ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৮ মার্চ ২০১৫

জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

জয় খুব দরকার ছিল। সুপার এইটে যাওয়ার জন্য ম্যাচটিতে জয়ের বিকল্প ছিল না টাইগারদের। প্রতিপক্ষ যখন স্কটল্যান্ড তখন ‘স্বপ্নসূর্য’ টাইগারদের হাতের নাগালে এমনটাই ভাবছিল সবাই। তাই দেশবাসীর চোখমুখে ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিজয়ের আগাম ঝিলিক। কিন্তু ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা। কাইল কোয়ের্টজারের ১৫৬ রানের ওপর ভর করে স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রানের বিশাল পাহাড়। বাংলাদেশের টার্গেট ৩১৯ রান। ১১ বল আগেই ৬ উইকেট হাতে রেখে ৩১৮ রান টপকে যাওয়া তো পাহাড় ডিঙ্গানোর মতোই! এই বিশাল রানকে টপকে যাওয়া ক্রিকেট পরাশক্তি দেশগুলোর জন্য যে কখনও কখনও দুঃসাধ্য সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সেই পাহাড় টপকালো বাংলাদেশ। তামিমের ৯৫ রানের বিশাল ইনিংসটিই টাইগারদের এগিয়ে দেয় অনেক দূর। মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিং এবং মুশফিকের ৪২ বলে ৬০ রান জয়কে সহজ করে দেয়। পরের গল্পটা সবারই জানা। সাকিবকে সামনে রেখে অদম্য সাহস আর দৃঢ়তায় এগিয়ে যেতে থাকেন সাব্বির। ৫২ ও ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ওয়ানডেতে এই প্রথম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে কারও বিপক্ষে জয় তুলে নিল টাইগাররা। বলা চলে রেকর্ডের স্রোতে ভেসে গেল স্কটিশরা। জয় পেল বাংলাদেশ- যেন ইতিহাস কাঁপানো জয়। যেন স্বপ্নের চেয়েও বড় জয়। টিকিয়ে রাখল শেষ আটে খেলার স্বপ্নটা। শক্তি-সামর্থ্য-অভিজ্ঞতা কোনও বিচারেই বাংলাদেশের ধারেকাছে নেই স্কটল্যান্ড। কিন্তু এ ম্যাচে আগে ব্যাটিং করার সুযোগ পাওয়া স্কটল্যান্ডকে দেখে অনেকের কাছে মনে হচ্ছিল র‌্যাঙ্কিয়ের শীর্ষে থাকা কোন দেশ ব্যাটিং করছে। অবশ্য এই ম্যাচে বাংলাদেশ যে ব্যাটিং করেছে তা দেখে এরা ঈর্ষা করতে পারে! এই জয়ে ক্রিকেট পরাশক্তিগুলো, যারা বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বকাপ খেলছে তাদের জন্য সর্তকবার্তা। এই জয়ের মধ্যদিয়ে পরবর্তী ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হতে টাইগারদের সাহসও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। স্কটল্যান্ডের পরীক্ষা ভালয় ভালয় শেষ হয়েছে। এবার ইংল্যান্ডের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পালা। খেলার সমীকরণ এখন সবাই জানে। সুপার এইটে টিকে থাকতে হলে বাকি ম্যাচগুলোর কমপক্ষে একটি জিততে হবে বাংলাদেশের। এক্ষেত্রে বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলায় অতীতের ভুলগুলো চিহ্নিত করে সঠিকভাবে নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে সাফল্য আসাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দলীয় প্রচেষ্টায় যে কোন দলকে হারানোর সামর্থ্য বাংলাদেশের রয়েছে তা ক্রিকেট বিশ্ব এখন মানতে বাধ্য। এই দৃষ্টান্তও অতীতে বাংলাদেশ দেখিয়েছে। ক্রিকেটে বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনার কথা যাঁরা বলেন তাদের কথা যে কথার কথা নয় তার প্রমাণ রেখে চলছেন আমাদের খেলোয়াড়রা। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা যে অনেক বেশি দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠছে তার স্পষ্ট আভাস পাওয়া যাচ্ছে চলতি বিশ্বকাপে। এখনকার ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এবং ট্যালেন্টদের অবদান নিয়ে রীতিমতো গর্ববোধ করা যায়। এই সাফল্যের ধারা পরবর্তী ম্যাচগুলোতে অব্যাহত রাখতে হবে- এটা সবার প্রত্যাশা।
×