ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

মাদ্রাসার লাখ টাকার গাছ সাবাড়, নেই অনুমতি বা নিলামের প্রক্রিয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ২৮ জুলাই ২০২৫

মাদ্রাসার লাখ টাকার গাছ সাবাড়, নেই অনুমতি বা নিলামের প্রক্রিয়া

ছবিঃ সংগৃহীত

সৈয়দপুরের পার্শ্ববর্তী দেউল বাঘাচোড়া দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা নামে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক লাখ টাকার মূল্যের গাছ গোপনে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সুপারের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলা প্রকাশ্যে ১০টি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে বিক্রি করেন মাদ্রাসা সুপার মো: ফহির উদ্দিন। তবে এ বিষয়ে মাদ্রাসাটির আহ্বায়ক কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত বা সরকারি অনুমতি ছিল না। গাছগুলো কেটে স্থানীয় ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করেন।

জানা যায়, মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো: ফহির উদ্দিন হচ্ছেন পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচণ্ডি ইউনিয়নের ওলামা লীগের একজন সক্রিয় নেতা। তার ভাই আলহাজ¦ ফজির উদ্দিন হলেন, একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি সর্বদা বড় ভাই ও আওয়ামী লীগের আধিপত্য খাটিয়ে সহ-মৌলভী থেকে সুপার বনে যান। আগে ওই পদে ছিলেন গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জের মো: আ: জব্বার নামে এক শিক্ষক। তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে অপসারণে বাধ্য করেন। পরে নিজে ওই পদে বসে চালিয়ে যান নানা অপকর্ম। তিনি ধারাবাহিকভাবে ১৮টি পদে নিয়োগের সময় প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

এছাড়া মাদ্রাসার নামে সকল চাষাবাদি জমির ফসলও ভোগ করতেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদের সাহস পেত না। তবে ২০২৪-এর জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতনের পর তিনি মাদ্রাসায় নিয়মিত আসেন না। তারপরেও কোনো জবাবদিহি নেই।

ওই মাদ্রাসার অফিস সহকারী মো: নুরুজ্জামান জানান, ২০১৮ সালে যোগদান করি। তার অনিয়ম বিষয়ে জানি না। তবে গাছগুলো ছিল মাদ্রাসার। বিষয়টি “আমরা পরে জেনেছি।” তবে গাছ কাটার কোনো বৈধতা ছিল কি না, তা জানি না।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ অবৈধভাবে কাটা প্রসঙ্গে মাদ্রাসা সুপার মো: ফহির উদ্দিনকে একাধিকবার (০১৭২৫০৮৬৯৬৪) ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।   

ওই ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: জাহেদুল ইসলাম বলেন, তার অনেক অনিয়ম। তিনি কোনো অনুমতি না নিয়ে মাদ্রাসার গাছ কাটলেন। এর সঠিক তদন্ত ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বেলাইচণ্ডি ইউনিয়নের সভাপতি মো: খায়রুল বাশার বলেন, নানাবিধ অনিয়মের কারণে তিনি পাঠদান ও প্রশাসনিক কাজকর্ম করেন না। এটি একটি ধর্মীয় ও জনসম্পদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, সেখানে গাছ কাটা বা সম্পদ বিক্রি হলে সবার জানার অধিকার আছে। সেটা কাউকে না জানিয়ে এমন ঘৃণ্য কাজ করেছেন। এজন্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ নিয়ে পার্বতীপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত ছিলাম না। তাই তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইমরান

×