স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৩তম সাক্ষী মোঃ মজিদ মোড়ল তার জবানবন্দীতে বলেছেন, আসামি সাখাওয়াতের নির্দেশে রাজাকাররা আমার ভাই মোঃ মজিদ মোড়লকে চিংড়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ২০ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালূম, প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা চমন। আর আসামি পক্ষে ছিলেন সাত্তার পালোয়ান ও আব্দুস শুকুর।
সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ মজিদ মোড়ল। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৭২ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- চিংড়া, থানা- কেশবপুর, জেলা- যশোর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি কৃষিকাজ করতাম। আমি বর্তমানেও কৃষিকাজ করি। ১৯৭১ সালে আমরা ৯ ভাই ও তিন বোন ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার ভাই নুরউদ্দিন মোড়ল ভারতে গিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে। একাত্তরের ২৮ আশ্বিন সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে কয়েকজন রাজাকার আমাদের বাড়িতে আসে। তখন আমি ও আমার ভাই নুরউদ্দিন মোড়ল বাড়িতেই ছিলাম। রাজাকাররা আমাদের বাড়িতে এসে ভাই নুরউদ্দিন মোড়লকে ধরে ফেলে। আমি ভয়ে বাড়ির আড়ালে লুকিয়ে পড়ি। আমি লুকিয়ে দেখতে পাই, আসামি মোঃ মুজিবুর রহমান ও মোঃ বিল্লাল হোসেন বিল্লাল এবং আকরাম হোসেনসহ আরও কয়েক রাজাকার আমার ভাই নুরউদ্দিন মোড়লকে ধরে চিংড়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি জবানবন্দীতে আরও বলেন, ওইদিন দুপুরে আমার ভাইকে দেখার জন্য চিংড়া রাজাকার ক্যাম্পে আসি। আমি ক্যাম্পে এসে জানালা দিয়ে দেখতে পাই যে, আমার ভাই নুরউদ্দিন মোড়ল উক্ত স্কুলের ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আমার ভাইকে আহত অবস্থায় দেখে আমি কান্নাকাটি করতে থাকলে রাজাকাররা আমাকে রাইফেল দিয়ে গুতো মেরে রাজাকার ক্যাম্প থেকে বের করে দিলে আমি বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে এসে ওই ঘটনা বাবা মাকে বলি। আমার আত্মীয়স্বজন রাজাকার কমান্ডার আমিন উদ্দিন মাস্টারের কাছে নিয়ে যায়। অনেক দেন দরবার করার পর আমার ভাইকে রাজাকাররা ছেড়ে দেয়। বাড়িতে এসে নির্যাতনের কথা বর্ণনা করে।