ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিক সজিবের দ্বিতীয় স্ত্রী মুনিয়া র‌্যাবের হাতে আটক

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫

সাংবাদিক সজিবের দ্বিতীয় স্ত্রী মুনিয়া র‌্যাবের হাতে আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিহত সাংবাদিক আওরঙ্গজেব সজিবের দ্বিতীয় স্ত্রী অঞ্জনা মুনিয়াকে (৩০) বৃহস্পতিবার মিরপুর থেকে আটক করেছে র‌্যাব। রাতে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মেজর মাকসুদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল দশটার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে ধলেশ্বরীতে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন সাংবাদিক সজিব। তিনদিন পর বুধবার মুন্সিগঞ্জের মুক্তাপুর এলাকার ধলেশ্বরী থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, গত ৪ ডিসেম্বর মুনিয়াকে বিয়ে করেন সজিব। পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের সঙ্গে মিরপুরের শেওড়াপাড়ার বাসায় থাকেন মুনিয়া। র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি সূত্র জানায়, ‘সজিব মুনিয়াকে বিয়ে করেছিলেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।’ অন্যদিকে, সজিবের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই করে নৌ-পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে সজিবের মোবাইল ফোনে রহস্যজনক কয়েকটি কল আছে। বিশেষ করে নিখোঁজের দিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তার মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত এক তরুণী কল করে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওই কলটি করেছিলেন সজিবের দ্বিতীয় স্ত্রী মুনিয়া।’ কিন্তু সজিবের দ্বিতীয় বিয়ের খবর জানতেন না তার পরিবার এবং সহকর্মীরা। মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই সজিবের প্রথম স্ত্রী মোর্শেদা বেগম নিশি দাবি করে আসছেন, তার স্বামী আত্মহত্যা করতে পারেন না। লঞ্চ থেকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক সজিবের লাশ দাফন সম্পন্ন স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ সাংবাদিক আওরঙ্গজেব সজিবের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাদ আসর প্রথমে ঢাকার চকবাজার মসজিদ ও পরে তার কর্মস্থল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জানাজা শেষে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরিবার, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষ এ সময় তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এর আগে বুধবার রাতে সজিবের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। সকালে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রাজিন বলেন, সজিব ভাইয়ের মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করতে হবে। এ ব্যাপারে আমি সকলের সহযোগিতা চাই। ভাইয়ের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে হবে। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি ইউনুচ আলী জানান, সজিবের লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা সকল আলামত সংগ্রহ করছি। এখনই বলা যাচ্ছে না এটি হত্যা না আত্মহত্যা। তদন্ত শেষে সকল বিষয় স্পষ্ট হবে। উল্লেখ্য, গত রবিবার বেলা বারোটার দিকে ‘তাকওয়া’ লঞ্চে ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুর যাবার পথে লঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বিটের রিপোর্টার আওরঙ্গজেব সজিব নিখোঁজ হন। তিনদিন পর মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁওয়ে প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের পাশে ধলেশ্বরী নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পলিশ। সে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের খাসকান্দি গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের পুত্র। ঢাকার চকবাজারে তাদের বাড়ি রয়েছে। সেখানেই বসবাস করছিলেন। সজিব বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়শনের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিন, সময় টিভি, ইন্ডিপেন্ডেট টিভি, বাংলাভিশন, অনলাইন পোর্টাল বাংলামেল ২৪.কম ও দৈনিক ভোরের ডাকসহ বেশ ক’টি গণমাধ্যমে কাজ করতেন।
×