মাছ চুরির অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারায় মজিবুর রহমান (৬১) নামে এক বৃদ্ধ ভ্যানচালককে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। উপজেলার হাটমাধনগর এলাকায় বুধবার সকালের এই ঘটনার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। মজিবুর রহমান উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মজিবুর হাটগাঙ্গোপাড়া বাজার থেকে ভ্যান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি হাটমাধনগর এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় কয়েকজন তাঁর গতিরোধ করে। তারা অভিযোগ তোলেন, মজিবুর তাদের বিল থেকে মাছ চুরি করে বিক্রি করছেন। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়।
এ ঘটনা দেখে সকাল ১০টার দিকে জনাব আলী নামের মজিবুরের এক আত্মীয় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা গিয়ে মজিবুরকে উদ্ধার করে। পরে ফাঁড়ি থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তার পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
জনাব আলীর দাবি, উপজেলার জোঁকাবিল ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে হাটমাধনগর ও বাসুদেবপাড়া গ্রামের মধ্যে বিরোধ চলছে। বিলের মালিকানা ও মাছ চাষ নিয়ে আগে একবার খুনের ঘটনাও ঘটেছে। সেই বিরোধের ধারাবাহিকতায় ‘মিথ্যা অপবাদ’ দিয়ে মুজিবুরকে ধরে গাছে বেধেঁ নির্যাতন করেছেন আবুল কালাম, আফসার আলী, পিয়ার বকস, নাদের আলীসহ কয়েকজন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আবুল কালাম বলেন, মজিবুর ও তাঁর ভাই এবাদুর দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিলের মাছ চুরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। কয়েকবার হাতেনাতে ধরার পরও তারা সংশোধন হননি। কয়েকদিন আগে তারা বিলের মুখের একটি জলকপাট খুলে মাছ বের করে দেন। তার দাবি বুধবার সকালে তিনি আড়তে গিয়ে মাছ বিক্রি করেছেন। এমন খবর পেয়ে আমরা তাকে ধরে পুলিশে দিয়েছি।
বাগমারা থানার হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে মজিবুরকে গাছে বাঁধা অবস্থায় পায় নি। তবে তাকে হেফাজতে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের হেফোজতে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিলের মাছ চাষিদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ এসেছে, তিনি নাকি মাছ চুরি করে বিক্রি করেছেন। তবে তারা লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এছাড়াও নির্যাতনের শিকার মুজিবুর রহমানও এখনো কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজু
