ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রীনলাইফ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

পয়সার অভাবে বিনা চিকিৎসায় কেউ ফিরে যায় না

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩০ আগস্ট ২০১৫

পয়সার অভাবে বিনা চিকিৎসায় কেউ ফিরে যায় না

নিখিল মানখিন ॥ ডায়াবেটিসসহ বেশ কয়েকটি জটিল রোগে ভুগছেন মনোয়ারা বেগম (৫৬)। অতিদরিদ্র পরিবারের সদস্য। টাকার অভাবে সঠিক সময়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেননি। চিকিৎসাহীন ছিলেন অনেক দিন। শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি ঘটে। অবশেষে তিনি আশ্রয় পেলেন দেশের অন্যতম একটি স্বনামধন্য বেসরকারী হাসপাতালে। এখানে প্রায় ৮ দিন ধরে উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন তিনি। শারীরিক অবস্থাও উন্নতির দিকে। ওষুধ ছাড়া চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মনোয়ারা বেগমের মতো এভাবে আরও অনেক রোগী এ হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ২০ দরিদ্র রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসাধীন আছেন। এই বেসরকারী হাসপাতালে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৪০ ফ্রি বেড। রাজধানীর গ্রীনরোডে গড়ে ওঠা এই হাসপাতালটির নাম ‘গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল’। শুধু বিনামূল্যে চিকিৎসার ক্ষেত্রে নয়, স্বল্প খরচে অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে অল্প সময়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে এই হাসপাতাল। ‘পয়সার অভাবে কেউ চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে ফিরে যাবে না’Ñএটি আমাদের নীতি বলে জানাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে সরেজমিন ঘুরেও এই নীতির বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া গেছে। এই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন ৬০ কনসালটেন্ট ও ৪৮ মেডিক্যাল অফিসার। থাকার প্রয়োজন না হলে বাড়তি মুনাফা লাভের জন্য কোন রোগীকেই এক ঘণ্টার জন্যও হাসপাতালে রাখা হয় না বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মূল গেটের ভেতরে প্রবেশ করেই খুঁজে পেলাম ব্যতিক্রমী পরিবেশ। খোলামেলা জায়গা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী। বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা রয়েছে সিসি ক্যামেরা। মূল ভবনের নিচতলায় পৌঁছে পেলাম আরেক ধাপ উন্নত পরিবেশ। আগতদের তথ্য প্রদানের দায়িত্বে আছেন পাঁচ কর্মচারী। অভ্যর্থনা কক্ষের সামনে বড় আয়তনের খোলা জায়গা। যেন অনেকটা খেলার মাঠ। হাসপাতালে আগতদের বসার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। পুরো ভবনটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ফলোআপ করাতে এসেছেন সুরভি হালদার (৪৩) নামে এক রোগী। এসেছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে। মাথার সমস্যায় ভুগছেন তিনি। কয়েক সপ্তাহ আগে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। অপারেশন হয়েছে তার। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, চিকিৎসক আর নার্সদের নিবিড় পরিচর্যায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চেকআপ করাতে এসেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা এবং পরিবেশে তিনি মুগ্ধ । তিনি বললেন, এমন জানলে আরও আগেই তিনি আসতেন। এখানে আসার আগে তিনি অনেক হাসপাতালে গিয়ে টাকা ও সময় নষ্ট করেছেন। বাংলাদেশেও স্বল্প খরচে এত পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক সেবা পাওয়া যায়, তা কখনও বুঝতে পারেননি বলে জানান সুরভি হালদার। হাসপাতালটিকে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় একটি বড় মাইলফলক বলে মনে করেন রামপুরা বনশ্রীর বাসিন্দা আকরাম আহমেদ (৫১)। নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের সিরিয়াল পেয়েছেন তিনি। নিচতলায় বসে তিনি তার এক ভাগ্নের (রোগী) জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত হলেন দেশের প্রখ্যাত নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ। অনেক কষ্টে সিরিয়াল পেয়েছেন। এর আগে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে একবার এসেই নিজের কানের সমস্যা দূর হয়েছিল বলে জানান আকরাম