেছে- আদর্শ নয়, এখন কি শুধুই কৌশলগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? নাকি এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত যেখানে ভারসাম্য রেখে চলে আফগানিস্তানের জটিল বাস্তবতাকে মোকাবিলা করা হচ্ছে?

মুমু ২

×