ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

হবিগঞ্জের সাবেক মুসলিম লীগ নেতা লিয়াকত আলীর জামিন খারিজ

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৫ মার্চ ২০১৬

হবিগঞ্জের সাবেক মুসলিম লীগ নেতা লিয়াকত আলীর জামিন খারিজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক মুসলীম লীগ নেতা লিয়াকত আলীর জামিন খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ পলাতক ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ আগামী ১৯ এপ্রিল। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। লিয়াকত আলীর জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। লিয়াকত আলীসহ দুই রাজাকারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো ৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে। হবিগঞ্জের হিন্দু অধ্যুষিত তিনটি গ্রামের মধ্যে একটি গ্রামের কোন চিহ্ন নেই। একটি গ্রামের ১৪ থেকে ৩৫ বছরের হিন্দু যুবকদের হত্যা করা হয়েছে। হিন্দু এলাকা ছাড়াও সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এই দুই রাজাকারের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলেও তারা হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অপরাধ করেছে। এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ পলাতক ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ আগামী ১৯ এপ্রিল। গতকাল এ বিষয়ে আদালতের আদেশ দেয়ার কথা থাকলেও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ এ দিন নির্ধারণ করে দেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে এ বিষয়ে শুনানি করেন, প্রসিকিউটর আব্দুর রহমান হাওলাদার ও সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার অন্য ৬ আসামি হলেনÑ আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ, মোঃ রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু, মোঃ আবদুল লতিফ, আবু মুসলেম মোঃ আলী, মোঃ নাজমূল হুদা ও মোঃ আব্দুর রহিম মিয়া। এই ছয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ৩(১), ৪(১) ও ৪(২) ধারা অনুসারে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেÑ ১৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ১৫ জনকে হত্যা-গণহত্যা ও তাদের মরদেহ গুম, ৩ জনকে আটক ও অপহরণ করে নির্যাতন এবং তাদের বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বর্তমান গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তারা অপরাধগুলো সংঘটিত করে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ৬ খ-ে ৮৭৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ, দলিল ও ডকুমেন্টস রয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেড এম আলতাফুর রহমান ও হেলাল উদ্দিন ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন। ঘটনার ২৫ জন ও জব্দ তালিকার ৩ জনসহ মোট ২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
×