ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষ্ণাদের লক্ষ্য এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কৃষ্ণাদের লক্ষ্য এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে দেরিতে হলেও মূল্যায়িত, সংবর্ধিত এবং আর্থিকভাবে পুরস্কৃত হতে যাচ্ছে কৃষ্ণা-সানজিদা-আনুচিংরা। বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা এই সোনার কিশোরীরা অবশেষে তাদের কীর্তিগাথার জন্য স্মরণীয় ও বরণীয় হতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের অভিভাবক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আজ একটি জরুরী সভা ডেকেছে। সেই সভা শেষে জানা যাবে কবে, কখন এবং কোথায় বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সংশ্লিষ্টদের জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে সংর্বধনা দেয়া হবে (যদিও আগে বলা হয়েছিল সংবর্ধনার প্রাথমিক তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর)। এদিকে অনুর্ধ-১৬ দলের ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের ৯ ফুটবলারের লোকাল বাসে গ্রামের বাড়ি যাওয়া, বাসে খেলোয়াড়দের ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়া, ... এসব ঘটনায় বাফুফের প্রতি যে সমালোচনা হয়েছে, তা নিয়ে আজ নিজেদের অবস্থানও ব্যাখ্যা করার কথা রয়েছে বাফুফের। ইতোমধ্যেই কৃষ্ণা-সানজিদাদের সংর্বধনার মাধ্যমে অর্থ পুরস্কার দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), ওয়ালটন এবং সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টস লিমিটেড (এসজিএস)। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএফসি অ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে ‘সি’ গ্রুপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলে এই আসরের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে, যা আগে কখনই করে দেখাতে পারেনি তারা। মূলপর্বের আসর ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হবে থাইল্যান্ডে। খেলা শেষে ঈদের ছুটি কাটাতে গ্রামের বাড়িতে প্রিয়জন-পরিবারের সান্নিধ্যে চলে যায় কৃষ্ণারা। আজই তাদের ফেরার কথা রয়েছে ঢাকায়। কলসিন্দুরের নয় ফুটবলারকে লোকাল বাসে পাঠানো এবং সঙ্গে কোন অভিভাবক না নিয়ে বাফুফে যে ভুল করেছিল, তারই প্রায়শ্চিত্ত তারা করবে ওই মেয়েদের আলাদা ও ভাড়া করা মাইক্রোবাসের মাধ্যমে ঢাকা ফিরিয়ে এনে। এমনটাই জানা গেছে বাফুফে সূত্রে। কৃষ্ণারা এবার গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে মোট গোল করেছে ২৬। অথচ ৫ খেলায় তারা গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে এর দ্বিগুণ। কেন তাদের এমন সমস্যা? ফিনিশিংয়ের কেন তাড়াহুড়া? বক্সে ঢুকে কেন এলোমেলো শুটিং? কেন খেই হারিয়ে ফেলা? ‘আসলে দোষটা মেয়েদের না। দোষটা বাফুফের। এই আসরটিতে খেলার আগে বাফুফে মেয়েদের কোন বিদেশী দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলার ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি। এ জন্যই মেয়েদের সাফল্য সত্ত্বেও এতগুলো ভুল হয়েছে। অকপট স্বীকারোক্তি বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের। তিনি আরও জানান, আগামী সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর অনুষ্ঠিত হবে ভারতে, আগামী নবেম্বরে। পরের বছর অনুর্ধ-১৬ মহিলা দল খেলবে এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বে। এখন তাদের লক্ষ্য এই দুটো আসরে ভাল খেলা। এজন্য দলের উন্নতির জন্য শুক্রবারের বাফুফের মিটিংয়ে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ বা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। সেগুলো কি? বিস্তারিত বলতে না চাইলেও সালাউদ্দিন ইঙ্গিত দেনÑ সফল বিধায় মহিলা দলের কোচ হিসেবে গোলাম রব্বানী ছোটনকেই রাখা হবে। তবে এর সঙ্গে চারটি জিনিস যুক্ত করে দেয়া। সেটা হলো একজন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর, একজন মহিলা ফিজি থেরাপিস্ট এবং একজন ফুড নিউট্রিশিয়ান এবং একজন গোলরক্ষক কোচ। ‘আশা করি যে পদক্ষেপ নেব, তাতে সবাই সন্তুষ্ট হবেন।’ সালাউদ্দিনের মন্তব্য। এএফসি অ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য এটা একটা বড় ধরনের সুযোগ নিজেদের মেলে ধরা। এটা একটা চ্যালেঞ্জও বটে। যদিও লাওস ছাড়া বাকি সাত দলই শক্তির বিচারে আমাদের চেয়ে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে, কিন্তু আমরা যদি সঠিকভাবে ও সব ধরনের দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নিয়ে অংশ নিই, তাহলে রেজাল্ট আশা করি মন্দ হবে না।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১০ ও ২০১৪ সালে সেমিফাইনাল খেলে, এছাড়া সাউথ এশিয়ান গেমসে ২০১০ সালে করায়ত্ত করে তাম্রপদক। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নেপালে এবং ২০১৬ সালে মেতে ‘এফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা চ্যাম্পিয়নশিপ’-এর শিরোপা জেতে। আর এবার গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উন্নীত হলো এএফসি অ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বে। প্রতিবারই দলের কোচ ছিলেন ছোটন।
×