
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি বছরের পর বছর ধরে অচলাবস্থায়
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি বছরের পর বছর ধরে অচলাবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে। এক্স-রে মেশিনটি সচলের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গত কয়েক বছরে ৫০ বারেরও বেশি চিঠি পাঠালেও মেলেনি কোনো সমাধান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭০-১০০ টাকায় যে এক্স-রে পরীক্ষা করানো যায়, তা বাইরে থেকে করাতে রোগীদের ৪০০-৫০০ টাকা গুনতে হচ্ছে রোগীকে। স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে এই অতিরিক্ত খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ বহির্বিভাগের রোগীর মধ্যে অর্ধশতাধিক রোগীকে এক্স-রে পরীক্ষার জন্য রেফার করা হয় বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে। ফলে সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।
সাটুরিয়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনের অপারেটর আব্দুল আলীম বলেন, এক্স-রে যন্ত্রটি সচল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে ৫০ বারেরও বেশি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে ফাইল যেতে বিলম্ব, অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় যন্ত্রটি পুরোপুরি সচল করা সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, শরীরের বিভিন্ন অংশের সূক্ষ¥ রোগ নির্ণয়ের জন্য এক্স-রে পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। এর রিপোর্ট পাওয়ার পরই মুমূর্ষু রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় অথবা অন্যত্র রেফার করা যায়। এই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রটি অচল থাকায় রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা আরো বলেন, সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সাটুরিয়া উপজেলাসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার স্থল। এখানে এই পুরাতন এক্স-রে মেশিনটি পরিবর্তন করে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বরাদ্দের দাবি জানান তারা।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মামুন উর রশিদ বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে একবার এক্স -রে মেশিনটির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেশিনটি ঠিক করতে আসলেও তা পূর্ণ সচল করতে পারেনি। তবে তিনি আশা করছেন, খুব শীঘ্র যন্ত্রটি আবার সচল করে সমস্যার সমাধান করা হবে। সাটুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আ.খ.ম নুরুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাটুরিয়া, ধামরাই এবং নাগরপুরের কয়েক লাখ মানুষের ভরসার জায়গা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এখানে একটি মাত্র অ্যানালগ এক্স-রে মেশিন, তাও আবার নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে বছরের প্রায় সময়। ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।