
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর, ধুলিয়া, কেশবপুর, কালাইয়া, কাছিপাড়া, চন্দ্রদ্বীপসহ ছয়টি ইউনিয়ন ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য বন, পরিবেশ ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাথে ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) তিনি এ বৈঠক করেন।
বৈঠক পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমি প্রথমেই মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই - তিনি আজ পহেলা জুলাই একটি বিশেষ দিনেও আমাদের সময় দিয়েছেন। আন্তরিকতা দিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন এবং আমাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
বৈঠকে আমরা বলেছি যে- বাউফল একটি নদীবেষ্টিত এলাকা। দক্ষিণাঞ্চলের সিডর ও আইলা আক্রান্ত একটি জেলা পটুয়াখালী। এই জেলার বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন কবলিত একটি এলাকা। এছাড়া বাউফলের বিভিন্ন ইউনিয়ন প্রতিনিয়ত অল্প অল্প করে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।
যা প্রতিনিয়ত মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতার দিকে আমাদের ঠেলে দিচ্ছে।প্রতিনিয়ত এই অঞ্চলের মানুষদের বন্যা জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলা করে বাঁচতে হয়। প্রায় ৫০ বছর যাবত নদী ভাঙ্গনে হাজারো মানুষের পায়ের তলার মাটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় হাজারো মানুষের আজ বেঁচে থাকাই সংগ্রামে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনাসহ হাজার-হাজার হেক্টর কৃষি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এতে কৃষক ও দিনমজুররা অসহায় হয়ে পড়েছে।
আমরা আজ উপদেষ্টা মহোদয়কে জানিয়েছি নাজিরপুরের ১০ কিলোমিটার এলাকা অতি ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। যেসব রাস্তা ভেঙ্গে গেছে সেসব রাস্তায় মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে। সব ধরনের অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৭ কিলোমিটার এলাকা সিসি ব্লোক দ্বারা স্থায়ী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যবস্থা করতে হবে। ভূমিহীন গৃহহীনদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া। একটি দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক তৈরি করার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এই বিষয়গুলো তার সামনে উপস্থাপন করার পর,আলহামদুলিল্লাহ আমরা যে স্মারকটি তার কাছে উপস্থাপন করেছি সেটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে উনি স্বাক্ষর করে ইতিমধ্যে পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মাননীয় উপদেষ্টা তার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে ও নির্দেশনা দিয়েছেন।
ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ আরও বলেন, মাননীয় উপদেষ্টা যে কাজের প্রতি কতটা আন্তরিক তা আমরা এখানে আসার পরে উপলব্ধি করতে পেরেছি । কেননা তিনি আমাদের বাউফলে নদী ভাঙ্গন নিয়ে আমাদের সাথে সাক্ষাতের আগেই স্টাডি করেছেন। এবং তার কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে অগ্রগতির জন্য দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেজন্য আমরা উপদেষ্টা মহোদয়ের প্রতি আন্তরিকতার সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে বৈঠকে তাৎক্ষণিক অর্জনগুলো হচ্ছে, প্রথমত, উনি আমাদের ভাঙ্গন প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক একটা ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। দ্বিতীয়ত, ১০ কিলোমিটার জিও ব্যাগ জরুরী ভিত্তিতে ফেলবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তৃতীয়ত, ভাঙ্গন প্রতিরোধের টেকসই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলে তিনি সুপারিশ করবেন বলে জানিয়েছে ন। চতুর্থত, তিনি বাউফলের যে কয়টা ইউনিয়ন নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে তাদেরকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এ্যাডভোকেট মুনতাসির মুজাহিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান নজরুল, ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ আলামিন, আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ অন্যান্যরা।
ফারুক