
উপজেলা সদর হাটে কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সড়কে বস্তা বস্তা কাঁচা মরিচ ফেলে আদমদীঘিতে নওগাঁ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে উপজেলার কাঁচা মরিচ চাষীরা। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে অবরোধ ও বিক্ষোভ চলার সময় এই সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। কৃষক বিক্ষোভের এই ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার উপজেলা সদরের কাঁচা মরিচ হাটে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলা কাঁচা মরিচ চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানকার উৎপাদিত কাঁচা মরিচ অত্রাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। গত বছর কাঁচা মরিচ চাষীরা বেশ লাভবান হওয়ার কারণে এবার ব্যাপক হারে মরিচ চাষ করে এবং অভাবনীয় ফলন হয়েছে।
সরকার নির্ধারণ করা দামের চেয়ে ডবল দামে কেনা সার ও কীটনাশক প্রয়োগে চাষ করা কাঁচা মরিচ এবার মৌসুমের শুরু থেকে চাষীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদন খরচ তো দুরের কথা, ক্ষেত থেকে মরিচ তোলার মজুরদের মজুরি পর্যন্ত উঠছে না। গত বছর এই সময়ে কাঁচা মরিচ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি দেড়শ থেকে দুইশ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু এবার ঘটেছে অকল্পনীয় দরপতন। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে আদমদীঘি ও পাশের তিলকপুর মোকামে ৭ থেকে সর্বাধিক ১৫ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হয়ে আসছে, যা কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে।
এমন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলা সদর হাটে বিপুল পরিমাণ কাঁচা মরিচের আমদানি হতে থাকে। প্রচুর পরিমাণ আমদানি হওয়া দেখে এই কাঁচা পণ্যের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট হাটের বিভিন্ন পয়েন্টে চাটি ফেলে, কিন্তু তারা মরিচ না কিনে চুপচাপ বসে থাকে। তারা নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করতে থাকে এবং সিন্ডিকেট করে পানির দামে মরিচ কেনার কৌশল অবলম্বন করে।
এসময় হাটে সমবেত মরিচ চাষীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে হাটে আসা কৃষকরা। তারা সকাল সোয়া ৭ টার দিকে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এই আঞ্চলিক মহাসড়কে বস্তা বস্তা কাঁচা মরিচ ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে এবং সকাল পৌনে ৮ টা পর্যন্ত অবরোধ করে। এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে ব্যবসায়ীরা হাট থেকে পালিয়ে যায়।
এদিকে, অবরোধের সময় সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘটনার খবর পেয়ে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে এসে মরিচ চাষীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে অবরোধ তুলে নেয়ার ব্যবস্থা করে। এরপর ওই সড়কের দুই পাশে আটকে থাকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রাজু