
ভোলার লালমোহন উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতাধীন খানাখন্দে ভরা ১০০ কিলোমিটার পাকা সড়কে চরম জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এসব সড়কের ভেতর কোনোটি ৫ বছর আবার কোনোটি ১০ বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, আবার কিছু অংশের পিচ উঠে কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে। যার ফলে এসব সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও যানবাহন চালকরা।
লালমোহন উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দফতরের (এলজিইডি) তথ্যমতে, এই উপজেলায় আইডিভুক্ত মোট সড়ক রয়েছে ৩৬৪টি। যার মধ্যে পাকা সড়কের পরিমাণ ৩৮০ কিলোমিটার। এরমধ্যে বর্তমানে মেরামতযোগ্য বেহাল সড়কের পরিমাণ প্রায় ১০০ কিলোমিটার। ভারি ও অবৈধ যানবাহন চলাচল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নির্মাণের কয়েক বছরের পরই সড়কগুলো বেহাল হয়ে যায়।এমনই একটি বেহাল সড়ক উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের আবুগঞ্জ বাজার থেকে লালমোহন ইউনিয়নের ফুলবাগিচা বাজার সড়ক। এ সড়কটি প্রায় ৫ বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করায় সড়কটির বিভিন্নস্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উঠে গেছে সড়কটির অধিকাংশ স্থানের পিচ। যার ফলে বর্তমানে কাঁচা সড়কের চেয়েও বেহাল অবস্থায় রয়েছে এ সড়কটি।
ওই সড়কে নিয়মিত অটোরিকশা চালান মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, এই সড়ক দিয়ে রিকশা চালাতে গিয়ে খুব বিপাকে পড়তে হয়। কয়েকদিন পরপরই নষ্ট হয়ে যায় অটোরিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এতে যা আয় করি তার বেশিরভাগই চলে যায় অটোরিকশা মেরামতে। এ ছাড়া সড়কটির বিভিন্নস্থানে ছোট-বড় গর্ত থাকায় অটোরিকশা চালাতে গিয়ে শরীরেও সমস্যা হচ্ছে, বিশেষ করে শরীরের প্রচন্ড ব্যথা হয়। তাই অচিরেই সড়কটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি।
আবুগঞ্জ বাজার থেকে ফুলবাগিচা বাজার সড়ক এলাকার বাসিন্দা মো. রাসেল, মো. আলী, নূরউদ্দিন এবং মো. জামাল জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে সড়কটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে রীতিমতো চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কারণ সড়কটিতে তেমন বেশি যানবাহন চলাচল করছে না। আর যেসব যানবাহন চালকরা এ সড়কে আসেন, তারা ভাড়াও বেশি নেন। এ ছাড়া রাতের বেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকে না। কারণ অসুস্থ রোগীকে নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য যানবাহন পাওয়া যায় না। তাই এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে শিগগিরই সড়কটি মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে এলজিইডির লালমোহন উপজেলা প্রকৌশলী রাজীব সাহা বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভারি ও অবৈধ যানবাহন চলাচলের কারণে এই উপজেলার সড়কগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারণে সত্যিই বর্তমানে উপজেলার বেশ কিছু সড়কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সড়কগুলো মেরামতের জন্য আমরা এরইমধ্যে তালিকা প্রস্তুত করেছি। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কগুলো সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠাবো। এরপর ওই প্রকল্পগুলো পাস হয়ে বরাদ্দ পেলে এই উপজেলার বেহাল সড়কগুলো মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।’
রাজু