
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আফতাবনগরে গ্যাস লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেলেন আরও এক শিশু। আজ শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মিথিলা (৮)। এ নিয়ে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হলো এ ঘটনায়। এর আগে মারা গেছেন শিশুটির বাবা তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), মা মানসুরা বেগম (২৮) ও চার বছর বয়সী ছোট বোন তানজিলা।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান মিথিলার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মিথিলার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল, পাশাপাশি তার শ্বাসনালিও মারাত্মকভাবে পুড়ে যায়। তাকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছিল, কিন্তু অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় শেষরক্ষা হয়নি।
এ ঘটনায় পরিবারটির আরেক মেয়ে তানিশা (১১) এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়েছে এবং অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গত ১৬ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর আফতাবনগরের দক্ষিণ আনন্দনগর এলাকায় একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তোফাজ্জল হোসেন ও তার স্ত্রীসহ তাদের তিন মেয়ে আগুনে দগ্ধ হন। আহতদের দ্রুত বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
তোফাজ্জলের মেয়ের জামাই মো. রিপন জানান, তাদের বাসার পাশেই একটি নতুন ভবনের নির্মাণকাজ চলছিল। খোঁড়াখুঁড়ির সময় গ্যাস লাইনের লিকেজ হয়, সেখান থেকে গ্যাস বের হতে থাকে। বাসার লোকজন বিষয়টি ওইদিন সকালেই বাড়িওয়ালাকে জানান, কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। রাতে মশার কয়েল জ্বালানোর সময়ই ঘটে বিস্ফোরণ।
তোফাজ্জল ছিলেন একজন দিনমজুর। চার কন্যাসন্তানের জনক তিনি। ঘটনার রাতে তার স্ত্রী ও তিন শিশু কন্যা ছিল ঘরে। বিস্ফোরণে তিনজনই দগ্ধ হয়ে মারা যান। বেঁচে আছেন কেবল বড় মেয়ে তানিশা, তাও হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। পরিবারের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে ঠাকুরগাঁও সদরের এই পরিবারের স্বজনরা।
এসএফ