
ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম মানুষের জীবনে সরলতা, নম্রতা ও সহজ-সরল আচরণকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই ছিলেন সরল জীবনযাপন ও বিনয়ের অনন্য দৃষ্টান্ত। হাদিসে বারবার তিনি এমন মানুষদের মর্যাদার কথা বলেছেন, যারা অহংকারবর্জিত, সত্যবাদী এবং অন্তরে পরিশুদ্ধ।
রাসূল (সা.) বলেন, “প্রত্যেক বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী সত্যভাষী ব্যক্তি সর্বোত্তম।” এ হাদিস স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, যাদের অন্তরে হিংসা, আত্মঅহংকার কিংবা কপটতা নেই, যারা মানুষের প্রতি সদয় এবং বিনয়ী—তারা আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত।
সরলতা একজন মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। রাসূল (সা.) আরও বলেন, “মুমিন ব্যক্তি সরল ও ভদ্র প্রকৃতির হয়ে থাকে, আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ধোঁকাবাজ ও নির্লজ্জ হয়।” এর মাধ্যমে বোঝা যায়, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যারা সরল হৃদয়ের, তারা সমাজে সম্মানিত এবং আল্লাহর কাছে প্রিয়।
হাদিসে এমনকি জান্নাতের দরজাও সরল প্রকৃতির মানুষের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আমি কি তোমাদের জান্নাতি মানুষের সংবাদ দেব না? তারা হলো সরলতার দরুন দুর্বল প্রকৃতির লোক।” অর্থাৎ সমাজে যাদের দুর্বল মনে করা হয়, অথচ তারা আত্মিকভাবে পবিত্র এবং সরল, তারাই প্রকৃত জান্নাতবাসী।
হাদিসে আরও এসেছে, “সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি সে, যে নিজের রাগ সংবরণ করতে জানে এবং মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকে।” সরল মানুষ সাধারণত কম রেগে যায় এবং রাগ হলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ আত্মনিয়ন্ত্রণই আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে এগিয়ে দেয়।
এমন সরল হৃদয়ের মানুষেরা যদি পৃথিবীতে সত্য, সততা ও নম্রতার সঙ্গে জীবন কাটান, তবে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের নিশ্চিত সুসংবাদ। বর্তমান সমাজে যেখানে প্রতিযোগিতা, হিংসা আর অহংকারে মানুষ জর্জরিত, সেখানে ইসলামের এই শিক্ষা মানুষকে আরও মানবিক, সহানুভূতিশীল ও আধ্যাত্মিকভাবে উন্নত হতে পথ দেখায়।
শেষ কথা, ইসলাম শুধু ইবাদত নয়, চরিত্র ও ব্যবহারের মধ্য দিয়েও জান্নাতের পথ খুলে দেয়। সেই পথের সবচেয়ে বড় পরিচয়—সরলতা।
শেখ ফরিদ