ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাফর ওয়াজেদ

সালাহউদ্দিনের আত্মপ্রকাশ বিএনপির সর্বনাশ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৮ মে ২০১৫

সালাহউদ্দিনের আত্মপ্রকাশ বিএনপির সর্বনাশ

অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে বাংলা গোয়েন্দা গল্পগুলো একসময় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। গত শতকে সবচে’ বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এসব রহস্যরোমাঞ্চ কাহিনীগুলো। এসব নিয়ে বায়স্কোপও নির্মাণ হয়েছে। একুশ শতকে এসে বাস্তব রহস্য কাহিনীর অবতারণা করলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আকস্মিকভাবে ‘গায়েব’ হয়ে যাওয়ার মাজেজা ক্রমশ উন্মোচিত হলেই স্পষ্ট হবে কাহিনীর অন্তর্গত শিকড়-বাকড়ের রহস্য। সালাহউদ্দিন গায়েব হওয়ার আগের তিন মাসও ছিলেন গোপন আস্তানায়। পরিবারের সঙ্গে বসবাস করা তার হতো না। রহস্য উপন্যাসের চরিত্রের মতো তিনি গোপনে গোপনে ক্রিয়াকর্ম চালাতেন। শুধু তাই নয়, ফৌজদারি মামলা এড়াতে এই গোপনবাসকালে তিনি বিবৃতিতে নির্দেশ পাঠাতেন দলীয় চেয়ারপার্সনের পক্ষে অবরোধ-হরতাল অব্যাহত রেখে দেশজুড়ে নাশকতা চালিয়ে পেট্রোলবোমায় মানুষ হত্যার জন্য। লক্ষ্য ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত করে দেশকে পাকিস্তানী স্টাইলে পরিচালনার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষাও তত্ত্বাবধায়ক যুগে দায়ের করা দুর্নীতির মামলা হতে রেহাই পাওয়া। তিন উদ্দিনের শাসনকালেও সালাহউদ্দিন পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। তখন সম্ভবত দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। সেদিক থেকে দেখলে বোঝা যায়, পালিয়ে থাকা বা গায়েব হয়ে যাওয়ার প্রবণতা তার পুরনো। বিসিএস ক্যাডার হিসেবে সরকারী প্রশাসনে যোগদানের আগে ছাত্রজীবনে ছাত্রদল করতেন। প্রচার রয়েছে যে, তিনি তারেক-কোকোর গৃহশিক্ষক ছিলেন একটা সময়ে, যখন ওরা বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করত। তার ছাত্ররা অবশ্য শিক্ষকের মতো উচ্চশিক্ষার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারেনি। গৃহশিক্ষক হওয়ার সুবাদেই পারিবারিক ঘনিষ্ঠতায় তিনি প্রধানমন্ত্রী খালেদার ১৯৯১-৯৬ কালে এপিএস পদ পেয়ে যান। আর তখন তিনি ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাতেন এবং স্থানীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেন। প্রশাসনকে দলীয়করণ করার বিএনপির নীতি অনুযায়ী সে সময় তার প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার খোরাক যোগায়। রাজনৈতিক দাপটের স্বাদ তাকে চাকরিমুক্ত করে। পরবর্তীকালে জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত নিজ এলাকা হতে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠন করলে তিনি হয়ে যান যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী। তখন থেকেই তার দাপট তুঙ্গে ওঠে। তিন উদ্দিন যুগে অপর উদ্দিন সালাহউদ্দিন দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে অন্তর্ধানে চলে যান। ফলে নির্বাচনে অংশ নিতে না পেরে তার আসনে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। আওয়ামীজোট ক্ষমতায় এলে তিনি আবির্ভূত হন। বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনি ছিলেন তারেকের প্রিয়ভাজন। একই সঙ্গে বেগম জিয়ারও। জামায়াত অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দা হিসেবে জামায়াতেরও প্রিয়পাত্র তিনি। হাবভাবে বেশ রূঢ়তা থাকায় লোকে ভয়ও পেত। ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পূর্বে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রশাসনকে যে তিন স্তরে সাজিয়েছিল, তার রূপকল্প প্রণেতার অন্যতম ছিলেন সালাহউদ্দিনও। সেই স্তর নিয়ে বর্তমান সরকারও দ্বিতীয় দফা শাসনকার্য চালাচ্ছেন। এই দলবাজদের ওপর ভরসা করেই বেগম জিয়া গত ৫ জানুয়ারি রাজপথে বেরিয়ে প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিয়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন। কতিপয় আমলাও বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিল সে সময়। যদিও পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর অবরোধ নামক নাশকতা প্রকল্প চালু করা হয়। এই নাশকতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে কয়েকটি ফৌজদারি মামলাও দায়ের করে পুলিশ। কিন্তু দৃশ্যপটে তাকে পাওয়া না গেলেও অজ্ঞাতস্থান হতে তিনি বোমাবাজির নির্দেশ পাঠাতেন। অবশ্য সম্প্রতি তার স্ত্রী দাবি করছেন, তার স্বামীর নামে বিবৃতি পাঠানো হতো। প্রচার রয়েছে, স্বামীর নামে বিবৃতি দিয়ে মানুষ হত্যা বন্ধ করার জন্য এই ‘অপহরণের’ কাহিনী সাজানো হয়েছিল। ১০ মার্চ সালাহউদ্দিন গায়েব হয়ে যান বলে তার স্ত্রী ২৪ ঘণ্টা পর জানান, যার মধ্যে রহস্যের ভোমরাটি রয়ে যায়। স্মরণ করতে পারি, শেষ বিবৃতি প্রদানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গায়েব হয়ে যান যখন, তখনও দেশজুড়ে পেট্রোলবোমা হামলায় ৪ জনের মৃত্যু ঘটে, বার্ন ইউনিটে আরও ৬ জন অগ্নিদগ্ধ ভর্তি হয়। দেশজুড়ে জঙ্গী তৎপরতায় আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ। নাশকতা, সহিংসতা, অরাজকতা, নিষ্ঠুরতা, নির্মমতার ভারে জর্জরিত দেশ। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতাসীন সরকারকে যে কোন মূল্যে উৎখাতের জন্য যাত্রীবাহী বাস, সরকারী স্থাপনা পোড়ানোর কাজ ব্যাপক করে তোলে। শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, স্কুল-কলেজ ছাত্র-ছাত্রী, শ্রমিক, বাসচালক হেল্পারসহ নিরীহ মানুষের নৃশংস মৃত্যুর মিছিল চলছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সালাহউদ্দিনের টিকিটিও খুঁজে পাচ্ছিল না। অথচ তার বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে তখনও। গোপন আস্তানা হতে সালাহউদ্দিন ‘অপহরণ’ হলেন বলে ঘটনার একদিন পর তার স্ত্রী দাবি করেন। উত্তরার যে বাড়িতে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন, সে বাড়ির মালিক ব্যাংকার ২৪ ঘণ্টা পর বেগম সালাহউদ্দিনকে জানিয়েছেন, র‌্যাবের লোকজন তাকে মাঝরাতে তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু র‌্যাবসহ অন্য সংস্থাগুলো তা অস্বীকার করে। কিন্তু চৌকস গোয়েন্দা বা র‌্যাব তাদের সম্পর্কে আনীত অভিযোগ তদন্ত করেনি। এমনকি সেই ব্যাংকারকে জিজ্ঞাসাবাদও করেনি। বিষয়টিকে তারা হাল্কাভাবে নিয়েছে বলেই গূঢ় রহস্য আবিষ্কার করতে পারেনি। কর্তব্যে অবহেলা বা গাফিলতি যাই হোক, পরোয়ানা থাকা সত্ত্বে¡ও তারা সালাহউদ্দিনকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ তিনি তখনও নাশকতাকর্মের জন্য অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছিলেন। শত নাগরিক কমিটির সভাপতি তথা বেগম জিয়ার সবেধন বুদ্ধিজীবী প্রফেসর এমাজউদ্দীনও আরেক উদ্দিন, যিনি বেগম জিয়া জামায়াতকে নিয়ে ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর, সেই তিনিও চাইছেন, সালাহউদ্দিনের দু’মাসের বৃত্তান্ত যেন জনগণ জানতে পারে। খুবই সত্য কথা। জনগণ স্বাভাবিক কারণেই