ছবি: জনকণ্ঠ
মেহেরপুর সদর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সামাদের সহযোগিতায় সড়ক সংস্কারে পরিত্যক্ত ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন সদর উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির উল ইসলাম। নিম্নমানের কাজের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এক কোটি ২৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ষোলমারী, চাঁদপুর, রামদাসপুর সড়কের ১৭ শত মিটার সংস্কার কাজের কার্যাদেশ পায় মেসার্স নুর ইসলাম এন্টারপ্রাইজ। গত ২১ এপ্রিল কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। ঠিকাদার নুর ইসলামের সঙ্গে সদর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সামাদসহ কয়েকজন কর্মকর্তার সখ্যতা থাকায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করলেও তারা দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ব্যবহার অযোগ্য ইটের খোয়া এই সড়কে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেও এলজিইডির কোনো কর্মকর্তার সাড়া পাওয়া যায় না। এছাড়া ঠিকাদার নুর ইসলাম বিএনপি নেতা হওয়ায় কেউ মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছেন না। সে সুযোগে ব্যবহার অযোগ্য ইট দিয়ে দেদারসে কাজ করছে। তাছাড়া রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
স্থানীয় সমাজসেবক নাসিম জানান, এই অপকর্মের সঙ্গে ঠিকাদার কিংবা এলজিইডির যেই জড়িত থাকুক না কেন, তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে কোনোভাবেই অনিয়ম দূর করা সম্ভব হবে না।
ব্যবসায়ী পারভেজ জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে ঠিকাদার ব্যবহার অযোগ্য ইট দিয়ে কাজ করছে আর দেখভালের দায়িত্বে যে সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। তাদের সরাসরি চাকরিচ্যুত করা উচিত।
সদর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ বলেন, তাকে না জানিয়ে ঠিকাদার কাজ করছে। অনেকগুলো কাজ চলমান রয়েছে—কোনটা রেখে কোনটা দেখবেন? তবে তিনি তার সঙ্গে ঠিকাদারের কোনো অর্থনৈতিক লেনদেন নেই বলে দাবি করেন।
এদিকে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে ঠিকাদার নুর ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির উল ইসলাম বলেন, সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করার সংবাদ পাওয়ার পর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সকল মালামাল উত্তোলন করে ভালো ইট দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজের মেয়াদ শেষ হলেও কীভাবে কাজ করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে।
কুষ্টিয়া এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সালাম বলেন, ঠিকাদারের অনিয়মের সঙ্গে অফিসের কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুমু ২
