
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ছোটলেখা চা বাগানের শ্রমিকরা বাগান ম্যানেজার শাকিল আহমদ ও বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নানু মিয়ার অপসারণ দাবিতে গত শনিবার কাজ বন্ধ করে চা কারখানা ও কার্যালয়ের সামনে ধর্মঘট পালন করেছে।
একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ম্যানেজার শাকিল আহমদকে অবরুদ্ধ করে রাখে। বাগান কর্তৃপক্ষ তাকে অপসারণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার ঘোষণা দেয়। কিন্তু ২০ জুলাই রোববার সকালে বাগানের জেনারেল ম্যানেজার মনিরুজ্জামান লিটন স্বাক্ষরিত বাগান বন্ধের নোটিশে শ্রমিকদের মাঝে ফের চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আবারো আন্দোলনে নেমেছে।
সরেজমিনে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, বাগানের ম্যানেজার শাকিল আহমদ ও বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি নানু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে তাদের হয়রানি করছেন। নিয়মিত মজুরি পরিশোধ, বসতঘর মেরামত, পানির সমস্যা, চিকিৎসা সুবিধাসহ নানা সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলতে গেলেই তারা (ম্যানেজার ও পঞ্চায়েত সভাপতি) শ্রমিকদের সাথে অসদাচরণ ও ভয়ভীতি দেখান। ম্যানেজার ও পঞ্চায়েত সভাপতির অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শ্রমিকরা তাদের অপসারণের দাবিতে শনিবার ধর্মঘট পালন করে। এসময় ম্যানেজার শাকিল আহমদ বাগান থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে শ্রমিকরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিক সোহেল রানা, নয়ন মির্জা, সুজন ঠাকুরিয়া, হাকিম সরদার প্রমুখ জানান, ম্যানেজার ও পঞ্চায়েত সভাপতির অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তারা শনিবার ধর্মঘট করেন। ‘শাকিল সাব ১৬ বছর ধরে ম্যানেজারের দায়িত্বে, এ যাবত তিনি শ্রমিকদের কোনো দাবিই পূরণ করেননি।’ শ্রমিকদের আন্দোলনের খবর পেয়ে বাগানের জেনারেল ম্যানেজার মনিরুজ্জামান লিটন এসে আমাদেরকে বলেন, "ম্যানেজার ও পঞ্চায়েত সভাপতিকে অপসারণ করলে কি তোমরা কাজে যাবে"। আমরা হ্যাঁ বলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করি।
তারা আরও জানান, ২০ জুলাই রোববার সকালে যথারীতি কাজে বেরিয়ে দেখি অফিসের নোটিশ বোর্ডে ‘বাগান বন্ধের’ একটি নোটিশ টানানো রয়েছে। বাগানের বড় বাবুসহ অফিসে কেউ নেই। এতে শ্রমিকরা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে পুনরায় আন্দোলন শুরু করেছে। দুপুরের দিকে পুলিশ নিয়ে আমাদের শ্রমিকদের হয়রানির চেষ্টা চালানো হয়। এতে শ্রমিকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ছোটলেখা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মনিরুজ্জামান লিটন জানান, বাগানের শ্রমিকরা অবৈধ ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করে বাগানের কাজ বন্ধ রেখে বাগান ব্যবস্থাপককে জোরপূর্বক বের করে দেয়। কতিপয় শ্রমিক ব্যবস্থাপকের সাথে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কায় কোম্পানির নিদের্শক্রমে রোববার সকালে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধের নোটিশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বড়লেখা থানার ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, ছোটলেখা চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ মোতাবেক আমাদের কাজ চলতেছে। যেহেতু বাগান বন্ধ সেজন্য একটু সময় লাগবে।
Mily