আহমেদ। এবার চতুর্থ তলায় অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের চেম্বারের সামনে উপস্থিত হলাম। তখন বিকেল সাড়ে ৫টা। কক্ষের সামনে অপেক্ষমাণ অনেক রোগী। তবে পর্যাপ্ত বসার জায়গা থাকায় কোন অসুবিধা হচ্ছে না বলে জানালেন অপেক্ষমাণ রোগী ও তাদের অভিভাবকরা। অনুমতি নিয়ে অধ্যাপকের কক্ষে ঢুকলাম। রোগী দেখছেন অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। দেয়ালে বড় করে টাঙানো রয়েছে ‘ফি না থাকলে আগে জানিয়ে দিবেন’। এ বিষয়ে তিনি জনকণ্ঠকে জানান, সামর্থ্য না থাকলে কোন রোগীকে টাকা দিতে বাধ্য করা হয় না। সেবাই মুখ্য। নিজের মনে করে কাজ করাটা খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে সকলেই যার যার কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করে। এজন্যই এ হাসপাতালের পরিবেশ এবং সেবার মান ভাল। তিনি আরও জানান, এখানে সব ধরনের রোগের অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এই হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগ, অর্থোপেডিক্স বিভাগ ও নিউরোসার্জারি বিভাগ দেশের যে কোন হাসপাতালের তুলনায় অনেক উন্নত বলে জানান বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। এভাবে হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোর ঘুরে দেখা গেছে, কাজের ও রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও মানসম্মত পরিবেশ। রয়েছে অত্যাধুনিক চিকিৎসা উপকরণ। প্রতিটি ফ্লোরেই তথ্যানুসন্ধানের ব্যবস্থা রয়েছে। এই হাসপাতালে কাজ করার বিষয়ে চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালের সেবার মান উন্নত রাখা এবং পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে তারা নিজেদের অন্তরের কাছে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তারা সেবা দিচ্ছেন। এজন্যই এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর ও চমৎকার। তারা আরও জানান, তারা শুধু হাসপাতালের সেবার মান উন্নত করার জন্যই কাজ করছেন না। বরং সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডের মতো চিকিৎসাসেবা এখানে নিশ্চিত করতে সকল চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে প্রচ- মাথা ব্যথায় ভুগছিলেন ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার বাসিন্দা মোঃ হাসান (৪২)। তিনি একজন কাপড় ব্যবসায়ী। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। একপর্যায়ে ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক মোঃ হাসানকে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেন। এক মাস আগে তিনি এই হাসপাতালের এক স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠছেন। স্বল্প খরচে নিজের শারীরিক অবস্থার উন্নতিতে খুশি হয়েছেন মোঃ হাসান। তিনি জানান, এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের সুবিধা অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখেন। প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি রাখেন না। তারা শুধু টাকার চিন্তা করেন না। অন্য হাসপাতালে গেলে চোখ বন্ধ করে তাকে ভর্তি করিয়ে দেয়া হতো। মাথা ব্যথা নিয়ে লোকজনের মুখে বিভিন্ন কথা শুনে তিনি বেশ আতঙ্কে ছিলেন। এখন তিনি টেনশনমুক্ত বলে জানান মোঃ হাসান। সবচেয়ে বেশি ফ্রি বেডের বেসরকারী হাসপাতাল ॥ ফ্রি বেডে চিকিৎসাধীন মনোয়ারা বেগমের মাথার পাশে বসে আছেন তার ছেলে মিজানুর রহমান সুমন। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, জামালপুর জেলা সদরে তাদের বাড়ি। এত উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের আর্থিক সামর্থ্য তাদের নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতায় উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন তার মা। ফ্রি বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন আব্দুল জাহেদ (৬৫) নামে এক ব্যক্তি। মস্তিষ্কের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। গত ১৩ আগস্ট থেকে তিনি এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। জরুরীভিত্তিতে গত ১৮ অক্টোবর তার মাথায় বড় ধরনের অপারেশন হয়েছে। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন বালিয়া গ্রামে তার বাড়ি। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, নিজেদের খরচে ওষুধ কিনতে হয়। বড় ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কিছু টাকা দিতে হয়। তবে এই হাসপাতালে চিকিৎসার টাকার জন্য কোন তাগিদ দেয়া হয় না। অন্য সব বেসরকারী হাসপাতালে টাকা জমা এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষ না করলে চিকিৎসা শুরু করে না। কিন্তু এই হাসপাতালে আগে চিকিৎসা, পরে অন্য কিছুর হিসাব। এই হাসপাতালের এমন মানবিক আচরণ তাকে মুগ্ধ করেছে বলে জানান আব্দুল জাহেদ। ডেঙ্গু ও টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৪ দিন ধরে ফ্রি বেডে চিকিৎসাধীন আছেন মোঃ বাবুল (২৫)। মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে তার বাড়ি। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, নামমাত্র খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা পেয়ে তিনি খুবই সন্তুষ্ট। চাঁদপুর হবিগঞ্জের শফিউল্লাহ (৬০) গত দু’ মাস ধরে হাসপাতালের ফ্রি বেডে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে তার ডান পা কাটতে হয়েছে। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, বড় ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার শতকরা ৫০ ভাগ খরচ বহন করতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতায় ব্যয়বহুল চিকিৎসাসেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। এমন উন্নত হাসপাতালে নিজ খরচে দুই মাস তো দূরের কথা, এক সপ্তাহ হাসপাতালে অবস্থান করাও সম্ভব হতো না বলে জানান বৃদ্ধ শফিউল্লাহ। ফ্রি বেডে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীর বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরে। হার্টের জটিল সমস্যায় আক্রান্ত মনসুর মিয়া (৪৬)। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, গত ৬ বছর ধরে তিনি হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। ভিটেমাটি ছাড়া সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশন করাতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে তাকে বিনা অপারেশনে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল ছাড়তে হয়। গ্রামে ফিরে যান তিনি। এক ভদ্রলোকের মাধ্যমে তিনি গ্রীন লাইফ হাসপাতালের ফি বেডে ভর্তি হন। গত ৬ দিন ধরে তিনি এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। বিনা টাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পর রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা তাকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, অপারেশন লাগবে না, হার্টের বর্তমান সমস্যা ওষুধ দিয়েই দূর করা সম্ভব। এতে মনে অনেক সাহস পেয়েছেন তিনি। আর সহযোগিতার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান মনসুর মিয়া। এভাবে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই ফ্রি বেডে নামমাত্র খরচে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছে গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান জনকণ্ঠকে জানান, এখানে চিকিৎসা ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। আমরা সব ধরনের রোগীর সেবা দিয়ে থাকি। ধনী, মধ্যবিত্ত, গরিব-সব ধরনের রোগী আমাদের এখানে আসেন। গরিব রোগীদের চিকিৎসায় আমরা কুণ্ঠিত হই না। পয়সার অভাবে কেউ চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত থাকবে, আমরা এ নীতিতে বিশ্বাস করি না। সব ধরনের রোগীকে সমান যতেœ চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। আর্থিকক্ষমতা খুব সীমিত এমন রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয় না। জরুরী বিভাগেও ব্যতিক্রমী সেবা ॥ দেশের বেসরকারী হাসপাতালসমূহের জরুরী বিভাগের চিকিৎসাসেবা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও সমালোচনা রয়েছে। টাকা জমা না দিলে বেসরকারী হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসাসেবা শুরু না করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমন সমালোচনার যথাযথ জবাব দিয়ে চলেছে গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। এখানে জরুরী বিভাগ খোলা থাকে ২৪ ঘণ্টা। ‘পয়সার অভাবে কেউ চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে ফিরে যাবে না’Ñ এটি আমাদের নীতি বলে জানাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ঘুরেও এই নীতির বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া