বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদোন্নতিসহ পেশাগত নানা সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরও বাস্তবায়ন না হওয়া ‘ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘পদোন্নতিসহ নানা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্ত্বেও কিভাবে হয় না? তাহলে আমরা কোন দেশে আছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মানা হয় না, এটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। একটা আইনের শাসনের দেশ, সবকিছু আইন অনুযায়ীই চলবে। এটাই শেখ হাসিনার সরকার।’ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে সৈয়দ আশরাফ এসব কথা বলেন।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চিন্তা করেছি-আপনাদের সঙ্গে একটা বৈঠকের প্রয়োজন। যে বিষয়গুলো আপনারা উত্থাপন করেছেন, এগুলোকে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করব। কারণ আমি এমন কোন কথা শুনিনি যে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দেয়ার পরও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এটা তো একটা ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত। এ দৃষ্টান্ত তো শেখ হাসিনার সরকারের নেই। সেজন্য আপনাদের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। এখানে একটা হলরুম ভাড়া নিয়ে আপনারা এটা করতে পারেন। যখনই আমাকে ডাকবেন, আসব। যত সময় দেয়ার প্রয়োজন ততটুকু সময় দেব। কারণ এক দেশে তো দুই ধরনের আইন থাকতে পারে না। আমাদের দেশ আইনের দেশ। এখানে আইন মানতে হবে এবং আইনকে বাস্তবায়ন করতে হবে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এর কোন বিকল্প নেই।’
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আপনারা অনেক বিষয় এখানে উপস্থাপন করেছেন, তা সরকারের বিবেচনায় নেয়া উচিত। কেন এগুলো বাস্তবায়ন হয় না? কোন কারণে এগুলো আলোর মুখ দেখে নাÑ সেগুলো আমাদের খুঁজে দেখার প্রয়োজন আছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আপনাদের সঙ্গে বসার। এটা ১৫ দিনের মধ্যেই হতে পারে। যে বিষয়গুলো আপনারা উল্লেখ করেছেন এগুলো আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা হওয়া সম্ভব। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করব, আপনি নির্দেশ দেয়ার পরও বাস্তবায়ন হয় না, তাহলে রাষ্ট্র কিভাবে চলবে?’
আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান প্রতিনিধি সভায় লিখিত বক্তব্যে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদোন্নতি না হওয়া, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বন্ধসহ পেশাগত নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে এসব ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আইডিইবির সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আইডিইবির কয়েক শ’ সদস্য প্রতিনিধি সভায় যোগ দেন।
রামপাল নিয়ে শঙ্কার পুরোটাই জ্যোতিষ শাস্ত্রনির্ভর -ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির শঙ্কার পুরোটাই জ্যোতিষ শাস্ত্রনির্ভর। সংগঠনটিকে বিজ্ঞাননির্ভর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সুন্দরবন রক্ষা করা এ কমিটির মূল উদ্দেশ্য নয়। তাদের উদ্দেশ্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সুসম্পর্ক নষ্ট করা। দেশের বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে প্রতিবেশী দেশের (ভারত) দূতাবাস অভিমুখে তাদের নতুন কর্মসূচীই এটা প্রমাণ করেছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের এক আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রকল্প নিয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে দেশের বরেণ্য সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন। তাদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ নিয়ে সব শঙ্কা দূর করেছেন।
আলোচনা সভায় সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধীর কোন পরিচয় নেই। সে যে দলেরই হোক তার পরিচয় সে অপরাধী। তাকে শাস্তি পেতেই হবে। চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেনÑ সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, এম এ করিম প্রমুখ।
