ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ঢাকায় ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যার প্রতিবাদে ভোলায় বিক্ষোভ মিছিল

মো. বেল্লাল নাফিজ, ভোলা

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ১২ জুলাই ২০২৫

ঢাকায় ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যার প্রতিবাদে ভোলায় বিক্ষোভ মিছিল

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় চাঁদাবাজির টাকা না পেয়ে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের মতো ভোলাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার (১১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভোলা শহরের প্রাণকেন্দ্র খলিফাপট্টি মসজিদসংলগ্ন এলাকা থেকে ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বরিশালের দালানের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

বিক্ষোভকারীরা “আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না”, “চাঁদাবাজদের ঠাঁই নাই ২৪-এ’র বাংলায়”, “আমার সোনার বাংলায় খুনিদের ঠাঁই নাই”—এই ধরনের স্লোগানে শহর মুখরিত করে তোলে। এ সময় বক্তারা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক পরিচয়ে অপকর্ম করা ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসা করছিলেন সোহাগ। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়িক আধিপত্য ও ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে আসামিরা—যাদের মধ্যে সারোয়ার হোসেন টিটু, ছোট মনির, লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাজীব, সাবা করিম লাকি, স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, সিরাজুল ইসলাম, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদার রয়েছেন—সোহাগের গুদাম তালাবদ্ধ করে ও তাঁকে এলাকা ছাড়া করতে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন।

ঘটনার দিন, ১০ জুলাই সন্ধ্যায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই ব্যক্তিরা সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে নিয়ে যায়। সেখানে লাঠি, রড, সিমেন্টের ব্লক ও ইট দিয়ে তাঁকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বিবস্ত্র করে ফেলা হয়। একপর্যায়ে সোহাগ নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাঁকে টেনে এনে রাস্তায় ফেলে ইট-পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। এমনকি মরদেহের উপর নাচানাচি করার মতো নিষ্ঠুরতাও দেখায় হামলাকারীরা।

এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক রজব আলী পিন্টু এবং ঢাকা মহানগর যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক সাবা করিম লাকিকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

আসিফ

×