গেছে। গত ২৩ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এক রোগীকে নিয়ে আসা হয়। এ্যাম্বুলেন্স পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই উপস্থিত হন ট্রলিম্যান। রোগীকে নিয়ে সোজা দৌড় জরুরী বিভাগে। পূর্বের চিকিৎসার রিপোর্ট এবং রোগীর লোকজনের সঙ্গে কথা বলেই শুরু হয়ে গেল রোগীর চিকিৎসা। এর মধ্যে টাকার কোন আলাপ নেই। রোগী নিউরো সমস্যায় আক্রান্ত বলে তার লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম। বি-বাড়ীয়া জেলা সদর হাসপাতাল থেকে এ রোগীকে আনা হয়েছে। জরুরী বিভাগের কাজ শেষে নামমাত্র টাকা জমা দিয়ে রোগীকে ভর্তি করা হয়। রোগীর লোকজন ভর্তির সময় নির্ধারিত ন্যুনতম খরচ কয়েকদিন পর জমা দেয়ার আবেদন জানালে তা মেনে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর লোকজন জনকণ্ঠকে জানান, হঠাৎ করে রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটায়, তারা তেমন টাকা-পয়সা নিয়ে আসতে পারেননি। টাকা যোগাড় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যোগাড় হওয়ামাত্রই এলাকা থেকে ‘বিকাশ’ অথবা ‘পোস্ট অফিস’-এর মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেবে বলে জানান রোগীর লোকজন। জীবন বাঁচানোর প্রশ্নে আমাদের কাছে টাকা-পয়সার হিসাব গৌণ বলে জানালেন গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান। তিনি বলেন, জীবন বাঁচানোর জন্যেই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, মুনাফা অর্জনের জন্যে নয়। জরুরী বিভাগের যেকোন রোগী তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। রোগীকে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় উন্নত চিকিৎসাসেবা দিয়ে সঙ্কটময় অবস্থা থেকে উদ্ধার করাই জরুরী বিভাগের চিকিৎসকদের টার্গেট থাকে। এ সময় চিকিৎসার খরচ এবং কাগজ-কলমের আনুষ্ঠানিকতার নামে চিকিৎসার সময় নষ্ট করার কোন অর্থ থাকতে পারে না। ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানান, চিকিৎসাসেবা শুরু হওয়ার পর আর্থিক সামর্থ্য না থাকলে ওই রোগীর যাবতীয় চিকিৎসাব্যয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করে থাকে। চিকিৎসাব্যয় মেটানোর জন্য কোন রোগীর ওপর চাপ বা অমানবিক জুলুম চালানো হয় না বলে জানান হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসকদের হাসপাতাল ‘গ্রীন লাইফ’ ॥ দেশের সম্মিলিত চিকিৎসকদের সম্মিলিত উদ্যোগে গত ২০০৬ সালের ১ জুলাই পথচলা শুরু করে গ্রীন লাইফ হাসপাতাল। ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর রাজধানীর ২৫-এ গ্রীনরোডের নিজস্ব ১৫তলা ভবনে হাসপাতালটির সকল কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় ২০১১ সালের ২৮ অক্টোবর। শুরুতে ২৫০ বেডের হলেও বর্তমানে তা ৫০০ বেডে উন্নীত হয়েছে। অত্যাধুনিক চিকিৎসা শিক্ষা, স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রখ্যাত চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। গ্রীন লাইফ হসপিটাল লিঃ-এর শেয়ার হোল্ডাররা হলেন, অধ্যাপক শামসুদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক এ এইচ এম আহসান উল্লাহ, জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন, অধ্যাপক চৌধুরী হুমায়ুন কবির, ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান, অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, অধ্যাপক এ কে এম আনওয়ার উল আজিম, অধ্যাপক ফখরুন নিসা, অধ্যাপক রামদেও রাম কৈরী, অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল, অধ্যাপক মোঃ খাদেমুল ইসলাম, অধ্যাপক সায়েবা আখতার, অধ্যাপক মুহাম্মদ রফিকুল আলম, অধ্যাপক এ এইচ এম তৌহিদুল আলম, অধ্যাপক নুসরাত জামান, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দীন আকবর চৌধুরী, অধ্যাপক এ টি এম খলিলুর রহমান, অধ্যাপক মোঃ আলী হোসেন, অধ্যাপক আবু সফি আহমেদ আমিন, ডাঃ এ এস এম দিদারুল আহসান, অধ্যাপক বেগম শরিফুর নাহার, অধ্যাপক এ কে এম আনোয়ার উল্লাহ, অধ্যাপক ডাঃ জয়শ্রী রায়, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক আবুল খায়ের, অধ্যাপক এ কে এম জামানুল ইসলাম ভূইয়া, অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক, অধ্যাপক নিশাত বেগম, অধ্যাপক সুফিয়া খাতুন, অধ্যাপক মোমেনুজ্জামান, অধ্যাপক আইনুন আফরোজ, অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক মোয়াররফ হোসেন, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির, অধ্যাপক এ কে এম রাজ্জাক, অধ্যাপক ফজিলাতুন নেসা মালিক, অধ্যাপক প্রজেস কুমার রায়। যেসব বিভাগের চিকিৎসাসেবা দেয়া হয় ॥ আইসিইউ, এনআইসিইউ ও ভ্যাকসিনেশন বিভাগ, গাইনি-প্রসূতি ও ইনফার্টিলিটি বিভাগ, মেডিসিন, রিউম্যাটোলজি, গ্যাস্ট্রো এ্যান্টো ও হৃদরোগ বিভাগ, জেনারেল সার্জারি ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি বিভাগ, নাক-কান-গলা ও হেড-নেক (ইএনটি) সার্জারি বিভাগ, কিডনি বিভাগ ও ইউরোলজি (কিডনি সার্জারি) বিভাগ, শিশুস্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগ, শিশু-কিশোর সার্জারি বিভাগ, বক্ষব্যাধি ও থোরাসিক সার্জারি বিভাগ, অর্থোপেডিক সার্জারি ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ, কেমোথেরাপি বিভাগ (ক্যান্সার চিকিৎসা), ডেন্টাল ও ম্যাক্সিলো ফেসিয়াল সার্জারি বিভাগ, ভাসকুলার (রক্তনালি) সার্জারি বিভাগ এবং চক্ষুরোগ ও চক্ষু সার্জারি বিভাগ। বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ অধ্যাপকম-লী দ্বারা এসব বিভাগে উন্নতমানের আধুনিক চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়ে থাকে। স্বল্প ব্যয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সুবিধাসমূহ ॥ স্পাইরাল সিটি স্ক্যান (৬৪ সেলাইস), এমআরআই (১.৫ টেসল), ইকোকার্ডিওগ্রাম, ডিজিটাল এক্সওে, ওপিজি (ডেন্টাল এক্স-রে), আল্ট্রাসনোগ্রাম (৪ডি কালার), ইএসডব্লিউএল, এ্যান্ডোসকপি, ক্লোনসকপি, ইসিজি, ইটিটি, ইউজি, কল্পস্কোপি, প্যাথলজি, সাইটোলজি, হিসটোপ্যাথলজি, ইআরসিপি, এনসিভি, ইএমজি ইত্যাদি। আগে রোগীর জীবন বাঁচানো, পরে অন্য কিছু... ॥ সারাজীবন তিনি কল্যাণের ছায়ায় লালিত কল্যাণকামী চিকিৎসক বলে কোনদিনই রোগীদের কাছ থেকে কোন ফিস নেননি। কর্মজীবনের শুরু চাকরি দিয়ে হলেও আল-রাজী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চিকিৎসা প্রশাসক হিসেবে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন। এরপর থেকে তাঁকে আর পিছু তাকাতে হয়নি। দীর্ঘ ৪ দশক ধরে চিকিৎসা সেবার উন্নয়নে যিনি কাজ করে যাচ্ছেন, তিনি হলেন মানবদরদী, সেবাপরায়ণ ও সৃজনশীল চিকিৎসক ব্যক্তিত্ব ডাঃ মঈনুল আহসান; গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের এখানে দূর দূরান্ত থেকে যারা পড়তে আসে, তারা কষ্ট করেই পড়ালেখা চালিয়ে যায়। আর আমরা এ প্রতিষ্ঠানটিকে চালিয়ে যাচ্ছি মেডিক্যাল শিক্ষার্থী আর স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণেচ্ছু মানুষের কল্যাণে। ব্যাংক-ঋণের বোঝাও আমাদের কাঁধে আছে। তবু সেবা ও সৃষ্টিশীলতার আনন্দে ঋণের চাপও সামলে নিচ্ছি। আমাদের মেডিক্যাল কলেজে ১২০ জন শিক্ষক আছেন। তাদের অনেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, তাঁরা যোগ্য শিক্ষক ও চিকিৎসক। তিনি আরও বলেন, আমি এ কলেজের অন্যতম উদ্যোক্তা। কিন্তু আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন রয়েছেন, যাঁদেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তবে প্রথমে আমি রাজি হইনি; তাঁরা বলতে চেয়েছিলেন, বয়স হয়েছে ; এ বয়সে এত বড় দায়িত্ব নিয়ে লাভ কী হবে। আমরা কেউ চিরকাল থাকব না, একদিন আমাদের পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু পৃথিবীতে আমরা কী রেখে যাব; আমরা যদি এমন কিছু করে যেতে পারি তাহলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তা বেঁচে থাকবে। মানুষের কল্যাণে আমরা যদি কিছু গড়ে তুলতে পারি, তাহলে আমাদের জন্ম সার্থক হবে। সেই চিন্তা-চেতনা থেকে আমরা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন এই হাসপাতালে এসে রোগীরা সেবা নিচ্ছে, আমাদের জন্য দোয়া করছে। তাদের সেবা করতে পেরে আমরা পরিতৃপ্ত। হাসপাতালে সেবা দিয়েই আমরা আমাদের দায়িত্ব শেষ করিনি। স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চিন্তা আমাদের মাথায় এলো। আমরা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি, যেখানে আজ তরুণ প্রজন্মের মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে মেডিক্যাল শিক্ষা গ্রহণ করছে। চিকিৎসা সেবার মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তারা আদর্শ ডাক্তার হিসেবে এখান থেকে বেরিয়ে গিয়ে বৃহত্তর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে। তিনি