ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

জুলাই অভ্যুত্থান : সংঘর্ষের খবর প্রচার করায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ৪টি টিভি চ্যানেল

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ১৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৩:৪৭, ১৮ জুলাই ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থান : সংঘর্ষের খবর প্রচার করায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ৪টি টিভি চ্যানেল

৫ আগস্ট ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ঘটে। কিন্তু এই অর্জনটা এত সহজ ছিল না। একের পর এক হত্যা, গণহত্যা, শত শত মানুষের অক্লান্ত লড়াই রয়েছে এর পেছনে।

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই ছিল সংঘর্ষময় একটি দিন। এদিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, রামপুরা-বাড্ডা, মিরপুর-ধানমন্ডি ও মহাখালিতে স্বৈরাচার সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনীর হামলার শিকার হয় ছাত্র-জনতা। সংঘর্ষের খবর প্রচার করায় সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয় বাংলাভিশনসহ চারটি টেলিভিশন চ্যানেলের।

মানুষের কাছে সত্য লুকাতে শাটডাউন করা হয় ইন্টারনেট। এ নিয়েও নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে শেখ হাসিনার সরকার।

'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় সেদিন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ।

ছাত্র-জনতাকে দমাতে টিয়ার শেল, শর্টগান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবি। রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের জবাবে আন্দোলনকারীরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। কোনভাবেই পিছু হটানো যায়নি ছাত্র-জনতাকে।

শুধু যাত্রাবাড়ি নয়, রামপুরা-বাড্ডা সড়কেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের। পুলিশের টিয়ার শেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড উপেক্ষা করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে শিক্ষার্থীরা।  রাজধানীর মিরপুর, ধানমন্ডি ও সিটি কলেজ এলাকায়ও রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। আহত হয় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। তারপরও পিছু না হটে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

আগুন দেওয়া হয় পুলিশ ভ্যান ও ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ে। ছাত্রদের খোঁজে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

ছাত্রদের লক্ষ্য করে র‍্যাব-পুলিশ ও বিজিবি গুলি ছোড়ে—সে দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের টার্গেটে পড়ে বাংলাভিশন, এনটিভি, দেশটিভি ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয় এই চারটি চ্যানেলের। সংবাদ প্রচারেও বাধা দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থী ও পুলিশের সংঘর্ষে মহাখালী ও উত্তরা এলাকাও রণক্ষেত্রে পরিণত হয় । বাড়তে থাকে আন্দোলনের তীব্রতা। পরিণতিতে ৫ আগস্ট পতন ঘটে স্বৈরাচারী সরকারের।

সানজানা

×