ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শারদীয় সাজে

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শারদীয় সাজে

শরত শেষ। এখন হেমন্তকাল। তবে এখনও ফুরিয়ে যায়নি শরতের সিগ্ধতা। এখনও আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াচ্ছে, এখনও ফুটছে শিউলি। এ রকম প্রকৃতিতে লেগেছে উৎসবের ছোঁয়া। মন্দিরে কাঁসর ঘণ্টা বেজে উঠলে তালে তালে মাথা দোলাচ্ছে কাশ ফুলের দল। আশপাশে ঢাক গুড়গুড় শব্দে বেজে ওঠে ঢাকের বাদ্য। এমন আয়োজন মনে করিয়ে দেয়, পূজা এসেছে। অন্য সময়ের সাজের চেয়ে একটু যেন ভিন্ন হয় পূজার সাজ। এক কথায় পূজার আমেজ ধরা পড়ে সাজে। শারদীয় দুর্গাপূজার ষষ্ঠী থেকে দশমী। পাঁচটা দিন। সময়টা যেহেতু বেশি তাই নিজেকেও বেশি আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী, ক্লাসিক্যাল যে কোনভাবে সাজিয়ে তোলা যাবে। তবে সাজতে হবে নিজের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, রুচি ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে। একেক দিন একেকটি রঙে সাজতে পারেন। পাঁচ দিন সাজবেন ভিন্ন ধরনের সাজ। তবে এর মধ্যে আবার রাত-দিনের তফাতটাও মনে রাখতে হবে। মনে রাখবেন, শাড়ি ছাড়া চলবে না। পূজা মানেই শাড়ির সাজ। ষষ্ঠী ও সপ্তমীতে একটু হালকা সাজ মানানসই। অষ্টমী ও নবমীর রাতের সাজটা জমকালো হয় সাধারণত। এ দুটো দিন একটু ভারি কাজ করা শাড়ি পরা যেতে পারে। চাইলে লম্বা কাটের কামিজও পরতে পারেন। বয়স ভেদে টাইটস কিংবা পালাজ্জো দিয়েও মানাবে ভাল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় পোশাক-আশাক, সাজসজ্জার ধরন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের সময়ে ঠাকুরবাড়িতে যে পূজা হতো, তাতে সাজসজ্জার ধরন ছিল যথেষ্ট আধুনিক। আর তাই আজও পূজার সাজ-পোশাকে ঠাকুরবাড়ির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। লাল, সোনালি, কোড়া রঙের জামদানি শাড়ির এক প্যাঁচে বা খোলা আঁচলের স্টাইলে শাড়ি পরেও অনায়াসে আনা যেতে পারে ঠাকুরবাড়ির সাজসজ্জার ছোঁয়া। তবে ব্লাউজগুলো একটু লম্বা হাত দিয়ে বানিয়ে তাতে লেস ব্যবহার করলে আরও বেশি আসবে রাবীন্দ্রিক ঢং। এতো গেল পোশাকের কথা। এবার সাজের বিষয়ে আসি। পূজায় দিনের সাজটা হালকা হলেই ভাল। এ সময় ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে হালকা ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। এর ওপরে আলতো করে পাউডার এবং সামান্য বেজ কম্প্যাক্ট বুলিয়ে নিন। চোখের পুরোটা পাতায় আইশ্যাডো লাগান। চোখের ওপরের পাতায় আইলাইনার দিয়ে লাইন টেনে নিন। দুই গালে ব্লাসন লাগিয়ে নিন। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লিপস্টিক বা লিপস্টিকের বদলে লাগান লিপগ্লস। রাতে বাইরে যাওয়ার সময় জমকালো সাজেই ভাল লাগবে। বেছে নিতে পারেন চওড়া পাড়ের কাতান শাড়ি। সঙ্গে সোনা বা রুপার গহনা ও হাতভর্তি চুড়ি। রাতে সাজার আগে মুখ ক্লিন করে টোনিং করে নিন। ওয়াটার বেজড্ ফাউন্ডেশন ভালভাবে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগিয়ে ভাল করে ম্যাসাজ করে নিন। এর ওপরে কম্প্যাক্ট পাউডার দিন। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে চোখে গাঢ় রঙের শ্যাডো লাগান। চোখের নিচে কাজল দিন। চোখের ওপরের পাতায় আইলাইনার দিয়ে মোটা করে লাইন টেনে নিন। দুবার করে মাশকারা লাগাতে পারেন। ঠোঁট এঁকে গাঢ় রঙের লিপস্টিক লাগিয়ে নিন। শাড়ি পরলে মানানসই টিপ লাগিয়ে নিলে আরও মানাবে ভাল। পূজার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পোশাকের ধরনের সঙ্গে মিলিয়ে হওয়া চাই চুলের সাজ। অষ্টমীর অঞ্জলি দেয়ার সময় শাড়ির সঙ্গে মানাবে ঘাড়ের কাছে আলগা হাতখোঁপা। কিন্তু খোঁপায় যদি সাদা রঙের গাজরার মালা বা বেলি ফুলের মালা না থাকে, তাহলে পুরো সাজটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আবার নবমী ও দশমীর দিনে বা রাতের পার্টিতে গর্জিয়াস কাতান শাড়ি যদি পরেন, তার সঙ্গে চুলে হালকা কার্ল বা খোঁপাও করে নিতে পারেন। পূজা দেখার সময় অনেক হাঁটতে হয়, তাই সাজের সঙ্গে মিলিয়ে আরামদায়ক স্যান্ডেল পরুন। আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। আগে থেকেই উৎসবের সব প্রস্তুতি সেরে নিন। আর সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন সাজে হয়ে উঠুন অপরূপা।
×