ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ডিএনএতে ধরা পড়ল ইতিহাসের হারানো ধ্বনি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৯, ৩ জুলাই ২০২৫

ডিএনএতে ধরা পড়ল ইতিহাসের হারানো ধ্বনি

ছবি: সংগৃহীত

৪,৫০০ বছর আগের এক প্রাচীন মিসরীয় কুমারের জীবনের জটিল ইতিহাস ও শারীরিক বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করেছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল গবেষক। নীল নদের পাড়ে গিজার পিরামিড নির্মাণকালীন সময়কার এই ব্যক্তির জীবনের গল্প আজ উঠে এসেছে আধুনিক বিজ্ঞান ও ডিএনএ বিশ্লেষণের কল্যাণে।

“নেচার” জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় প্রথমবারের মতো একটি প্রাচীন মিসরীয় ব্যক্তির সম্পূর্ণ জিনগত গঠন উন্মোচন করা হয়েছে। এটি মিসরের প্রাচীন ইতিহাসে ডিএনএ গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

কায়রোর দক্ষিণে নুওয়েরাত নামের এক গ্রামে মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছিল একটি সেলামিক পাত্রে, পাহাড় খুঁড়ে তৈরি কবরের মধ্যে। এমন কবরের ধরন ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য আদর্শ, কারণ এটি মমির মতো রাসায়নিক ব্যবস্থার অভাবে দূষিত হয়নি।

এই ব্যক্তি ছিলেন ১.৬ মিটার লম্বা, চোখ ও চুল ছিল বাদামি। তার হাড় বিশ্লেষণে দেখা যায় তিনি জীবনভর কুমার কাজ করতেন। সিট বোন বড় ছিল, ডান পায়ে আর্থরাইটিস ছিল এবং হাতের গঠনে ছিল ঘূর্ণন কর্মের প্রভাব—সবই কুমারের চিহ্ন।

এই কুমারের ৮০% পূর্বপুরুষ ছিলেন উত্তর আফ্রিকা থেকে, আর ২০% মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন ‘ফার্টাইল ক্রিসেন্ট’ অঞ্চল থেকে, যেখানে প্রথম কৃষিভিত্তিক সমাজ গড়ে উঠেছিল।

এই গবেষণা প্রমাণ করে, খ্রিস্টপূর্ব ২৮৫৫-২৫৭০ সালের মধ্যেই মিশরে বাইরের জনগোষ্ঠীর আগমন ও মিশ্রণ শুরু হয়েছিল। পূর্বে এই তথ্য শুধু প্রত্নতাত্ত্বিক সাক্ষ্যে সীমিত ছিল, এবার জিনগত প্রমাণও পাওয়া গেল।

অত্যাধুনিক কবর ও ভালো সংরক্ষণ বুঝিয়ে দেয়, হয়তো তিনি তার দক্ষতার জন্য সমাজে সম্মানিত ছিলেন। সে সময় একজন কুমারের জন্য এমন কবর বিরল ছিল।

হার্ভার্ডের জেনেটিক গবেষক ইয়োসিফ লাজারিদিস বলেন, “এই প্রথমবার প্রাচীন মিসরের জিনতাত্ত্বিক ইতিহাস সত্যিকারের অর্থে লেখা শুরু হলো।”

গবেষকরা জানান, এই প্রকল্প ভবিষ্যতে আরও বহু ব্যক্তির জিন বিশ্লেষণ করে মিসরে জনসংখ্যা ও অভিবাসনের পূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরার পথ খুলে দেবে।

মুমু ২

×