ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রেজা নওফল হায়দার

উন্নত প্রযুক্তির ট্র্যাকিং সার্ভিস

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

উন্নত প্রযুক্তির ট্র্যাকিং সার্ভিস

লাভলু সাহেবের ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা, কয়েকটা কাভার্ডভ্যানের মালিক তিনি। এই তো কিছুদিন আগে তার একটি কাভার্ডভ্যান গাড়ি ছিনতাই চক্রের হাতে পড়ে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল গার্মেন্টস পণ্যবোঝাই করা ট্রাকটি। কুমিল্লায় ড্রাইভার আর হেল্পার খাবার খেতে নামলে ঘটে গেল ঘটনা। ড্রাইভার আর হেল্পারকে ফোন দিয়ে না পেয়ে তিনি বিচলিত হয়ে যান। কিন্তু ভাবনা আর ভয় কিছুক্ষণের মধ্যে উধাও তার মন থেকে। কারণ তার ওই গাড়িতে ইন্সটল করা ছিল ফাইনডার ভেহিকেল ট্র্যাকিং ডিভাইস। তিনি ফোন দেন তাদের কাস্টমার কেয়ার বিভাগে। কেয়ার সার্ভিস সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিগত সহায়তায় বের করে ফেলল লোকেশন, গাড়ির গতি ও বর্তমান অবস্থান। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে জানানো হয়। দেয়া সব ডেটা। বিদেশী প্রযুক্তিসম্পন্ন সিনেমার মতো ট্র্যাকিং ডিভাইস দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় গাড়ির ইঞ্জিন। পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার করে গাড়ি ছিনতাইকারীদের। এভাবেই ফাইন্ডার ভেহিকেল ট্র্যাকিং কাজ করে চলেছে গাড়ির নিরাপত্তায়। সম্প্রতি আইটি ডট কমের সঙ্গে কথা হয় ফাইন্ডারের ডিরেক্টর ও চিফ অপারেটিভ অফিসার সাখাওয়াত সোবাহানের সঙ্গে। ফাইন্ডার মূলত মোনিকো টেকনোলজির একটি সার্ভিস, যা ২০০৯ থেকে সেবা দিয়ে আসছে। ফাইন্ডারের সবকিছুই নিজস্ব, ট্র্যাকিং ডিভাইস থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট, সমগ্র বাংলাদেশের ম্যাপ, মোবাইল এ্যাপ সবই নিজেদের ডেভেলপ করা জানালেন তিনি। এই সেবাটির জন্য একটি ট্র্যাকিং ডিভাইস ইন্সটল করতে হয়। ডিভাইসটিতে একটি মোবাইল সিম থাকে, যা জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অবস্থান আপডেট করতে থাকে ফাইন্ডার সার্ভারে। ব্যবহারকারীরা ফাইন্ডার ওয়েবসাইট (িি.িভরহফবৎ-ষনং.পড়স) অথবা মোবাইল এ্যাপ থেকে তার গাড়ির অবস্থান, গতি, অতিক্রান্ত দূরত্বসহ আরও নানা ধরনের ফিচার আপডেট জানতে পারেন। শুধু তাই না, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে অথবা পুশ পুল এসএমএসের মাধ্যমেও পাওয়া যায় এসব ধরনের সেবাগুলো। যে কোন ধরনের গাড়ির পাশাপাশি মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, বাস, ট্রাক, সিএনজি অটোরিক্সা এমনকি নৌযানেও ব্যবহার করা যায় এই ডিভাইস। সাখাওয়াত সাহেব জনকণ্ঠকে জানান, শুধু চোরাই গাড়ি উদ্ধার-ই এই ট্র্যাকিং সার্ভিস ব্যবহারের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, গাড়ির নিরাপত্তার পাশাপাশি এই সার্ভিস নিশ্চিত করে, গাড়ির সঠিক ব্যবস্থাপনাও। ব্যবহারকারী খুব সহজেই এই সার্ভিসের মাধ্যমে দেখতে পারবেন ড্রাইভারের সারাদিনের কার্যক্রম, এমনকিই ইচ্ছে হলে কল দিয়ে শুনতেও পারবেন গাড়ির ভেতরের কথাবার্তাও। এ ছাড়াও আছে জিও-ফেন্সের সুবিধা যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকায় (যা ব্যবহারকারী নিজেই এঁকে দিতে পারেন) ঢুকলে বা বের হলে সঙ্গে নোটিফিকেশন চলে যায় ব্যবহারকারীর কাছে। তিনি মনে করেন আফটার সেলস সার্ভিস এই সেবার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সেবা নিশ্চিত করতে ফাইন্ডারের ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও যশোর এ রয়েছে নিজস্ব অফিস। এছাড়া মোবাইল টেকনিশিয়ান টিম আছে সারাদেশে সার্ভিস দেয়ার জন্য। তিনি আরও জানান, প্রথমদিকে কাস্টমারদের সার্ভিস সম্পর্কে ধারণা দেয়া বেশ কঠিনই ছিল। তবে এখন সবাই এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত এবং প্রায় সব কর্পোরেট অফিসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারকারীরাও আগ্রহী এই ট্র্যাকিং সেবা নিতে। গত দুই মাসে প্রায় ৬টি গাড়ি, মোটরবাইক ও মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে এই ট্রাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে। ধরা পড়েছে ছিনতাইকারী চক্র। আরও নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করার মাধ্যমে দেশের কাস্টমারদের আরও বেশিকিছু দেয়ার স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে ফাইন্ডার।
×