
ছবি: সংগৃহীত
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার হয়নি। সহপাঠী ও আন্দোলনের সহযোদ্ধারা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যখন তীব্র হয়ে ওঠে, তখন সেই আন্দোলনের প্রথম শহীদ হন আবু সাঈদ। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়া এই আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই প্রতিদিন জমায়েত হতো শিক্ষার্থীদের। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন আবু সাঈদ নিজেই।
আন্দোলন দমন করতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তার সঙ্গে মিলিত হয়ে সশস্ত্র হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশও এক পর্যায়ে আওয়ামী সমর্থকদের পক্ষ নিয়ে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছোড়ে বিক্ষোভরত ছাত্রদের ওপর।
১৬ জুলাই অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনে দমন-পীড়ন বাড়তে থাকে। একসময় পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ জানান আবু সাঈদ। তখনই গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা আবু সাঈদের এক সহযোদ্ধা বলেন, “একদম দিনের আলোতে পুলিশ আমাদের আবু সাঈদ ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। আমি নিজেও গুলিবিদ্ধ হই। যখন আমরা তাকে তুলছিলাম, তখনও গুলি চালানো হচ্ছিল।”
এক বছর পার হলেও আবু সাঈদের হত্যাকারীদের বিচার হয়নি। এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার সহযোদ্ধারা। তারা বলেন, ড. মোহাম্মদ ইউনুস এসে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করে বিচার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এই মামলার অন্যতম সাক্ষী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, “এটি প্রকাশ্য দিবালোকের ঘটনা। আমরা চাই দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।”
শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগের উদ্দেশ্য সফল হোক এবং তার হত্যার সুষ্ঠু বিচার হোক— এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/aiJFwRi6sGk?si=5gjJjfMxafp30oM9
এম.কে.