
পানিতে ডুবে আছে শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার দরগা বাড়ি
টানা বৃষ্টি নেই, কিন্তু এখনো পানি জমে আছে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী কোর্টের অনেক সড়কে। জেলা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সামনের সড়কে জমে আছে পানি। বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় এমনকি অনেক বাসাবাড়ির সামনে জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন শহরের অনেক বাসিন্দা। বৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীর মতো পানিবন্দী হয়ে পড়েন নোয়াখালীর প্রায় সবকয়টি উপজেলার হাজার হাজার বাসিন্দা।
এখনো দেড় লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে রয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার তথ্য অনুযায়ী, জেলায় প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দী। এ পর্যন্ত বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭টি ঘর। এর মধ্যে কবিরহাটে ২৫টি, সুবর্ণচরে ২১টি ও সেনবাগ উপজেলায় ১২টি ঘর বিধ্বস্ত হয়। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমে যাওয়ায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ৭৯৪ জন বাড়ি ফিরে গেছেন।
বর্তমানে ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৫৬ জন রয়েছেন। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক আজরুল ইসলাম রবিবার বলেন, আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালীতে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। সরেজমিনে জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, কলেজপাড়া, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ, নোয়াখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এলাকা, হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের কলোনি, নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজসংলগ্ন দরগাবাড়ি ও কাজি কলোনি এলাকা ঘুরে দেখা হয়। এসব এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে।
জেলা জজ আদালত আঙিনায় পানি জমে থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত বিচারপ্রার্থীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানান নোয়াখালী সদর পশ্চিমাঞ্চলের চরমটুয়া ইউনিয়ন থেকে আসা হেদায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে একাধিকবার তিনি আদালতে এসেছেন। প্রতিবারই পানি মাড়িয়ে আদালতের বারান্দায় উঠতে হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ না থাকায় দরগাবাড়ি ও হরিজন সম্প্রদায়ের কলোনির বাসিন্দাদেরও জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে দেখা যায়।
দরগাবাড়ির বাসিন্দা করিম বলেন, তাদের বাড়িতে অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস করে। লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার অনেক পুরোনো বাড়ি এটি। এই বাড়ির আশপাশে অনেক বাড়িঘর উঠে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বেশিরভাগ বেদখল হয়ে গেছে। ফলে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই বাড়ির চলাচলের রাস্তাসহ আঙিনা পানিতে ডুবে যায়। এদিকে জেলার কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ও ধান শালিক ইউনিয়নের অনেক এলাকা এখনো ডুবে রয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট, বসতবাড়ির আঙিনা ডুবে থাকায় মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।