ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

দখল হচ্ছে কুয়াকাটার রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশান

আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা, পটুয়াখালী 

প্রকাশিত: ১৫:১০, ১৩ জুলাই ২০২৫

দখল হচ্ছে কুয়াকাটার রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশান

ছবি: জনকণ্ঠ

দখল হয়ে যাচ্ছে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশানের স্থান। যার ফলে সংখ্যালঘু থেকে শূন্যের কোটায় থাকা রাখাইনরা এখন মৃত্যুর পরের ঠিকানা খুঁজছেন। জুলাই-গণঅভ্যুত্থানের পরেও দখল বন্ধে নাই কোন সুখবর। বিষয়টিকে মানবতার শেষ বিপর্যয় হিসাবে দেখছেন আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দরা। 

সম্প্রতি পটুয়াখালীর কুয়াকাটার কালাচাঁনপাড়া এবং মুম্বিপাড়ায় রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশান স্থান পরিদর্শন করেন কেন্দ্রিয় আদিবাসী ফোরামের নেতৃবৃন্দরা। এসময় উঠে আসে শ্মশান দখলের এই ভয়াবহ চিত্র। ওই সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন, পটুয়াখালীর ২৭টি শ্মশানের মধ্যে ২০টি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দখল করা হয়েছে।

কালাচান পাড়ার গ্রাম নেতা মংচোয়েন অভিযোগ করেন- "শবদাহের জন্য সরকারিভাবে রেকর্ড করা ৭৪ দশমিকের মধ্যে, মাত্র ১৫ দশমিক আমাদের কাছে রয়ে গেছে, বাকি জমি স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে নিয়েছে। তিনি জানান, "স্থানীয় মানুষজন আমাদের জমিতে পুকুর খনন করেছে, ঘরবাড়ি তৈরি করেছে এবং বাঁশের বাগান স্থাপন করে দখল করে নিচ্ছে।" 

অভিযুক্ত দখলদারদের একজন মোঃ দুলাল মৃধা দাবি করেছেন যে তার বাবা ১৯৫০ সালে রাখাইন বাসিন্দাদের কাছ থেকে ১৩ দশমিক ৩৭ একরেরও বেশি জমি বৈধভাবে কিনেছিলেন। যদি জমির কোনও অংশ রাখাইনদের বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে আমি তা ফেরত দিতে রাজি আছি। আরেক দখলদার জালাল মিয়া দাবি করেন, অন্যরা ঘর তৈরি বা মাটির চুলা তৈরির জন্য সেখান থেকে মাটি নিয়ে গেছে। আমি কোনও জমি নিইনি। 

কুয়াকাটা বেড়িবাঁধের পাশে মুম্বিপাড়ার জনৈক নাজির আহমেদ দুই বছর আগে রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশানের জমিতে একটি টিনশেড শৌচাগার তৈরি করেছিলেন এবং এখন তিনি প্রায়শই সেখানে গবাদি পশু চরান। তিনি জানান, আমি যখন শৌচাগার তৈরি করেছিলাম তখন কেউ আপত্তি করেনি। যদি তারা এখন এটি ফেরত চায়, তাহলে আমি এটি সরিয়ে দেব। 

মম্বিপাড়ার ৫৭ বছর বয়সী হ্যাংচিনসে রাখাইন বলেন, জমি দখলের কারণে তাদের শ্মশান ৯০ দশমিক থেকে কমে মাত্র ৩০ দশমিকে দাঁড়িয়েছে। 

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ইয়াসীন সাদেক বলেন, শ্মশানভূমি দখলের বিষয়ে আমরা কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি। যদি আমরা পাই, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া আমরা ইতিমধ্যে নোয়াপাড়ায় রাখাইন পরিবারের জন্য দুটি বাড়ী তৈরি করেছি এবং আরও কিছু করার পরিকল্পনা করছি।

আবির

×