ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুনীল গোমেজ হত্যা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৭ জুন ২০১৬

সুনীল গোমেজ হত্যা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৬ জুন ॥ জেলার বড়াইগ্রামের বনপাড়া খ্রীস্টানপল্লীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত সুনীল ড্যানিয়েল গোমেজ হত্যাকা-ের ঘটনায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের একমাত্র কন্যা স্বপ্না গোমেজ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকা-ের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার রাতেই সুনীল গোমেজের বাসার ভাড়াটে সবুজ আলী নামের এক ট্রাক ড্রাইভারকে আটক করে পুলিশ। পরে ঐ রাতেই জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে এনে সবুজকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ডিবি পুলিশ পাঁচ দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করে। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে মামলার তদন্ত কাজে জেলা ডিবি পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ঢাকা থেকে দুই সদস্যের একটি টিম নাটোর পৌঁছেছে। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, সুনীল গোমেজ হত্যাকা- ক্লুলেস। তাছাড়া হত্যাকা-ের সঙ্গে চাঁদাবাজি বা অন্য কোন বিষয় জড়িত আছে কিনা সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে শীঘ্রই এ লোমহর্ষক হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) জানান, সুনীল ড্যানিয়েল গোমেজ হত্যাকা-টি একেবারেই ক্লুবিহীন। তদন্তে কোন ক্লু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও মামলাটির রহস্য উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই মামলার রহস্যজট খুলে যাবে। রবিবার সকালে বনপাড়া খ্রীস্টানপল্লীর চার্চে সাপ্তাহিক প্রার্থনা শেষে খুন হন সুনীল গোমেজ। এর আগে রবিবার রাতেই নিহত সুনীল গোমজের মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোমবার সকালে পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করেছে। সোমবার বিকেল ৪টায় বনপাড়া চার্চে প্রার্থনা শেষে সুনীল গোমেজকে স্থানীয় খ্রীস্টান সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত করা হয়। ময়নাতদন্তের বিষয়ে নাটোর সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই সুনীল গোমেজের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া সুনীল গোমেজের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের কারণে তার রগ কেটে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যার কারণে খুব দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। এদিকে সুনীল হত্যাকা-ের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বনপাড়া খ্রীস্টানপল্লীর বাসিন্দারা। এ বিষয়ে বনপাড়া ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত বিকাশ রিবেরু বলেন, হত্যাকা-ের এখন পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই প্রশাসনের। কারা কেন সুনীল গোমেজের মতো একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করল সেটা জানার বিষয়। আশা করছি প্রশাসন আন্তরিক হয়ে হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করবে। তিনি আরও জানান, সুনীল হত্যাকা-ের পর ধর্মপল্লীর লোকজন আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে।
×