ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্কুলের মাঠে ধান চাষ ॥ শিক্ষার্থীরা খেলছে বারান্দায়

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

স্কুলের মাঠে ধান চাষ ॥ শিক্ষার্থীরা খেলছে বারান্দায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২২ অক্টোবর ॥ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ঝিকড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি ধান চাষের জন্য বর্গা দেয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঝিকড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দু-তিন মণ ধানের বিনিময়ে আমন চাষাবাদের জন্য বর্গা দেয়া হয়েছে। এ কারণে স্কুল ভবনের একেবারে কাছেই শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি করতে হচ্ছে। মাঠে ধান চাষ হওয়ায় খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। শনিবার সকালে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের বারান্দার সামনে ছেলেমেয়ে ছোটাছুটি করছে। আর বাকিরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওদের ছোটাছুটি দেখছে। পাশের দুটি শ্রেণীকক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠ চলছে। মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীদের গোলমাল থামাতে শিক্ষক তাড়া করছেন। অন্য একটি কক্ষের মেঝেতে পলিথিনের মাদুর বিছিয়ে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বসে হইচই করছে। আর প্রধান শিক্ষক আলী আহমেদ বারান্দার এক কোণে বেঞ্চ বসিয়ে দাফতরিক কাজ সেরে নিচ্ছেন। ১৯৯৫ সালে বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ঝিকড়া গ্রামে ৫০ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। ২০১৩ সালে রেজিস্টার্ড প্রাইমারী বিদ্যালয় জাতীয়করণের সময় বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হয়। এরপরও অবকাঠামোর কোন পরিবর্তন হয়নি। ফলে দিন দিন বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙে জরাজীর্ণ হচ্ছে। বর্তমানে ১২৬ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। শিক্ষক আছে তিনজন। বিদ্যালয়টির নিজস্ব জমির সাত-আট শতক জমির ওপর ঘরটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। পেছনের জায়গা দখল করে বসবাস করছেন দবিরউদ্দিন। আর বিদ্যালয়ের ঘরের সামনের ফুট দশেক জায়গা রেখে মাঠটি আমন চাষের জন্য জিয়ারুল হকের কাছে বর্গা দেয়া হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী পারভেজ জানায়, ‘স্কুলে একটা ফুটবল আছে, কিন্তু মাঠে ধান লাগানোর কারণে আমরা খেলতে পারি না।’ পঞ্চম শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুন জানায়, বেঞ্চ-সঙ্কটে তাদের মাটির মেঝেতেই পলিথিন বিছিয়ে ক্লাস করতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় ক্লাসরুম। তখন বন্ধ থাকে পড়ালেখা। মাঠে ধান চাষের কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আলী আহমেদ বলেন, বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হলেও তাঁরা কোন সরকারী সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। ফলে তাঁদের আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটছে। এ সঙ্কট কিছুটা লাঘবের জন্য মাঠের জমি চাষাবাদের জন্য বর্গা দেয়া হয়েছে।
×