তা জানতে চাইবেন। কারণ যার নির্দেশে দেশজুড়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা হতো, তার হঠাৎ অন্তর্ধান এবং দুু’মাস পর আত্মপ্রকাশ তো মুখরোচক যেমন, তেমনি নানা সন্দেহকে সামনে নিয়ে এসেছে। তারও আগের তিন মাস তিনি প্রকাশ্যে আসেননি। দফতর সম্পাদক রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর তার আবির্ভাব ঘটে, অবশ্য অদৃশ্যলোকে। প্রফেসর এমাজউদ্দীন শর্তারোপও করেছেন, ঘটনার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে। এমন দাবি তিনি করতেই পারেন। যদিও বিচার বিভাগের ওপর তাদের আস্থা কম এমনটা বার বার বলে আসছেনও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষকের জ্ঞানের পরিধি তো আর সামান্য নয়, তিনি বিএনপি মনোনীত উপাচার্যও ছিলেন। তদন্ত হলে জানা যাবে, গায়েব হওয়ার তিন মাস পূর্ব হতেই তিনি কী করছিলেন। কারণ ওই আত্মগোপনের কোন বৃত্তান্ত মেলে না। নাশকতার জন্য ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে অজ্ঞাতস্থান হতে বিবৃতি পাঠাতে পাঠাতে একদিন কিভাবে গায়েব হয়ে গেলেন-তার অন্তর্গত বিষয় জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। এই যে বোমাবাজি অগ্নিদগ্ধের ঘটনা টানা তিন মাসের বেশি ঘটল, তা অজ্ঞাতস্থান হতে পরিচালিত হয়ে আসছিল। সালাহউদ্দিন, যিনি বেগম জিয়ার বিশ্বস্তজন, সেই তিনি নেপথ্য হতে কলকব্জা যে নাড়েননি, তার নিশ্চয়তা কি? গুলশানে অফিস কাম রেসিডেন্স প্রতিষ্ঠা করে, সেখান হতে বেগম জিয়া যে নির্দেশ দিতেন, অজ্ঞাতস্থান হতে সালাহউদ্দিন তা প্রচার করতেন বিভিন্ন মিডিয়াতে। যে কাজটি করতেন জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন। অনুরূপ কায়দায় সালাহউদ্দিনের অবরোধ-হরতাল পালনের মাধ্যমে সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশদানের এই বার্তা প্রেরণকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সালাহউদ্দিন বিন লাদেন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। স্পষ্ট যে, জঙ্গীদের মতো আচার-আচরণে তার দক্ষতা রয়েছে এবং এমন জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন, বার্তা পাঠানোর প্রক্রিয়া তারই নিদর্শন। উদ্দিনদের তত্ত্বাবধায়ক যুগে আরও অনেকের সঙ্গে সালাহউদ্দিনকেও সন্ত্রাস ও দুর্নীতির ‘গডফাদার’-এর তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। সেই সময় যে পলাতক জীবন বেছে নেন, সেই অভ্যাসটা তাকে ছেড়ে যায়নি। তখন দেশের বাইরে অবস্থানকালে তার সঙ্গে দুবাইয়ের একটা সংযোগ যে গড়ে উঠেছিল, তা অব্যাহত রয়েছে বলেই শিলং হতে স্ত্রীর সঙ্গে যে ফোনালাপ করেন সেই সিমটি দুবাইয়ের। দুবাই কানেকশন মানেই মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে তারেক ও একদা গোয়েন্দা সংস্থা প্রধান রেজ্জাকুল হায়দারের কয়েক দফা বৈঠক ও বাংলাদেশে নাশকতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনাকে হত্যার ও ভারতের সাত রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ পরিকল্পনার প্রচারকেই মনে করায়। তারেক ঘনিষ্ঠ হিসেবে সেই সংযোগ পরম্পরায় সালাহউদ্দিন রক্ষা করে আসছেন কিনা, তদন্ত হলে তা স্পষ্ট হবে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেভেনস সিস্টার রাজ্যগুলোর বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে লালন-পালন ও সশস্ত্র পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছিল। বিএনপি সরকার এই সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘাঁটি গাড়া ও আশ্রয় দেয়। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূল ও স্থলভাগকে এই সংগঠনগুলোর অস্ত্র পরিবহনের রুট হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়া হয়। তারেক ও মন্ত্রী বাবর সরাসরি তত্ত্বাবধায়ন করতেন। অসমের উলফার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট সীমান্তে এদেশী গোয়েন্দাদের সহায়তায় গড়ে তোলা হয়েছিল। দশ ট্রাক অস্ত্রের যে চালানটি ধরা পড়েছে, তার নেপথ্যে কুশীলবরা আদালতে বিচারের সম্মুখীন। ১৯৮৯ সালে উলফা প্রথম বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়ে। এরপর খালেদা শাসনযুগে এদেশের ভূখ- ব্যবহার করে ভারতবিরোধী তৎপরতা চালানোর সুযোগ করে দেয় বিএনপি। তারা সমরাস্ত্র ও বিস্ফোরকের চালান বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অবাধে পাচারের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। উলফার শীর্ষ নেতারা ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য চালু করে। (উলফার এসব তৎপরতা নিয়ে জনকণ্ঠে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার)। উলফাসহ সাত রাজ্যের অন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও এ সময়ে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতা পেতে থাকে আইএসআই-এর পরামর্শে। সালাহউদ্দিন সে সময় প্রধানমন্ত্রী খালেদার এপিএস। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভূখ- ব্যবহারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন। উলফাসহ অন্যরা তখন ভুটান নেপালসহ ভারতের অন্য রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল। ২০০১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত জোট ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিতে থাকে। তাদের নেতারা সংসদে দাঁড়িয়ে ভারতের সাত রাজ্যকে স্বাধীন হিসেবে দেখতে চায় বলে ঘোষণাও দেয়। সে সময় উলফার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করা হতো কক্সবাজার-টেকনাফ উপকূল হয়ে কর্ণফুলী নদীঘাটেও খালাস হতো। সালাহউদ্দিন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তারেকের নির্দেশে এসব দেখাশোনা করতেন কিনা, তা এখন স্পষ্ট হবে। সালাহউদ্দিন আত্মপ্রকাশ হওয়ার পর কলকাতা হতে তার আত্মীয়র আবির্ভাবও নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন গোষ্ঠীর সঙ্গে সালাহউদ্দিনের সম্পর্ক রয়েছে কিনা, বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দেশের গোয়েন্দারা। দুই দেশের অস্থিতিশীল কোন গোষ্ঠীর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে কিনা-তা তদন্ত করছে। ভারত সরকারের উচিত সালাহউদ্দিনের সঙ্গে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বৈঠকের প্রমাণ পাওয়া গেলে ফেঁসে যাবেন সালাউদ্দিনসহ বিএনপি নেতারা। অবরোধ নামক বোমা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সালাহউদ্দিনের ভারত অবস্থান হয়ত নাশকতার জন্য উলফার সশস্ত্র গ্রুপকে ভাড়ায় খাটাতে চেয়েছিল কিনা- তাও জানা দরকার দেশের স্বার্থে। তার স্ত্রী তো বলেই দিয়েছে একদা গলাকাটা রাজনীতির ধারক শিমূল বিশ্বাসকে যে, তাদের নির্দেশেই তার স্বামী দেশত্যাগ করেছে। সালাহউদ্দিনের আত্মপ্রকাশে বিএনপি সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কারণ নাশকতাসহ সরকার উৎখাতের সব ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়বে এখন। সর্বনাশের যে খেলায় বিএনপি নেমেছে, সেই খেলা তার সর্বনাশকেই ত্বরান্বিত করবে। বেগম জিয়ার সব কৌশলই বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে আজ।
×