ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নানা অনিয়মে জর্জরিত বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

চারজন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ৩১ মার্চ ২০১৫

চারজন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৩০ মার্চ ॥ বাউফল ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডাক্তার সঙ্কটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২৪ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৪ জন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তিনতলা আধুনিক কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয় এবং ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ শয্যার জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু ডাক্তার ও জনবল সঙ্কটের কারণে পূর্ণাঙ্গভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন পর্যন্ত চালু করা যায়নি। এদিকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উন্নতমানের একটি এক্স-রে মেশিন দিনের পর দিন অচল করে রাখা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে এক্স-রে মেশিনটির অপারেটর স্থানীয় একটি ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাই রোগী এলে তাদেরকে নানা অজুহাতে ওই ক্লিনিকে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। এছাড়াও প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রসূতি মায়েদের জন্য অত্যাধুনিক ইওসি (জরুরী প্রসূতি সেবা) বিভাগ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে বর্তমানে সেটি বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪’শ রোগী সেবা নিতে আসেন। যারা ইনডোরে ভর্তি হন তারা সিটের অভাবে মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার রক্তমাখা নোংরা ম্যাট্রেস ও চাদর দেয়া হয় রোগীদের। জায়গার অভাবে পুরুষ-মহিলা একই কক্ষে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা কোন ওয়ার্ড নেই। প্রসূতি ওয়ার্ড এবং মেঝেতে রেখে ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর বিকল থাকায় সীমাহীন দুর্র্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের। রোগী ও সাধারণের জন্য থাকা টয়লেটগুলো অপরিচ্ছন্ন। টয়লেটের দুর্গন্ধে হাসপাতালে প্রবেশ করা যায় না। একাধিক রোগী অভিযোগ করেন, সরকারী বরাদ্দকৃত কোন ওষুধই পাওয়া যায় না। ওষুধের প্রয়োজন হলে নার্স ও ডাক্তাররা বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনার জন্য বলেন। প্রত্যেক রোগীর খাবার বাবদ প্রতিদিন ১২৫ টাকা বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদারের সরবরাহকৃত নিম্নমানের খাবার খাওয়া যায় না। রাতে জরুরী বিভাগে কোন ডাক্তার থাকেন না। রাত ১১টা পর্যন্ত তারা বাইরে প্র্যাকটিস করেন। সন্ধ্যার পর জরুরী বিভাগে রোগী এলে ডাক্তারকে চেম্বার কিংবা বাসা থেকে ডেকে আনতে হয়ে।
×