ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

ফুল ও কবিতার ছন্দে কবি শামসুর রাহমান স্মরণ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৮ আগস্ট ২০১৫

ফুল ও কবিতার ছন্দে কবি শামসুর রাহমান স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আধুনিক বাংলা কবিতার অনন্য প্রতিভাদীপ্ত কবি শামসুর রাহমান। কবিতার ছন্দে আমৃত্যু অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও গণমানুষের কথা বলেছেন এবং স্বৈরশাসনের প্রতিবাদ করেছেন। কবিতায় সমকালীনতা ধারণকারী শাণিত চেতনার এই নাগরিক কবি ছিলেন বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। কাব্য রচনায় সৃষ্টি ও মননের দ্যুতিময় উপস্থাপনা তাঁকে দিয়েছে কবিতার বরপুত্রের উপাধি। সোমবার ছিল দেশ, মাটি ও মানুষের কথা বলা এ কবির নবম মৃত্যুবার্ষিকী। কবির প্রয়াণবার্ষিকীর খবরটি প্রতিটি পত্রিকার পাতায় গুরুত্বসহকারে ছাপা হয়েছে। তাঁকে নিবেদন করে কবিতাবিষয়ক আলোচনা ও আবৃত্তিসহ নানা অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়েছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। আর প্রয়াণবার্ষিকীর সকালেই ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বনানী কবরস্থানে কবির সমাধি। এছাড়াও কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কবিতাসহ আবৃত্তি নানা আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয় জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণে। সোমবার শরতের সকালে কবিকে স্মরণ করতে অনেকেই ছুটে যান বনানী কবরস্থানে। কবির সমাধির সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রতি জানানো হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি। এসময় পারিবারিকভাবে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান কবির ছেলে ফাইয়াজ রাহমান। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জাতীয় কবিতা পরিষদের পক্ষে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাতসহ সংগঠনের সদস্যবৃন্দ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সভাপতি গোলাম কুদ্দুছসহ সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদের পক্ষে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এসময় কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে পালন করা হয় ১ মিনিটের নীরবতা। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পাশাপাশি কবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তিন বাংলা লেখক ফেডারেশন। কিছুটা অব্যবস্থাপনা ও অগোছালো হলেও কবিতা আবৃত্তিসহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় এ আয়োজনে স্মরণ করা হয় শামসুর রাহমানকে। তিন পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানটির সূচনা হয় বেলা আড়াইটায়। ‘কবিতায় তোমাকে লিখি’ শীর্ষক কর্মশালার মাধ্যমে শুরু স্মরণের এ আয়োজন। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি আসাদ চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রায় দুই ঘণ্টা পর শুরু করায় প্রধান আমন্ত্রিত অতিথি ও কবিরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সন্ধ্যা ছয়টায় দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুর রাহমানকে নিয়ে স্মৃতিতর্পণ করা হয়। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব লেখক ভুঁইয়া সফিকুল ইসলামে সভাপতিত্বে এ পর্বে আলোচনায় অংশ নেন কবি কাজী রোজী, সাবেক সংস্কৃতি সচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস প্রমুখ। কবিতা আবৃত্তিতে সাজানো সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয় রাত আটটায়। এ পর্বে কবিতাপাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ ও কাজী রোজীসহ আবৃত্তিশিল্পীরা। কাব্যগাথার দোলায়িত ছন্দের শিল্পীত উচ্চারণে শেষ হয় এ স্মরণানুষ্ঠান। সচিবালয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ॥ সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। তথ্য অধিদফতর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এস এম মাহবুবুল আলম, এস এম হারুন-অর-রশীদ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহাম্মদ, যুগ্ম-সচিব (প্রেস) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ইসতাক হোসেনসহ মন্ত্রণালয় ও তথ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সচিবালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হলো। জাতির পিতার বেশ কিছু দুর্লোভ আলোকচিত্র এখানে স্থান পেয়েছে। এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মধ্যদিয়ে শোকাবহ আগস্টে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সচিবালয়ে পরম শ্রদ্ধাভরে আমরা স্মরণ করছি।’ আলোকচিত্র সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কুচক্রীদের পরাজিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ আবার তার নিজস্ব পথে চলতে শুরু করেছে। এই পথচলা অব্যাহত রাখতে আমাদের সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে।’ এ প্রদর্শনী আগামী ২০ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর আলোকচিত্র প্রদর্শনী ॥ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি এবং বিকেএমইএ-এর প্রথম সহ-সভাপতি এ এইচ আসলাম সানি।
×