আরও বলেন, কার্ডিয়াক সার্জারি ছাড়া বাকি সব চিকিৎসা দক্ষ চিকিৎসক দিয়ে আমরা এখানে সম্পন্ন করে থাকি। দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসকদের সহযোগিতা পাচ্ছি। উন্নতমানের চিকিৎসকরাও আমাদের এ প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতা করেন। আমাদের দেশে চিকিৎসা শিক্ষা কিংবা স্বাস্থ্যসেবা এখনও তত উন্নতমানের হয়নি। আমাদের দেশের অনেক রোগী এখনও দেশের বাইরে চিকিৎসা করাতে যান, বিষয়টি আমাদের জন্য গৌরবের নয়। শুধু মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ের দিক থেকে নয়, মান-সম্মান, ভাবমূর্তির দিক থেকে একে দেখতে হবে। আমরা মানোন্নত চিকিৎসা শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে সচেতনভাবে কাজ করছি। গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ শামসুদ্দিন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, উন্নত চিকিৎসা শিক্ষা এবং অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবব্ধ। প্রবল মানবিক তাগিদ থেকে হাসপাতালের সব কর্মকা- পরিচালিত হয়ে থাকে। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি রোগীর আর্থিকসহ সার্বিক বিষয় আন্তরিকভাবে বিবেচনা করা হয় বলে জানান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ শামসুদ্দিন আহমেদ। মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ॥ সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে যোগ্য, দক্ষ ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ, মেধার ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি, সাশ্রয়ী খরচে শিক্ষাদান, উপযুক্ত শিক্ষা পরিবেশ অব্যাহত রাখতে পর্যায়ক্রমে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে আপোস করা যাবে না বলে জানিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে কলেজে ১৬ বিদেশী, ২৬ ফ্রি শিক্ষার্থীসহ মোট ৪৮৪ ছাত্রছাত্রী আছে। অধ্যাপক ১৭, সহযোগী অধ্যাপক ১২, সহকারী অধ্যাপক ২৬ ও প্রভাষক ৪০ জনসহ মোট ৯৫ শিক্ষক রয়েছেন। কলেজে বর্তমানে মেডিসিন, গাইনি, সার্জারি, অর্থো, চক্ষু, ই-এন-টি, নিউরো, কিডনি, এনআইসিও, রিউম্যাটিক, ডায়ালাইসিস ইত্যাদি বিভাগ চালু রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর মধ্য হতে নির্বাচিত প্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুাযায়ী কলেজে ভর্তি হতে পারবে। মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা হয়েছে উন্নমানের বেসিক, নন-বেসিক, বিএসসি এবং ডিপ্লোমা নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। এখান থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে অনেক নার্স দেশের বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত নার্সিং সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। রোগী দেখে ফি নেন না ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান ॥ গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী উদোক্তা, প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান। রোগী দেখে জীবনে তিনি কখনও ফি নেন না। তিনি ১৯৪৮ সালের ২৭ মার্চ বরুগুনা জেলার বামনা থানার হোগলাপাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আলহাজ আজিজুর রহমান, মা মরহুমা আলহাজ মকিমুন নেছা। ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান যশোর বোর্ডের অধীনে পিরোজপুর হাইস্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৬ সালে যশোর বোর্ডের অধীন ব্রজমোহন কলেজ (বিএম কলেজ) থেকে ১ম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৭২ সালে ঢাকা ইউনিভার্সিটির অধীন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে ছাত্রলীগের মনোন্নয়নে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ স্টুডেন্ট ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত সরকারী চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে ঢাকার ফার্মগেটে আল-রাজী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আল-রাজী হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান ১৯৬৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্ত্রী নাছিমা বেগম। তাঁরা ২ কন্যা সন্তানের জনক-জননী। বড় মেয়ে নাদিয়া আহসান এবং ছোট মেয়ে নাবিলা আহসান।
×