
ছবি: সংগৃহীত
জীবনে চলার পথে মানুষ ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় নানা পাপে জড়িয়ে পড়ে। ইসলামের দৃষ্টিতে ছোটখাটো গুনাহ (সগিরা) আল্লাহ অনেকভাবে ক্ষমা করে দেন। তবে বড় গুনাহ (কবিরা) তওবা ছাড়া কখনোই ক্ষমা করা হয় না। এমন কিছু মানুষও আছে, যাদের তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না, কারণ তারা বারবার সেই পাপের পুনরাবৃত্তি করে।
তওবা কবুল না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন শেখ তাসফিয়া করিম তাঁর ডক্স রিপোর্টে।
ছয় ধরনের মানুষ, যাদের নামাজ কবুল হয় না:
১. পলাতক দাস (গোলাম) – যতক্ষণ না সে তার মালিকের কাছে ফিরে আসে, তার নামাজ কবুল হয় না।
২. অসন্তুষ্ট স্বামীর স্ত্রী – যে নারী রাত্রি যাপন করে তার স্বামীর অসন্তুষ্টিতে, তার নামাজ কবুল হয় না।
৩. অপছন্দনীয় ইমাম – এমন কোনো ইমাম যার নেতৃত্বে মুসল্লিরা নামাজ পড়তে অনীহা প্রকাশ করে, তাঁর নামাজ গ্রহণযোগ্য নয়।
এই তিন শ্রেণির কথা এসেছে হাদিসে আবু উমামা (রা.)-এর বর্ণনায়, রাসূল (সা.) নিজেই এ কথা বলেছেন।
তওবা কবুল না হওয়ার উদাহরণ:
মদপানের পাপে জড়িত ব্যক্তি
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মদ পান করে তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল হয় না। যদি সে তওবা করে, আল্লাহ তা কবুল করেন। কিন্তু যদি সে বারবার এই পাপে জড়ায়, চতুর্থবারের পর তার নামাজ তো কবুল হয়ই না, এমনকি তওবাও কবুল হয় না। তাকে জাহান্নামে "নাহরুল খাবাল" থেকে পান করানো হবে – যা হলো জাহান্নামীদের দেহ থেকে নির্গত পুঁজ ও রক্ত।
আরও কিছু তওবা না হওয়ার কারণ:
মিথ্যা বলা এবং সে অনুযায়ী আমল না বদলানো:
যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা বন্ধ করে না এবং মিথ্যার ওপর আমল চালিয়ে যায়, তার রোজা পরিত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (সহিহ হাদিসে বর্ণিত)
গণক বা ভাগ্য গণনা করার ওপর বিশ্বাস রাখা:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি গণকের কাছে গিয়ে ভাগ্য জানতে চায় এবং বিশ্বাস করে, তার ৪০ দিন পর্যন্ত কোনো নামাজ কবুল হয় না।
ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমা ও তওবার দরজা সবসময় খোলা, তবে শর্ত হলো — তা হতে হবে আন্তরিক, সচেতন এবং পাপ থেকে ফিরে আসার পাকা ইচ্ছা নিয়ে। বারবার পাপ করার পর তওবা করেও যদি একই অপরাধে ফিরে যাওয়া হয়, তবে এক পর্যায়ে আল্লাহ সেই তওবাও আর কবুল করেন না।
তাই পাপ থেকে সত্যিকারের ফিরে আসা এবং তওবায় দৃঢ় থাকা – একজন মুসলমানের জন্য চরম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
শেখ ফরিদ