ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গুলশান বনানীতে বিদেশীদের জন্য নিরাপত্তা জোরদার করছে ডিএনসিসির

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ১৬ জুলাই ২০১৬

গুলশান বনানীতে বিদেশীদের জন্য নিরাপত্তা জোরদার করছে ডিএনসিসির

মশিউর রহমান খান ॥ রাজধানীর গুলশান বনানী এলাকায় বসবাসরত বিদেশীদের নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় করতে ও বিদেশীদের পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিকভাবে বিচরণের পরিবেশ সৃষ্টি করতে কাজ শুরু করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। এছাড়া গুলশানের কূটনৈতিক জোনে প্রবেশের পথ বর্তমানের তুলনায় কমাতে ও বসবাসকারী বিদেশীদের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা প্রদানে কয়েকটি এলাকার নিরাপত্তায় বিঘœ ঘটবে এমন কয়েকটি পথ স্থায়ীভাবে বন্ধেরও চিন্তা করছে সেবাদানকারী এ সংস্থাটি। রবিবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পুলিশ ও নাগরিদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠক করবে ডিএনসিসি। বৈঠকেই সংস্থাটির পক্ষ থেকে সহযোগিতার জন্য নাগরিক ও পুলিশকে এ সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানা গেছে। স্থানীয় কমিউনিটির লোকজন, পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উদ্যোগ ও সরকারের বিভিন্ন নির্দেশনা সমন্বয় করে গুলশানের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হবে ও বাস্তবায়ন করা হবে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে উক্ত এলাকায় বসবাসরত নাগরিকগণ ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আনিসুল হক। শুক্রবার মেয়র গুলশানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করেন। এ সময় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় নাগরিকদের সমন্বয়ে বিদেশীদের নির্বিঘেœ চলাচলের পরিবেশ কিভাবে তৈরি করা যায় সে ব্যাপারে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। তিনি গুলশান-১ ও ২ নম্বরের বিভিন্ন গলি ও মহল্লা ঘুরে দেখেন। এ সময় পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ তার সঙ্গে ছিলেন। আনিসুল হক গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তুরার পাশের লেক, কূটনীতিক পাড়া, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সড়কসহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল এলাকার নিরাপত্তা তদারকি করেন। ডিএনসিসি মেয়র জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা গুলশান বনানী এলাকায় বিশেষ করে প্রাথমিকভাবে গুলশানের যেসব এলাকায় বিদেশী নাগরিকগণ সবচেয়ে বেশি বসবাস করেন সেসব এলাকায় স্থানীয় নাগরিকগণের সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশের সহযোগিতায় সবসময়ের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রাখতে উদ্যোগ নিচ্ছি। এছাড়া রাজধানীতে বসবাসকারীদের গুলশান এলাকায় প্রবেশপথে কোন সমস্যায় যেন পড়তে না হয় সে লক্ষ্যে চেকপোস্ট বর্তমানের তুলনায় আরও কমান যায় কি না তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। মূলত গুলশান এলাকার কয়েকটি পথে রিক্সা চলাচলসহ যান চলাচলে শৃঙ্খলা আনা হবে। প্রাথমিকভাবে গুলশান এক নম্বর গোল চক্কর থেকে বাঁ-দিকের রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও সীমিত করতে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক সিস্টেমেও প্রয়োজনে পরিবর্তন করা হবে। মূলত আমরা চাই বিদেশী নাগরিকগণ আমাদের দেশে নির্বিঘেœ চলাচল করুক। এরই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে গুলশান বারিধারা বনানী এলাকার স্থানীয় লোকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে সমস্ত উত্তর সিটিকে এ ধরনের নিরাপত্তার আওতায় আনা হবে। নাগরিক, পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশন সমন্বয় করে গুলশানের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নিরপত্তা প্রদানের অন্যতম সহযোগী হবেন গুলশান বনানী এলাকায় বসবাসকারীরা। আগামীকাল নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পুলিশ ও নাগরিদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকেই এ সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হবে। এদিকে, গুলশানের নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ডিএনসিসির উদ্যোগে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৬শ’ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে আরও হাজারখানেক সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে ডিএনসিসির। উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশানের আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গীরা। এ সময় তারা ১৭ জন বিদেশী, দুই বাংলাদেশী ও একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে হত্যা করে। এরপর থেকেই বিদেশীদের নিরাপত্তা প্রদানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে ডিএনসিসি।
×